ঢাকা ১০:২১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১৫ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

কাল থেকে বন্ধ হচ্ছে বেক্সিমকোর ১৪ কারখানা

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৪:২২:০৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • / ৩৫০ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) থেকে গাজীপুরে বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের টেক্সটাইলস অ্যান্ড অ্যাপারেলস বিভাগের ১৪টি কারখানা বন্ধ হচ্ছে। আজ (বৃহস্পতিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক শেষে শ্রম উপদেষ্টা ড. এম সাখাওয়াত হোসেন জানান, শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন বকেয়া বাবদ শ্রম ও অর্থ মন্ত্রণালয় এরই মধ্যে ৫২৫ কোটি টাকার ব্যবস্থা করেছে। এসব জালিয়াতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক ও কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। আগামী ৯ মার্চ থেকে চার হাজার শ্রমিকের পাওনা পরিশোধ করা হবে বলেও জানান তিনি।

আইনের তোয়াক্কা না করে ব্যাংকগুলোতে রাখা মানুষের আমানত ঋণ আকারে নিয়ে কীভাবে লুটপাট করা হয়, তার একটা উদাহরণ হয়ে উঠেছিল বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক।

৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের পর পতিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি, শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের মালিকানাধীন বেক্সিমকো গ্রুপের প্রতিষ্ঠানগুলোতে অচলাবস্থা তৈরি হয়, সেসময় বিরাট সংখ্যাক শ্রমিক কর্মচারীর এসব প্রতিষ্ঠানের ভবিষ্যৎ নির্ধারণের দায়িত্ব পড়ে শ্রম মন্ত্রণালয়সহ সরকারের ওপর।

সংকট সমাধানে প্রতিষ্ঠানটির আর্থিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে ঘাঁটাঘাটি করার এই পর্যায়েই বেরিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটির বিপরীতে প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা ঋণ কেলেঙ্কারির খবর। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, এর মধ্যে শুধুমাত্র জনতা ব্যাংক থেকেই নেয়া হয়েছে ২৩ হাজার কোটি। এমন অন্তত ১৬টি প্রতিষ্ঠানের বিপরীতে ঋণ নিয়েছে গ্রুপটি যার আসলে অস্তিত্বই নেই।

ঋণে জর্জরিত এসব প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা কর্মচারীদের বেতন ভাতাসহ দায় কীভাবে মেটানো যায় সে বিষয়ে অনেক জলঘোলা শেষে শ্রম মন্ত্রণালয় থেকেই সুপারিশ দেয়া হয় কারখানাগুলো স্থায়ীভাবে বন্ধের। যার পরিপ্রেক্ষিতেই বেক্সিমকোর বর্তমান কর্তৃপক্ষ শুক্রবার থেকে সম্পূর্ণভাবে গাজীপুর নগরের সারাব এলাকার বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের টেক্সটাইলস অ্যান্ড অ্যাপারেলস বিভাগের ১৪টি কারখানা বন্ধ করছে।

বৃহস্পতিবার এ নিয়ে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক শেষ করে শ্রম উপদেষ্টা ড. এম সাখাওয়াত হোসেন জানান, শ্রমিকদের কর্মহীন হয়ে পড়ার পক্ষে না বর্তমান সরকার। কিন্তু নিরুপায় হয়ে তাদের লেআউটের এমন সুপারিশ করতে হয়েছে। তবে শ্রমিক ও কর্মচারীদের বেতন বকেয়া বাবদ শ্রম ও অর্থ মন্ত্রণালয় এরই মধ্যে ৫২৫ কোটি টাকার সংস্থান করেছে ।

এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘কোনো শ্রমিকের চাকরি যাক এটা আমরা চাইনি, এখনও চাইবো না, ভবিষ্যতেও চাইবো না। একটা অন্যতম বড় প্রতিষ্ঠান, যাদের এতদিন আমরা ভাবছিলাম যে বিশাল বিশাল কারবার। আসলে তা না, টোটাল তাদের লাইবিলিটি কত? এমনকি আমরা কোনো ব্যাংকের কাছ থেকেও টাকা পেলাম না। মধ্য রোজার আগেই সবাই পেয়ে যাবেন।’

এ পর্যায়ে শ্রম উপদেষ্টা জানান, এসব জালিয়াতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সেসব ব্যাংক ও কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সেনাপ্রধানের বক্তব্যের ব্যাপারে এই উপদেষ্টা বলেন, দায়িত্বশীল ব্যক্তি হিসেবে তিনি ঠিকই বলেছেন।

এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘তিনি কোনো কথা না বুঝে বলেননি। আমি যতটুকু উনাকে চিনি হি ইজ অ্যা ভেরি স্ট্রেইট ফরওয়ার্ড ম্যান।’

বিদেশে পালিয়ে যাওয়া বেক্সিমকো সংশ্লিষ্টদের দেশে ফিরে আত্মসমর্পণের আহ্বান জানান এই উপদেষ্টা।

