গাজায় যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপ কার্যকরের পক্ষে নয় ইসরাইল: হামাস

- আপডেট সময় : ০২:৫৮:৫৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১ মার্চ ২০২৫
- / ৩৪২ বার পড়া হয়েছে

ইসরাইল গাজায় যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপ কার্যকরের পক্ষে নয় বলে অভিযোগ করছে হামাস। তাদের দাবি, মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ফেরানোর পক্ষে নন প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু। এমনকি ডানপন্থী ইসরাইলিরাও মনে করেন, সাময়িক অস্ত্রবিরতি গাজা যুদ্ধের অবসান ঘটাতে পারবে না। এদিকে, হামাসের পর এবার ইসরাইলের বিরুদ্ধে গাজায় অস্ত্রবিরতির শর্ত ভঙ্গের অভিযোগ তুলছেন মধ্যপ্রাচ্য বিশ্লেষকরা।
গাজায় যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপ নিয়ে মিশরের কায়রোতে আলোচনা শুরু হলেও তা কার্যকর নিয়ে শুরু হয়েছে ধোঁয়াশা। ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রীর অফিস জানায়, অস্ত্রবিরতির দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপ কার্যকরের আগে জিম্মি বিনিময়ের বেশ কিছু শর্ত বদলানোর পক্ষে তেল আবিব। অন্যথায় যুদ্ধবিরতির অকার্যকরের হুঁশিয়ারিও দিচ্ছে নেতানিয়াহুর কার্যালয়।
শনিবার অস্ত্রবিরতির প্রথম ধাপ আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হলেও এখনও একে অপরের বিরুদ্ধে শর্ত ভঙ্গের অভিযোগ তুলে যাচ্ছে হামাস ও ইসরাইল। হামাসের রাজনৈতিক শাখার শীর্ষ কর্মকর্তারা বলছেন, ইসরাইল চায় না গাজায় যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপ কার্যকর হোক।
হামাসের শীর্ষ কর্মকর্তা বাসেম নাইম বলেন, ‘ইসরাইল যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপের আলোচনা থেকে বার বার সরে যেতে চাইছে। তারা ক্রমাগত অস্ত্রবিরতির শর্ত ভঙ্গ করে আসছে। তারা অস্ত্রবিরতির চুক্তিকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। সবার সামনে চুক্তির গোপনীয়তা ভঙ্গ করছে।’
ইসরাইলের শর্ত মেনেই কোনো আনুষ্ঠানিকতা ছাড়া অস্ত্রবিরতির প্রথম ধাপের শেষ দফায় ৪ ইসরাইলি জিম্মির মরদেহ হস্তান্তর করেছে হামাস। বিনিময়ে দেরিতে হলেও ৬শ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে ইসরাইল। দেরির কারণ হিসেবে ইসরাইল জানায়, জিম্মিদের মুক্তির দিন হামাস যে অবমাননাকর অনুষ্ঠান আয়োজন করে, তা বন্ধ করতে সম্মত না হলে বন্দি বিনিময় স্থগিত করবে তেল আবিব।
অথচ এখনও পর্যন্ত ইসরাইলের বিরুদ্ধে ৩৫০টির বেশি অভিযোগ হাজির করেছে গাজার মিডিয়া অফিস। যদিও তা মানতে নারাজ বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু।
এছাড়া, ইসরাইলের মিত্রদেশ যুক্তরাষ্ট্র বারবার যুদ্ধবিরতির এই প্রথম ধাপ দীর্ঘায়িত করার প্রস্তাব দিয়ে আসছে। এ প্রস্তাব বাস্তবায়িত না হলেও বিশ্লেষকরা বলছেন, এ পরিকল্পনা থেকে বোঝা যায় অস্ত্রবিরতির দ্বিতীয় ধাপ কার্যকরের বিষয়ে ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্রের অনীহা আছে।
এমনকি, ইসরাইলের গতিবিধি পর্যালোচনা করে আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, নেতানিয়াহু যে পরিকল্পনা নিয়ে পশ্চিমতীরে অভিযান জোরদার করছেন, গাজা-মিশর সীমান্ত থেকে সেনা প্রত্যাহারে অনীহা দেখাচ্ছেন- তা থেকে এটি স্পষ্ট তেল আবিব মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ফিরিরে আনার পক্ষে না।
অধ্যাপক, অস্টিন কমিউনিটি কলেজের অধ্যাপক রয় কাসাগ্রান্দে বলেন, শান্তি চুক্তির দিকে অগ্রসর হওয়ার বদলে ইসরাইল উল্টো পথে হাঁটছে। আপনি যদি পশ্চিমতীরে অভিযান জোরদার করেন, সহিংসতার আশ্রয় নেন, তাহলে গাজায় কীভাবে যুদ্ধবিরতি কার্যকর করবেন?
পাশাপাশি, ডানপন্থী ইসরাইলিরাও ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি দেয়াকে ভালো চোখে দেখছেন না। এমনকি অস্ত্রবিরতির প্রথমধাপ কার্যকরের পর দেশটির তৎকালীন ন্যাশনাল সিকিউরিটি মিনিস্টার বেন গাভির পদত্যাগও দাবি করেন। ইসরাইলি গণমাধ্যমের দাবি, ডানপন্থী ইসরাইলিরা মনে করেন, সাময়িক যুদ্ধবিরতি গাজা যুদ্ধের অবসান ঘটাতে পারবে না।