লঞ্চের পরেই বিস্ফোরণে ধ্বংস মহাকাশযান

- আপডেট সময় : ১২:৫৩:৪২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৭ মার্চ ২০২৫
- / ৩৪৯ বার পড়া হয়েছে

উৎক্ষেপণের কয়েক মুহূর্ত পরেই স্টারশিপের নিয়ন্ত্রণ হারাল ইলন মাস্কের স্পেসএক্স। এই রকেট উৎক্ষেপণের লাইভ স্ট্রিমিং করছিল স্পেসএক্স। তাতেই দেখা যায়, উৎক্ষেপণ হতে না হতেই স্টারশিপের ইঞ্জিনগুলি বন্ধ হয়ে যায়। পরে বাহামাসের ওপরে বিস্ফোরণে সেটি ধ্বংস হয়ে যায়। এর ২ মাস আগে স্টারশিপের পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণের পর মহাকাশযানটি বিস্ফোরণে টুকরো টুকরো হয়ে গিয়েছিল। আর ৬ মার্চ মহাকাশে ‘মক স্যাটেলাইট’ ছেড়ে আসতে পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ করা হয়েছিল স্টারশিপের। সব মিলিয়ে এটি স্টারশিপের অষ্টম পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ ছিল বলে জানিয়েছে স্পেসএক্স।
স্পেসএক্সের অষ্টম পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণে প্রাথমিক ভাবে সব ঠিকঠাকই চলছিল। সফল ভাবেই মাটি ছেড়ে এটি শূন্যে ওঠে। এরপর এই রকেট বিভিন্ন পর্যায়ে বিচ্ছিন্ন হয়ে মহাকাশের দিকে যাত্রা অব্যহত রাখে। এদিকে প্রথম পর্যায়ের বুস্টারটি রকেট থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে লঞ্চপ্যাডে ফিরে আসে এবং সেটিকে সফল ভাবে ধরেও ফেলে ‘মেকানিকাল আর্ম’। তবে কিছু মুহূর্ত যেতেই স্টারশিপের উচ্চতা সংক্রান্ত নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে স্পেসএক্স। পরে বাহামাসের ওপরে সেই মহাকাশযানটি বিস্ফোরণে ধ্বংস হয়ে যায়।
৪০৩ ফুট লম্বা এই রকেটটি টেক্সাস থেকে উৎক্ষেপণ করা হয় সূর্যাস্তের কিছু আগে। এই উড়ান এক ঘণ্টার মতো সময়ের জন্যে হওয়ার কথা ছিল। মহাশূন্যে পৌঁছে ফের পৃথিবীতে ফিরে আসার কথা ছিল এই রকেটের। ভারত মহাসাগরের ওপর দিয়ে নিয়ন্ত্রিত ভাবে এটির পৃথিবীতে ফেরার কথা ছিল। তবে সেই সবের আগেই সেই রকেটের সঙ্গে যোগাযোগ হারিয়ে ফেলে স্পেসএক্স।
এদিকে তৃতীয়বারের মতো স্পেসএক্স তাদের বুস্টার ক্যাচ সম্পন্ন করে। এর আগে ২০২৪ সালের অক্টোবরে প্রথমবারের মতো এই কাজ করেছিল স্পেসএক্স। আর ৬ মার্চও ইলন মাস্কের সংস্থা অভাবনীয় এক ইঞ্জিনিয়ারিং দক্ষতা প্রদর্শন করল। স্টারশিপ রকেটের এক উড়ন্ত বুস্টারকে ‘ক্যাচ’ করল লঞ্চপ্যাড। লঞ্চের সময় যেই হাতলে রকেটটাকে ধরে রাখা হয়, সেই হাতলই নীচে নামতে থাকা বুস্টারকে নিখুঁত ভাবে ক্যাচ করে। স্পেসএক্সের এই প্রযুক্তি আসার পরই লঞ্চপ্যাডেই বুস্টার ধরা হচ্ছে অক্ষত ভাবে। নয়ত সাধারণত এই বুস্টারগুলিকে সমুদ্রে অবতরণ করানো হয়। স্পেস এক্স বিগত ৯ বছর ধরে রকেট লঞ্চের সময় এভাবেই সমুদ্রে বুস্টার অবতরণ করিয়ে এসেছে। পরে তারা সেখান থেকে বুস্টারগুলিকে ফের তুলে নিয়ে আসত। উল্লেখ্য, স্টারশিপ রকেট ১০০ টন ওজনের যন্ত্রপাতি বা ১০০ জন নভোশ্চরকে বহন করতে পারে। এই সুপার হেভি বুস্টারে আছে ৩৩টি ইঞ্জিন।
উল্লেখ্য, এর আগে গত ১৬ জানুয়ারি স্থানীয় সময় বিকেল ৫টা ৩৮ মিনিটে টেক্সাসের বোকা চিকা উৎক্ষেপণ কেন্দ্র থেকে সপ্তম পরীক্ষামূলক ফ্লাইটে স্টারশিপ রকেট শূন্যে পাঠিয়েছিল স্পেসএক্স। সেই রকেট লঞ্চে ব্যবহৃত বুস্টারটি লঞ্চপ্যাডে ফিরে আসে এবং সেটিকে ‘ক্যাচ’ করা হয়। তবে মহাকাশের দিকে ছুটে যাওয়া রকেটটি ধ্বংস হয়ে যায়। ১৬ জানুয়ারি হিসেব মতোই মহাকাশের উদ্দেশে উড়ে যাওয়ার পর এক পর্যায়ে স্টারশিপ রকেটটি বুস্টারের থেকে আলাদা হয়ে যায়। তখন রকেটের সুপার হেভি বুস্টারটি ফিরে আসে স্পেস এক্সের সেই টাওয়ারে। এর আগে এই রকেটের পরীক্ষা চালানো হয়েছিল গত ২০২৪ সালের নভেম্বর, অক্টোবর, জুন এবং মার্চ ও ২০২৩ সালের এপ্রিল ও নভেম্বরে। প্রসঙ্গত, অন্য গ্রহে মানুষের বসতি স্থাপনের জন্যে এই স্টারশিপ রকেট প্রকল্প চালাচ্ছেন মাস্ক।