ঢাকা ১২:১৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০১ মার্চ ২০২৫, ১৬ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

কাবুলে তালেবানের হাজারো চোখ, উদ্দেশ্য কী?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৬:০৯:৪১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • / ৩৪৩ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলকে সিসি ক্যামেরায় ঢেকে ফেলেছে তালেবান। এর পেছনে তালেবানের উদ্দেশ্য কী? অপরাধ দমন নাকি তালেবান বিরোধীদের নাটকীয় কায়দায় চিহ্নিত করা? এর উত্তর খুঁজেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

দীর্ঘ ২০ বছর পর ২০২১ সালে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের মধ্যদিয়ে আফগানিস্তানের শাসনভার এখন তালেবানের হাতে। নানা আলোচনা-সমালোচনা নিয়েই গত প্রায় ৪ বছর ধরে মুসলিম এই দেশটিতে ক্ষমতার চর্চা করছেন তারা।

এবার নতুন করে আবারো খবরের শিরোনামে উঠে এসেছে তালেবান। আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল শহরকে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলতে চায় তারা। সেই উদ্দেশে ক্ষমতায় বসার পর থেকেই লাগাতার কাজ করে যাচ্ছেন তালেবানের সরকার প্রধান মোল্লা মো. হাসান আখুন্দজ।

এ নিয়ে এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বিবিসি। খবরে বলা হয়, কাবুলের প্রায় ৫০ লাখ বাসিন্দার ওপর কঠিন নজরদারি করছে তালেবান সরকার। সেই উদ্দেশে রাজধানীজুড়ে বসানো হয়েছে প্রায় ৯০ হাজার সিসি ক্যামেরা। তালেবান ক্ষমতায় আসার আগে যার সংখ্যা ছিল ৮৫০ টি।

বিবিসিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে কাবুল পুলিশ প্রধানের মুখপাত্র খালিদ যাদরান জানান, শহরটি থেকে অন্যায়, রাহাজানি, ছিনতাই দূর করতেই তাদের এই কর্মযজ্ঞ।

এক্ষেত্রে আধুনিক সিসি ক্যামেরা ব্যবহার করছে কাবুল পুলিশ। যেখানে জেন্ডার ও বয়স অনুযায়ী ক্যাটাগরি ভেসে উঠে সিসি টিভির মনিটরে। ১ কিলোমিটার দূরের ব্যক্তিকেও জুম করে দেখা যায়। বোঝা যায় ব্যক্তির অঙ্গভঙ্গিও। এমনকি মুখে দাড়ি কিংবা মাস্ক পরা থাকলেও কোন ব্যক্তিকে চিহ্নিত করা যায় সহজেই। আর কন্ট্রোল রুম থেকে প্রত্যেকটি ফুটেজ পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পর্যবেক্ষণ করেন পুলিশ।

কাবুলের নিরাপত্তায় তালেবান সরকারের এ উদ্যোগকে ভালোভাবে দেখছেন না অনেকে। অ্যামনেস্টি ইন্ট্যারন্যাশনালসহ বেশ কিছু মানবাধিকার সংস্থার অভিযোগ, বিপুল সংখ্যক সিসি ক্যামেরা বসিয়ে আফগানরা সরকার বিরোধী কোন কাজ করছে কিনা তা রেকর্ড করছে তালেবান। যা পরবর্তীতে তাদের বিপদের কারণ হতে পারে।

অনেকের মতে, নারীদের হিজাব পরা নিশ্চিত করতেই তালেবান সরকার এ উদ্যোগ নিয়েছে। কেননা এর আগে বহুবার নারীদের অধিকার লঙ্ঘনের নজির তৈরি করেছে তারা। আর এ নিয়ে বেশ উদ্বিগ্ন আফগান নারীরাও।

অবশ্য এ অভিযোগ অস্বীকার করে কাবুল পুলিশ জানায়, ৯০ হাজার সিসি টিভির প্রত্যেকটি শুধু নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নতিতেই ব্যবহার করা হয়। আর এতে রেকর্ড করা তথ্য তিন মাসের মধ্যেই ডিলিট হয়ে যায়।

এতো আধুনিক সিসি ক্যামেরা তালেবান কোন দেশ থেকে নিয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এর আগে হুয়ায়েই থেকে এসব সিসি ক্যামেরা নিয়েছে বলে দাবি করলেও, তাদের এ দাবিকে অস্বীকার করেছে চীনা প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানটি। তাই এ বিষয়ে স্পষ্ট কোনো উত্তর দিতে পারেনি কাবুল পুলিশ।

নিউজটি শেয়ার করুন

কাবুলে তালেবানের হাজারো চোখ, উদ্দেশ্য কী?

