পাকিস্তান-বালুচিস্তান সীমান্তে ট্রেন হাইজ্যাক। বেলুচ লিবারেশন আর্মির (Balochistan Liberation Army) দাবি, তারা বোলানে এই ট্রেন হাইজ্যাক করেছে। ট্রেনে যাত্রী রয়েছেন প্রায় প্রায় ৪৫০ জন। ওই জঙ্গি সংগঠনের দাবি, তাদের বিরুদ্ধে সরকার প্রতিহিংসামূলক কোনও আক্রমণ করলে সমস্ত যাত্রীদের হত্যা করবে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত, এসময় গোলাগুলিতে নিরাপত্তা বাহিনীর অন্তত ৬ সদস্য নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম।
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম জানায়, আজ (মঙ্গলবার, ১১ মার্চ) বিকেলে কোয়েটা থেকে পেশোয়ার যাচ্ছিলো জাফর এক্সপ্রেস।
সংবাদসংস্থা সূত্রে খবর, ওই ট্রেনে মোট ৪৫০ জন মতো যাত্রী ছিলেন। জঙ্গিরা চালককেও আঘাত করে। এক রেল আধিকারিক জানান, কোয়েটা থেকে পেশোয়ারের পাকতুনখোওয়াতে যায় ওই ট্রেনটি। ওই ট্রেনের ৯ বগিতে রয়েছেন যাত্রীরা। তাঁদের অনেকে জখম বলে খবর।
এক বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে, যাদের বন্ধক করা হয়েছে তাদের মধ্যে রয়েছেন পাকিস্তানের সামরিক কর্তা, পুলিশ, সন্ত্রাসবিরোধী বাহিনী এবং ইন্টার-সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্স (আইএসআই)-এর সক্রিয় কর্মীরা। এঁরা সবাই ছুটি কাটাতে পঞ্জাব গিয়েছিলেন। সেখান থেকে ফিরছিলেন ওই ট্রেনে। তার সুযোগ নিয়েই ট্রেনে হামলা করে সন্ত্রাসবাদীরা। তবে জঙ্গিদের দাবি, তারা মহিলা, শিশু এবং স্থানীয় যাত্রীদের ছেড়ে দিয়েছে।
বিবৃতি জারি করে আরও জানানো হয়েছে, পাকিস্তান সরকার যদি সেনাবাহিনীকে দিয়ে কোনও পদক্ষেপ করানোর চেষ্টা করে তার পরিণাম মারাত্মক হবে। তাদের হাতে যারা পণবন্দী রয়েছে তাদের হত্যা করবে।
এদিকে এত ঘটনা ঘটে গেলেও বালুচিস্তান রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের তরফে এই নিয়ে মুখ খোলা হয়নি। পণবন্দী বা হতাহতের ঘটনা নিয়ে তারা কোনও বিবৃতি দেয়নি।
এই বিষয়ে পাকিস্তানের এক আধিকারিক জানান, রাজ্য় সরকার জরুরি ব্যবস্থা জারি করেছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় বৈঠক ডাকা হয়েছে। ঘটনাস্থলে সেনা পাঠানো হচ্ছে। সাধারণ যাত্রীদের যাতে কোনও অসুবিধে না হয় তা নিশ্চিত করা এখন সরকারের লক্ষ্য।
পাকিস্তানের এক সাংবাদিক শাহার খান জানান, পাকিস্তানের ইতিহাসে এটা একটা অন্যতম সন্ত্রাসবাদী হামলা। একটা গোষ্ঠী শান্তি চায় না। ট্রেন ছিনতাই করা হয়েছে। সেখানে শিশু ও মহিলারাও রয়েছেন। পাকিস্তান সেনার তরফে এর জবাব দেওয়া হবে। সরকার কোনও আপোষ করবে না বলেই মনে করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, বেলুচ লিবারেশন আর্মি একটি বিচ্ছিন্নতাবাদী জঙ্গি সংগঠন। যারা ওই অঞ্চলের সায়ত্ত্বশাসন চায়। তা নিয়ে সরকারের সঙ্গে দ্বন্দ্বও রয়েছে তাদের।
বালুচিস্তানের সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীগুলো কিছু দিন আগে পাকিস্তান ও চিনের বিরুদ্ধে নতুন করে হামলার ঘোষণা করেছে। সম্প্রতি সিন্ধি বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলির সঙ্গে যুদ্ধের অনুশীলনও শেষ করেছে তারা। তারপর পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একটি যৌথ বিবৃতি জারি করে।