ঢাকা ০৫:১১ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ মার্চ ২০২৫, ২৬ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

সিরিয়ায় জাতীয় ঐক্যের আহ্বান অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্টের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০১:৩৬:৪৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ মার্চ ২০২৫
  • / ৩৪৪ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

যুদ্ধ পর্যবেক্ষণকারী যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস- এসওএইচআর এর তথ্য অনুসারে, সিরিয়ার নিরাপত্তা বাহিনী, মিত্র বাহিনী এবং ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের সমর্থকদের মধ্যে দুই দিনের সংঘর্ষে এক হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন৷

সিরিয়ার ১৪ বছর ধরে চলমান সংঘাতের সবচেয়ে ভয়াবহ পর্বগুলোর একটি এটি৷

এসওএইচআর জানিয়েছে, দেশটির লাতাকিয়া, তারতুস এবং হামা গভর্নরেটের ২০ টিরও বেশি স্থানে সহিংসতায় মৃত্যুর খবর জানিয়েছে৷ নিহত ৭৪৫ জন বেসামরিক নাগরিকের বেশিরভাগই খুব কাছ থেকে করা গুলিতে মারা গেছেন বলে জানিয়েছে সংগঠনটি৷ এছাড়া সরকারি নিরাপত্তা বাহিনীর ১২৫ জন সদস্য এবং সাবেক প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের সঙ্গে যুক্ত ১৪৮ জন জঙ্গিও নিহত হয়েছেন৷

কয়েক দশকের পারিবারিক শাসনের পর গত ডিসেম্বরে আসাদ ক্ষমতাচ্যুত হন৷ এর মাধ্যমে দেশটিতে চলা ব্যাপক দমন-পীড়ন এবং ধ্বংসাত্মক গৃহযুদ্ধের অবসান হবে বলে আশা করা হচ্ছিলো৷

অবজারভেটরি উল্লেখ করেছে যে, নিহত বেশিরভাগ বেসামরিক নাগরিক দেশটির ধর্মীয় সংখ্যালঘু আলাউই সম্প্রদায়ের৷ আসাদ নিজেও এই সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন৷

অবজারভেটরির এক মুখপাত্র দাবি করেছেন, নারী ও শিশুসহ বেসামরিক আলাউই নাগরিকদের কার্যত ‘মৃত্যুদণ্ড’ দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে এবং তাদের ‘ঘরবাড়ি ও সম্পত্তি লুণ্ঠন করা হয়েছে’৷

সিরিয়ার সরকারি বার্তাসংস্থা সানা জানিয়েছে, লাতাকিয়া, জাবলেহ এবং বানিয়াসে নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে৷

প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হাসান আব্দুল গনি বলেছেন, আসাদের অনুগতদের দ্বারা আক্রমণের শিকার এলাকাগুলোতে নিরাপত্তা বাহিনী ‘পুনরায় নিয়ন্ত্রণ’ প্রতিষ্ঠা করেছে৷

গনি বলেছেন, ‘কোনো বাড়ির কাছে যাওয়া বা তাদের বাড়ির ভিতরে কাউকে আক্রমণ করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে৷”

লাতাকিয়া প্রদেশের নিরাপত্তা পরিচালক মুস্তাফা কেনিফতি বলেছেন, ‘রাষ্ট্রদ্রোহ বা সিরিয়ার জনগণের কোনো অংশকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করার’ অনুমতি দেওয়া হবে না৷ বার্তাসংস্থা সানাকে তিনি বলেন, ‘‘আমরা কোনো পরিস্থিতিতেই প্রতিশোধমূলক কোনো কাজ সহ্য করবো না৷”

সেনা মোতায়েনের পর এই অঞ্চলে ‘তুলনামূলক শান্তি ফিরে এসেছে’ বলে জানিয়েছে সিরিয়ান অবজারভেটরি৷

সিরিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা রোববার জাতীয় ঐক্য ও শান্তির আহ্বান জানিয়েছেন৷

দামেস্কের মাজ্জাহ শহরে তার শৈশবের পাড়ায় অবস্থিত একটি মসজিদে বক্তৃতা দেয়ার সময় শারা বলেন, ‘‘সিরিয়ায় বর্তমানে যা ঘটছে তা (আমাদের) প্রত্যাশিত চ্যালেঞ্জের মধ্যে রয়েছে৷”

তিনি আরো বলেন, ‘‘আমাদের যতটা সম্ভব জাতীয় ঐক্য (এবং) নাগরিক শান্তি রক্ষা করতে হবে এবং সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছায় আমরা এই দেশে একসঙ্গে বসবাস করতে সক্ষম হব৷ … (যতক্ষণ) মসজিদগুলো তাদের সন্তানদের নৈতিকতা … এবং জনগণকে ন্যায্যতা ও ন্যায়বিচার শেখাবে, ততক্ষণ সিরিয়ার জন্য কোনো ভয় নেই৷”