নিউজটি শেয়ার করুন

কাল থেকে বন্ধ হচ্ছে বেক্সিমকোর ১৪ কারখানা

আপডেট সময় : ০৪:২২:০৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) থেকে গাজীপুরে বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের টেক্সটাইলস অ্যান্ড অ্যাপারেলস বিভাগের ১৪টি কারখানা বন্ধ হচ্ছে। আজ (বৃহস্পতিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক শেষে শ্রম উপদেষ্টা ড. এম সাখাওয়াত হোসেন জানান, শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন বকেয়া বাবদ শ্রম ও অর্থ মন্ত্রণালয় এরই মধ্যে ৫২৫ কোটি টাকার ব্যবস্থা করেছে। এসব জালিয়াতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক ও কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। আগামী ৯ মার্চ থেকে চার হাজার শ্রমিকের পাওনা পরিশোধ করা হবে বলেও জানান তিনি।

আইনের তোয়াক্কা না করে ব্যাংকগুলোতে রাখা মানুষের আমানত ঋণ আকারে নিয়ে কীভাবে লুটপাট করা হয়, তার একটা উদাহরণ হয়ে উঠেছিল বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক।

৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের পর পতিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি, শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের মালিকানাধীন বেক্সিমকো গ্রুপের প্রতিষ্ঠানগুলোতে অচলাবস্থা তৈরি হয়, সেসময় বিরাট সংখ্যাক শ্রমিক কর্মচারীর এসব প্রতিষ্ঠানের ভবিষ্যৎ নির্ধারণের দায়িত্ব পড়ে শ্রম মন্ত্রণালয়সহ সরকারের ওপর।

সংকট সমাধানে প্রতিষ্ঠানটির আর্থিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে ঘাঁটাঘাটি করার এই পর্যায়েই বেরিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটির বিপরীতে প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা ঋণ কেলেঙ্কারির খবর। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, এর মধ্যে শুধুমাত্র জনতা ব্যাংক থেকেই নেয়া হয়েছে ২৩ হাজার কোটি। এমন অন্তত ১৬টি প্রতিষ্ঠানের বিপরীতে ঋণ নিয়েছে গ্রুপটি যার আসলে অস্তিত্বই নেই।

ঋণে জর্জরিত এসব প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা কর্মচারীদের বেতন ভাতাসহ দায় কীভাবে মেটানো যায় সে বিষয়ে অনেক জলঘোলা শেষে শ্রম মন্ত্রণালয় থেকেই সুপারিশ দেয়া হয় কারখানাগুলো স্থায়ীভাবে বন্ধের। যার পরিপ্রেক্ষিতেই বেক্সিমকোর বর্তমান কর্তৃপক্ষ শুক্রবার থেকে সম্পূর্ণভাবে গাজীপুর নগরের সারাব এলাকার বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের টেক্সটাইলস অ্যান্ড অ্যাপারেলস বিভাগের ১৪টি কারখানা বন্ধ করছে।

বৃহস্পতিবার এ নিয়ে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক শেষ করে শ্রম উপদেষ্টা ড. এম সাখাওয়াত হোসেন জানান, শ্রমিকদের কর্মহীন হয়ে পড়ার পক্ষে না বর্তমান সরকার। কিন্তু নিরুপায় হয়ে তাদের লেআউটের এমন সুপারিশ করতে হয়েছে। তবে শ্রমিক ও কর্মচারীদের বেতন বকেয়া বাবদ শ্রম ও অর্থ মন্ত্রণালয় এরই মধ্যে ৫২৫ কোটি টাকার সংস্থান করেছে ।

এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘কোনো শ্রমিকের চাকরি যাক এটা আমরা চাইনি, এখনও চাইবো না, ভবিষ্যতেও চাইবো না। একটা অন্যতম বড় প্রতিষ্ঠান, যাদের এতদিন আমরা ভাবছিলাম যে বিশাল বিশাল কারবার। আসলে তা না, টোটাল তাদের লাইবিলিটি কত? এমনকি আমরা কোনো ব্যাংকের কাছ থেকেও টাকা পেলাম না। মধ্য রোজার আগেই সবাই পেয়ে যাবেন।’

এ পর্যায়ে শ্রম উপদেষ্টা জানান, এসব জালিয়াতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সেসব ব্যাংক ও কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সেনাপ্রধানের বক্তব্যের ব্যাপারে এই উপদেষ্টা বলেন, দায়িত্বশীল ব্যক্তি হিসেবে তিনি ঠিকই বলেছেন।

এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘তিনি কোনো কথা না বুঝে বলেননি। আমি যতটুকু উনাকে চিনি হি ইজ অ্যা ভেরি স্ট্রেইট ফরওয়ার্ড ম্যান।’

বিদেশে পালিয়ে যাওয়া বেক্সিমকো সংশ্লিষ্টদের দেশে ফিরে আত্মসমর্পণের আহ্বান জানান এই উপদেষ্টা।