আপডেট সময় : ০৬:০৯:৪১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলকে সিসি ক্যামেরায় ঢেকে ফেলেছে তালেবান। এর পেছনে তালেবানের উদ্দেশ্য কী? অপরাধ দমন নাকি তালেবান বিরোধীদের নাটকীয় কায়দায় চিহ্নিত করা? এর উত্তর খুঁজেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

দীর্ঘ ২০ বছর পর ২০২১ সালে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের মধ্যদিয়ে আফগানিস্তানের শাসনভার এখন তালেবানের হাতে। নানা আলোচনা-সমালোচনা নিয়েই গত প্রায় ৪ বছর ধরে মুসলিম এই দেশটিতে ক্ষমতার চর্চা করছেন তারা।

এবার নতুন করে আবারো খবরের শিরোনামে উঠে এসেছে তালেবান। আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল শহরকে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলতে চায় তারা। সেই উদ্দেশে ক্ষমতায় বসার পর থেকেই লাগাতার কাজ করে যাচ্ছেন তালেবানের সরকার প্রধান মোল্লা মো. হাসান আখুন্দজ।

এ নিয়ে এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বিবিসি। খবরে বলা হয়, কাবুলের প্রায় ৫০ লাখ বাসিন্দার ওপর কঠিন নজরদারি করছে তালেবান সরকার। সেই উদ্দেশে রাজধানীজুড়ে বসানো হয়েছে প্রায় ৯০ হাজার সিসি ক্যামেরা। তালেবান ক্ষমতায় আসার আগে যার সংখ্যা ছিল ৮৫০ টি।

বিবিসিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে কাবুল পুলিশ প্রধানের মুখপাত্র খালিদ যাদরান জানান, শহরটি থেকে অন্যায়, রাহাজানি, ছিনতাই দূর করতেই তাদের এই কর্মযজ্ঞ।

এক্ষেত্রে আধুনিক সিসি ক্যামেরা ব্যবহার করছে কাবুল পুলিশ। যেখানে জেন্ডার ও বয়স অনুযায়ী ক্যাটাগরি ভেসে উঠে সিসি টিভির মনিটরে। ১ কিলোমিটার দূরের ব্যক্তিকেও জুম করে দেখা যায়। বোঝা যায় ব্যক্তির অঙ্গভঙ্গিও। এমনকি মুখে দাড়ি কিংবা মাস্ক পরা থাকলেও কোন ব্যক্তিকে চিহ্নিত করা যায় সহজেই। আর কন্ট্রোল রুম থেকে প্রত্যেকটি ফুটেজ পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পর্যবেক্ষণ করেন পুলিশ।

কাবুলের নিরাপত্তায় তালেবান সরকারের এ উদ্যোগকে ভালোভাবে দেখছেন না অনেকে। অ্যামনেস্টি ইন্ট্যারন্যাশনালসহ বেশ কিছু মানবাধিকার সংস্থার অভিযোগ, বিপুল সংখ্যক সিসি ক্যামেরা বসিয়ে আফগানরা সরকার বিরোধী কোন কাজ করছে কিনা তা রেকর্ড করছে তালেবান। যা পরবর্তীতে তাদের বিপদের কারণ হতে পারে।

অনেকের মতে, নারীদের হিজাব পরা নিশ্চিত করতেই তালেবান সরকার এ উদ্যোগ নিয়েছে। কেননা এর আগে বহুবার নারীদের অধিকার লঙ্ঘনের নজির তৈরি করেছে তারা। আর এ নিয়ে বেশ উদ্বিগ্ন আফগান নারীরাও।

অবশ্য এ অভিযোগ অস্বীকার করে কাবুল পুলিশ জানায়, ৯০ হাজার সিসি টিভির প্রত্যেকটি শুধু নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নতিতেই ব্যবহার করা হয়। আর এতে রেকর্ড করা তথ্য তিন মাসের মধ্যেই ডিলিট হয়ে যায়।

এতো আধুনিক সিসি ক্যামেরা তালেবান কোন দেশ থেকে নিয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এর আগে হুয়ায়েই থেকে এসব সিসি ক্যামেরা নিয়েছে বলে দাবি করলেও, তাদের এ দাবিকে অস্বীকার করেছে চীনা প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানটি। তাই এ বিষয়ে স্পষ্ট কোনো উত্তর দিতে পারেনি কাবুল পুলিশ।