নিউজটি শেয়ার করুন

সিরিয়ায় জাতীয় ঐক্যের আহ্বান অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্টের

আপডেট সময় : ০১:৩৬:৪৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ মার্চ ২০২৫

যুদ্ধ পর্যবেক্ষণকারী যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস- এসওএইচআর এর তথ্য অনুসারে, সিরিয়ার নিরাপত্তা বাহিনী, মিত্র বাহিনী এবং ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের সমর্থকদের মধ্যে দুই দিনের সংঘর্ষে এক হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন৷

সিরিয়ার ১৪ বছর ধরে চলমান সংঘাতের সবচেয়ে ভয়াবহ পর্বগুলোর একটি এটি৷

এসওএইচআর জানিয়েছে, দেশটির লাতাকিয়া, তারতুস এবং হামা গভর্নরেটের ২০ টিরও বেশি স্থানে সহিংসতায় মৃত্যুর খবর জানিয়েছে৷ নিহত ৭৪৫ জন বেসামরিক নাগরিকের বেশিরভাগই খুব কাছ থেকে করা গুলিতে মারা গেছেন বলে জানিয়েছে সংগঠনটি৷ এছাড়া সরকারি নিরাপত্তা বাহিনীর ১২৫ জন সদস্য এবং সাবেক প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের সঙ্গে যুক্ত ১৪৮ জন জঙ্গিও নিহত হয়েছেন৷

কয়েক দশকের পারিবারিক শাসনের পর গত ডিসেম্বরে আসাদ ক্ষমতাচ্যুত হন৷ এর মাধ্যমে দেশটিতে চলা ব্যাপক দমন-পীড়ন এবং ধ্বংসাত্মক গৃহযুদ্ধের অবসান হবে বলে আশা করা হচ্ছিলো৷

অবজারভেটরি উল্লেখ করেছে যে, নিহত বেশিরভাগ বেসামরিক নাগরিক দেশটির ধর্মীয় সংখ্যালঘু আলাউই সম্প্রদায়ের৷ আসাদ নিজেও এই সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন৷

অবজারভেটরির এক মুখপাত্র দাবি করেছেন, নারী ও শিশুসহ বেসামরিক আলাউই নাগরিকদের কার্যত ‘মৃত্যুদণ্ড’ দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে এবং তাদের ‘ঘরবাড়ি ও সম্পত্তি লুণ্ঠন করা হয়েছে’৷

সিরিয়ার সরকারি বার্তাসংস্থা সানা জানিয়েছে, লাতাকিয়া, জাবলেহ এবং বানিয়াসে নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে৷

প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হাসান আব্দুল গনি বলেছেন, আসাদের অনুগতদের দ্বারা আক্রমণের শিকার এলাকাগুলোতে নিরাপত্তা বাহিনী ‘পুনরায় নিয়ন্ত্রণ’ প্রতিষ্ঠা করেছে৷

গনি বলেছেন, ‘কোনো বাড়ির কাছে যাওয়া বা তাদের বাড়ির ভিতরে কাউকে আক্রমণ করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে৷”

লাতাকিয়া প্রদেশের নিরাপত্তা পরিচালক মুস্তাফা কেনিফতি বলেছেন, ‘রাষ্ট্রদ্রোহ বা সিরিয়ার জনগণের কোনো অংশকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করার’ অনুমতি দেওয়া হবে না৷ বার্তাসংস্থা সানাকে তিনি বলেন, ‘‘আমরা কোনো পরিস্থিতিতেই প্রতিশোধমূলক কোনো কাজ সহ্য করবো না৷”

সেনা মোতায়েনের পর এই অঞ্চলে ‘তুলনামূলক শান্তি ফিরে এসেছে’ বলে জানিয়েছে সিরিয়ান অবজারভেটরি৷

সিরিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা রোববার জাতীয় ঐক্য ও শান্তির আহ্বান জানিয়েছেন৷

দামেস্কের মাজ্জাহ শহরে তার শৈশবের পাড়ায় অবস্থিত একটি মসজিদে বক্তৃতা দেয়ার সময় শারা বলেন, ‘‘সিরিয়ায় বর্তমানে যা ঘটছে তা (আমাদের) প্রত্যাশিত চ্যালেঞ্জের মধ্যে রয়েছে৷”

তিনি আরো বলেন, ‘‘আমাদের যতটা সম্ভব জাতীয় ঐক্য (এবং) নাগরিক শান্তি রক্ষা করতে হবে এবং সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছায় আমরা এই দেশে একসঙ্গে বসবাস করতে সক্ষম হব৷ … (যতক্ষণ) মসজিদগুলো তাদের সন্তানদের নৈতিকতা … এবং জনগণকে ন্যায্যতা ও ন্যায়বিচার শেখাবে, ততক্ষণ সিরিয়ার জন্য কোনো ভয় নেই৷”