তারেক রহমান দেশে ফিরলেই কাউন্সিল করবে বিএনপি

- আপডেট সময় : ০১:৪৬:৩৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ মার্চ ২০২৫
- / ৩৪৭ বার পড়া হয়েছে

দীর্ঘ ৭ বছর পর বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির বর্ধিত সভা এরপর আলোচনা থেকেই দলটির জাতীয় কাউন্সিল। কাউন্সিল নিয়ে দলের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা জানান, তারেক রহমান দেশে ফিরলেই কাউন্সিল করবে দল। আর নির্দিষ্ট সময়ে কাউন্সিল না করায় আরপিও লঙ্ঘন প্রসঙ্গে হাসিনা আমলের রাজনৈতিক বাস্তবতা তুলে ধরেন নেতারা। রাষ্ট্র বিজ্ঞানীরা বলছেন, অনিয়মিত কাউন্সিল-দলগুলোর অভ্যন্তরের গণতন্ত্র চর্চাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।
সম্প্রতি জাকজমকপূর্ণ আয়োজনে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির বর্ধিত সভা হয়। যেখানে অংশগ্রহণ করেন কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের চার হাজারের বেশি প্রতিনিধি যা রাজনীতিতে এক নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত তৈরি করেছে। ব্যবস্থাপনা কমিটি, বাস্তবায়ন কমিটি, অভ্যর্থনা উপকমিটি, আপ্যায়ন উপকমিটি, শৃঙ্খলা উপকমিটির মত বিভিন্ন কমিটি গঠন করে জাতীয় কাউন্সিলের আদলে করা হয় বর্ধিত সভাটি।
দীর্ঘ সাত বছর পর এমন ঘটা করে দলটির বর্ধিত সভা অনুষ্ঠানের পর আলোচনায় দলের জাতীয় কাউন্সিল। ২০১৬ সালে সবশেষ কাউন্সিল হলেও এবার নতুন রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে জাতীয় কাউন্সিল নিয়ে জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশে ফিরলেই কাউন্সিল করবে দল।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, ‘বর্ধিত সভা করে আমরা সব মতামত নিয়েছি। দেশে সুস্থ অবস্থায় ফেরত আসলে কাউন্সিল হবে। একটা পরিবেশ হয়েছে তাই বর্ধিত সভা করলাম। সারাদেশে তৃণমূলকে ঢেলে সাজানো হচ্ছে।’
দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তিন বছর পরপর কাউন্সিল করার নিয়ম রক্ষা না হওয়ার বিষয়ে রাষ্ট্রচিন্তক ফরহাদ মজহার বলছেন অনিয়মিত কাউন্সিল দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর অভ্যন্তরে গণতন্ত্র চর্চাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।
রাষ্ট্রচিন্তক ফরহাদ মজহার বলেন, ‘নিজেদের দলের মধ্যে গণতন্ত্র চর্চা করতে তো হবে। গণতন্ত্র চর্চার গুরুত্বপূর্ণ জায়গা হচ্ছে কাউন্সিল নির্বাচন। আর নির্বাচনের মাধ্যমে নেতা তৈরি করা। দলগুলো তা করে না। ফলে তাদেরকে কীসের ভিত্তিতে গণতান্ত্রিক দল বলবেন। তার তো কোনো সুযোগ নেই।’
এদিকে, দলের ভেতরে গণতন্ত্র চর্চা ও নির্দিষ্ট সময়ে কাউন্সিল না করলে আরপিও লঙ্ঘন হবে কি? এ প্রশ্নের জবাবে বিএনপির এ নীতিনির্ধারক জানান, বিগত সময়ে হাসিনা আমলের রাজনৈতিক বাস্তবতা অনুকূলে না থাকায় কাউন্সিল করা সম্ভব হয়নি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘আমরা তো একটা বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক দল। প্রশাসন থেকে শুরু করে বহুদলীয় গণতন্ত্র আমরা এনেছি। সংসদীয় গণতন্ত্র বিএনপি এনেছে।’
তবে এ রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলছেন, নির্বাচন কমিশন পূর্বের রাজনৈতিক অচলাবস্থা বিবেচনায় নিলে এর কোনো ভিত্তি থাকবে না।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. মাহবুব উল্লাহ বলেন, ‘জাতীয় কাউন্সিল অধিবেশন যেখানে সারাদেশ থেকে প্রতিনিধিরা এসে যোগ দিবে সেই রকম করার মতো সুষ্ঠু পরিবেশ ছিল না। পথে পথে যার এই অধিবেশনে আসবেন তাদের হয়রানি করা হবে, গ্রেপ্তার করা হবে সেই ভিতি সবার ছিল। কাজেই তারা সেটা করতে পারেনি।’
সারাদেশে ৮২টি সাংগঠনিক জেলা কমিটি রয়েছে বিএনপির। অধিকাংশের আংশিক ও পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হলেও নির্বাচনকে সামনে রেখে তৃণমূলকে শক্তিশালী ও নেতৃত্বের পরিবর্তন আনতে নতুন করে কমিটিগুলোকে ঠেলে সাজানো হচ্ছে।