ঢাকা ০১:১৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫, ৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

বছর ব্যবধানে কমেছে প্রায় ৯০ লাখ কেজি চা পাতার উৎপাদন

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০১:৩২:১৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • / ৩৭৯ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

জাপান, নিউজিল্যান্ড, সাইপ্রাসসহ পৃথিবীর ১৮টি দেশে রপ্তানি হচ্ছে বাংলাদেশের চা পাতা। এরপরও এক বছরের ব্যবধানে প্রায় ৯০ লাখ কেজি চা পাতার উৎপাদন কমেছে। গুণগত মান কম হওয়ায় আর বাড়তি উৎপাদন খরচের চাপে কেমন যাচ্ছে দেশের চা খাত?

প্রতিদিন দেশের ১১ কোটি চায়ের কাপে চুমুক দেয় মানুষ। বার্ষিক চাহিদা প্রায় চার হাজার কোটি কাপ।

বিশ্ববাজারে বাড়ছে চায়ের রপ্তানি। ২০২৪ সালে গত পাঁচ বছরের মধ্যে রেকর্ড পরিমাণ ২৪ লাখ কেজি চা রপ্তানি হয়েছে, যা আগের বছরের দ্বিগুণেরও বেশি। রপ্তানি আয়ও বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৫ কোটি ৯৫ লাখ টাকা।

গত পাঁচ বছরের চা রপ্তানির পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২০ সালে ২১ লাখ কেজি ৩৪ কোটি ৭১ লাখ টাকা, ২০২১ সালে ছয় লাখ কেজি ১৮ কোটি পাঁচ লাখ টাকা, ২০২২ সালে সাত লাখ কেজি ১৯ কোটি ৬৩ লাখ টাকা, ২০২৩ সালে ১০ লাখ কেজি ২৭ কোটি ২৫ লাখ টাকা ও ২০২৪ সালে ২৪ লাখ কেজি ৪৫ কোটি ৯৫ লাখ টাকা।

এর আগে ২০২০ সালে ২১ লাখ কেজি চা রপ্তানি হলেও ২০২১-২২ সালে তা অনেকটা কমে যায়। তবে ২০২৩ ও ২০২৪ সালে রপ্তানিতে আবার ঊর্ধ্বগতি দেখা গেছে।

চা বোর্ডের তথ্য বলছে, বর্তমানে পৃথিবীর ১৮টি দেশে চা পাতা রপ্তানি করছে বাংলাদেশ। পাকিস্তান, ভারত ও দুবাইয়ের পাশাপাশি চা যাচ্ছে নিউজিল্যান্ড, জাপান, মারিশাস, ফ্রান্স, সাইপ্রাসেও।

বাংলাদেশ চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন বলেন, ‘স্টেক হোল্ডার যারা আছে, যারা ব্যবসা করছে তারাও চেষ্টা করছে, আমরা তাদেরকেও অনুরোধ করছি তারা যেন নতুন নতুন দেশগুলোতে রপ্তানির চেষ্টা করে। আর আমাদের দিক থেকে রপ্তানির ব্যাপারে সকল ফ্যাসিলিটি দেয়ার জন্য রেডি আছি এবং মন্ত্রনালয়ও অনেক পজেটিভ এই ব্যাপারে।’

গবেষণা সংস্থা এন এম এস সির প্রতিবেদন অনুসারে , ২০২৪ সালে বৈশ্বিক চা পাতার রপ্তানি বাজার প্রায় আট বিলিয়ন ডলার। যেখানে রপ্তানিকারক দেশ হিসাবে বাংলাদেশের অবস্থান ৫০ এরও পরে।

রপ্তানি বাড়লেও উৎপাদন কমেছে ২০২৪ সালে। ২০২৩ সালে যেখানে উৎপাদন হয়েছে ১০ কোটি ২০ লাখ কেজি চা, এবার তা কমে হয়েছে নয় কোটি ৩০ লাখ কেজি। তবে বাগান মালিকরা বলছেন, উৎপাদনের চেয়ে এখন বিশ্বমানের গুণগত চা পাতা উৎপাদন করা গুরুত্বপূর্ণ।

চা প্যাকেটিয়ার্সের সায়েম খাদেম বলেন, ‘আমার প্রোডাকশন কোয়ালিটিটা কত খারাপ হচ্ছে। বাংলাদেশের অপশনে ৩০০ টাকা দিয়ে চা কেনার বিডার পাওয়া যাচ্ছে। ১৬০ টাকা লোয়ার লিমিটের চা, ব্রোকাররা উত্তরবঙ্গের চায়ের জন্য বায়ার খুঁজে পাচ্ছে না। বিশ্বমানের চা পাতা উৎপাদন করা এখন অনেক গুরুত্বপূর্ণ।’

ফটিকছড়ি চৌধুরী টি এস্টেটের পরিচালক মো. জাহাঙ্গির আলম বলেন, ‘ভালো মানের চা উৎপাদন না হওয়ার কারণ হচ্ছে ওখানে প্লাকিং গ্রাউন্ড হচ্ছে না। ওখানে উৎপাদন হচ্ছে অনেক কিন্তু কোয়ালিটি ধরে রাখতে পারছে না।’

২০২৪ সালে বাংলাদেশে উৎপাদিত চা পাতার বাজার মূল্য প্রায় দুই হাজার ৮০০ কোটি টাকা। তবে গুণগত মান না থাকায় নিলামে এ বছর প্রায় ১০ লাখ কেজি চা পাতা থেকে গেছে অবিক্রিত।

নিউজটি শেয়ার করুন

বছর ব্যবধানে কমেছে প্রায় ৯০ লাখ কেজি চা পাতার উৎপাদন

আপডেট সময় : ০১:৩২:১৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

জাপান, নিউজিল্যান্ড, সাইপ্রাসসহ পৃথিবীর ১৮টি দেশে রপ্তানি হচ্ছে বাংলাদেশের চা পাতা। এরপরও এক বছরের ব্যবধানে প্রায় ৯০ লাখ কেজি চা পাতার উৎপাদন কমেছে। গুণগত মান কম হওয়ায় আর বাড়তি উৎপাদন খরচের চাপে কেমন যাচ্ছে দেশের চা খাত?

