উত্তর কোরিয়ায় টিভি কিনলে ২৪ ঘন্টাই দেখতে হবে প্রেসিডেন্ট কিম জং উনের পারিবারিক অনুষ্ঠান, ডকুমেন্টারি, গান। সম্প্রতি উত্তর কোরিয়ার নাগরিক তিমোথি চো স্বৈরাচারী শাসক কিম জং উনের হাত থেকে বাঁচতে ব্রিটেনে পালিয়ে এসেছেন। ল্যাডবাইবেলকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে চো উত্তর কোরিয়ার কঠোর বিধিনিষেধ ও স্বৈরাচারী শাসনের থেকে বাঁচতে নিজের দেশ থেকে পালিয়ে আসার কথা শেয়ার করেছেন।
চো বলেছেন, ‘যদি উত্তর কোরিয়ায় আপনি একটি টিভি কেনেন, তাহলে সরকারি কর্মকর্তারা আপনার বাড়িতে আসবে এবং একটি অ্যান্টেনা বাদে বাকি সব অ্যান্টেনা নিয়ে চলে যাবে।নিজের দেশের বাইরের অন্য কোনও চ্যানেল যেন আপনি টিভিতে দেখতে না পারেন সেটি নিশ্চিত করা হবে। দেশের চ্যানেলগুলিতে কি থাকে? এই প্রশ্নের জবাবে উত্তর কোরিয়ার নাগরিক বলেন, 'প্রেসিডেন্ট কিম জং উনের পরিবার নিয়ে অনুষ্ঠান, ডকুমেন্টারি, গান হয় ওই চ্যানেলগুলিতে। দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা চলতে থাকে। আপনি যদি টিভি দেখেন কী দেখবেন? কিম পরিবারের প্রোপাগান্ডা।’ এছাড়াও সাধারণ চুল কাটা নিয়েও উত্তর কোরিয়ায় অনেক সমস্যা হয় বলে দাবি করেন তিমোথি-চো। তিনি বলেন, ‘স্কুলের পড়ুয়াদের এক, দুই অথবা তিনটি ভিন্ন স্টাইলে চুল কাটতে হবে। যদি নির্দিষ্ট সীমার বাইরে কারও চুল কয়েক সেন্টিমিটারও বড় থাকে তাহলে আপনি ঝামেলায় পড়বেন।’তিনি আরও বলেন, ‘যদি আপনি ভিন্ন কোনও স্টাইলে চুল কাটেন তাহলে আপনার পরিবার সমস্যায় পড়বে। তাদের পুলিশ স্টেশনে ডাকা হবে এবং সেখানে জবাব দিতে হবে।’
এছাড়াও উত্তর কোরিয়ার প্রথম নেতা কিম টু-সাংকে ‘ঐশ্বরিক নেতা’ হিসেবে বিবেচনা করা জানিয়ে তিনি বলেন, তাঁর পুত্র কিম জং-ইলকে ‘ঈশ্বরের সন্তান’ হিসেবে অভিহিত করা হয়। এ কারণে প্রত্যেক জাতীয় দিবসে কিম পরিবারের মূর্তির কাছে গিয়ে সেটির কাছে সবাইকে মাথা নত করতে হয়। যা পুজো করার সামিল।
অন্যদিকে, পর্যটকদের জন্য সীমান্ত খুলে দেওয়ার মাত্র দুই সপ্তাহ পেরোতেই আবারও তা বন্ধ করে দিয়েছে উত্তর কোরিয়া। এর আগে দীর্ঘ পাঁচ বছর পর ২০ ফেব্রুয়ারি উত্তর কোরিয়ায় পশ্চিমী পর্যটকদের প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল।২০২০ সালের শুরুর দিকে করোনা মহামারির সময় সীমান্ত বন্ধ করে উত্তর কোরিয়া নিজেকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন করে ফেলেছিল। ২০২৪ সালে দেশটি শুধুমাত্র রুশ পর্যটকদের জন্য সীমান্ত উন্মুক্ত করেছিল।