প্রতিদিন দেশের ১১ কোটি চায়ের কাপে চুমুক দেয় মানুষ। বার্ষিক চাহিদা প্রায় চার হাজার কোটি কাপ।

বিশ্ববাজারে বাড়ছে চায়ের রপ্তানি। ২০২৪ সালে গত পাঁচ বছরের মধ্যে রেকর্ড পরিমাণ ২৪ লাখ কেজি চা রপ্তানি হয়েছে, যা আগের বছরের দ্বিগুণেরও বেশি। রপ্তানি আয়ও বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৫ কোটি ৯৫ লাখ টাকা।

গত পাঁচ বছরের চা রপ্তানির পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২০ সালে ২১ লাখ কেজি ৩৪ কোটি ৭১ লাখ টাকা, ২০২১ সালে ছয় লাখ কেজি ১৮ কোটি পাঁচ লাখ টাকা, ২০২২ সালে সাত লাখ কেজি ১৯ কোটি ৬৩ লাখ টাকা, ২০২৩ সালে ১০ লাখ কেজি ২৭ কোটি ২৫ লাখ টাকা ও ২০২৪ সালে ২৪ লাখ কেজি ৪৫ কোটি ৯৫ লাখ টাকা।

এর আগে ২০২০ সালে ২১ লাখ কেজি চা রপ্তানি হলেও ২০২১-২২ সালে তা অনেকটা কমে যায়। তবে ২০২৩ ও ২০২৪ সালে রপ্তানিতে আবার ঊর্ধ্বগতি দেখা গেছে।

চা বোর্ডের তথ্য বলছে, বর্তমানে পৃথিবীর ১৮টি দেশে চা পাতা রপ্তানি করছে বাংলাদেশ। পাকিস্তান, ভারত ও দুবাইয়ের পাশাপাশি চা যাচ্ছে নিউজিল্যান্ড, জাপান, মারিশাস, ফ্রান্স, সাইপ্রাসেও।

বাংলাদেশ চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন বলেন, ‘স্টেক হোল্ডার যারা আছে, যারা ব্যবসা করছে তারাও চেষ্টা করছে, আমরা তাদেরকেও অনুরোধ করছি তারা যেন নতুন নতুন দেশগুলোতে রপ্তানির চেষ্টা করে। আর আমাদের দিক থেকে রপ্তানির ব্যাপারে সকল ফ্যাসিলিটি দেয়ার জন্য রেডি আছি এবং মন্ত্রনালয়ও অনেক পজেটিভ এই ব্যাপারে।’

গবেষণা সংস্থা এন এম এস সির প্রতিবেদন অনুসারে , ২০২৪ সালে বৈশ্বিক চা পাতার রপ্তানি বাজার প্রায় আট বিলিয়ন ডলার। যেখানে রপ্তানিকারক দেশ হিসাবে বাংলাদেশের অবস্থান ৫০ এরও পরে।

রপ্তানি বাড়লেও উৎপাদন কমেছে ২০২৪ সালে। ২০২৩ সালে যেখানে উৎপাদন হয়েছে ১০ কোটি ২০ লাখ কেজি চা, এবার তা কমে হয়েছে নয় কোটি ৩০ লাখ কেজি। তবে বাগান মালিকরা বলছেন, উৎপাদনের চেয়ে এখন বিশ্বমানের গুণগত চা পাতা উৎপাদন করা গুরুত্বপূর্ণ।

চা প্যাকেটিয়ার্সের সায়েম খাদেম বলেন, ‘আমার প্রোডাকশন কোয়ালিটিটা কত খারাপ হচ্ছে। বাংলাদেশের অপশনে ৩০০ টাকা দিয়ে চা কেনার বিডার পাওয়া যাচ্ছে। ১৬০ টাকা লোয়ার লিমিটের চা, ব্রোকাররা উত্তরবঙ্গের চায়ের জন্য বায়ার খুঁজে পাচ্ছে না। বিশ্বমানের চা পাতা উৎপাদন করা এখন অনেক গুরুত্বপূর্ণ।’

ফটিকছড়ি চৌধুরী টি এস্টেটের পরিচালক মো. জাহাঙ্গির আলম বলেন, ‘ভালো মানের চা উৎপাদন না হওয়ার কারণ হচ্ছে ওখানে প্লাকিং গ্রাউন্ড হচ্ছে না। ওখানে উৎপাদন হচ্ছে অনেক কিন্তু কোয়ালিটি ধরে রাখতে পারছে না।’

২০২৪ সালে বাংলাদেশে উৎপাদিত চা পাতার বাজার মূল্য প্রায় দুই হাজার ৮০০ কোটি টাকা। তবে গুণগত মান না থাকায় নিলামে এ বছর প্রায় ১০ লাখ কেজি চা পাতা থেকে গেছে অবিক্রিত।