ঢাকা ০৪:০৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫, ২৮ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

অস্ত্র আমদানিতে শীর্ষে ইউক্রেন, রপ্তানিতে যুক্তরাষ্ট্র

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০১:২৮:৪২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ মার্চ ২০২৫
  • / ৩৪৪ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

সারাবিশ্বে সমরাস্ত্র বিক্রির পরিমাণ ও শীর্ষ রপ্তানিকারক দেশ অপরিবর্তনীয় থাকলেও নাটকীয়ভাবে পরিবর্তন এসেছে অস্ত্র কেনা দেশের। সামরিক খাতের বিশ্বস্ত গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপ্রির প্রতিবেদন বলছে, গেলো পাঁচ বছরে বিশ্বের সবচেয়ে বড় অস্ত্র কেনার দেশে পরিণত হয়েছে ইউক্রেন। অস্ত্র রপ্তানিতে অপ্রতিরোধ্য অবস্থান ধরে রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র।

স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ সেন্টারের প্রতিবেদনের প্রথম লাইনই তাক লাগিয়ে দেয়ার মতো। ২০১০ থেকে ২০১৯ সালের তুলনায় ২০২০ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত সারাবিশ্বে অস্ত্র বিক্রির পরিমাণ অল্প বিস্তর ওঠানামা করলেও ভূরাজনীতিতে নাটকীয় পরিবর্তনে কয়েকটি দেশের অস্ত্র আমদানি অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় আকাশ ছুঁয়েছে।

ইউক্রেনে রুশ সেনা অভিযানের কারণে দেশ রক্ষায় অবাধে অস্ত্র আমদানি করায়, গেলো পাঁচ বছরে সমরাস্ত্র আমদানিতে শীর্ষে উঠেছে ইউক্রেন। এই অস্ত্রের ৪৫ শতাংশই দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু অভ্যন্তরীণভাবে অস্ত্র তৈরিতে জোর দেয়ায় অস্ত্র আমদানি খুব একটা বাড়াতে হয়নি রাশিয়াকে।

একই সময় ইউরোপের ন্যাটো সদস্যভুক্ত দেশগুলো নিজেদের সামরিক খাত শক্তিশালী তো করেছেই। সেইসঙ্গে তিন বছর ধরে সহযোগিতা করছে ইউক্রেনকে। বিগত পাঁচ বছরে এই অঞ্চলে অস্ত্র আমদানি ১০০ শতাংশের বেশি বেড়েছে। এরমধ্যে ৬০ শতাংশ অস্ত্রের উৎসই যুক্তরাষ্ট্র।

এদিকে অস্ত্র বিক্রি করে গেলো পাঁচ বছরে মুনাফার পাল্লা ভারি হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের। মোট অস্ত্র রপ্তানির ৪৩ শতাংশই করেছে ওয়াশিংটন। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ফ্রান্স, তাও মাত্র ৯.৬ শতাংশ।

২০২০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে ১০৭ টি দেশে অস্ত্র সরবরাহ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ইউক্রেনে সেনা অভিযান শুরু করে আগ্রাসন চালিয়ে যেতে অস্ত্রের প্রয়োজন পড়ায় অস্ত্র রপ্তানিতে অনেক নিচে নেমে গেছে রাশিয়া। পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞায় ভারত আর চীন ছাড়া কোনো দেশ রাশিয়ার অস্ত্র কিনতেও পারছে না।

যদিও রাশিয়ার চাপ আর ট্রাম্পের প্রেসিডেন্সির কারণে আস্থা সংকটে আমদানি কমিয়ে নিজেদের অভ্যন্তরীণ প্রতিরক্ষা খাত শক্তিশালী করতে জোর দিচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। সিপ্রির প্রতিবেদনে বলা হয়, রাশিয়ার হুমকিতে ইউরোপ অস্ত্র আমদানি বাড়িয়ে দিলেও নিরাপত্তা সংকটের মধ্যে নানা কারণে আমদানি কমিয়েছে ভারত, চীন, সৌদি আরবের মতো দেশ।

রাজনৈতিক অস্থিরতার জেরে মধ্যপ্রাচ্যেও অস্ত্র কেনাবেচায় বড় ধরনের পরিবর্তন এসেছে। পাঁচ বছরের ব্যবধানে ২০ শতাংশ কমে গেছে অস্ত্র আমদানি। সর্বোচ্চ অস্ত্র আমদানি করেছে কাতার, সৌদি আরব, মিশর ও কুয়েত। সর্বোচ্চ অস্ত্র আমদানিকারক আরও চার দেশ হচ্ছে, ভারত, পাকিস্তান, জাপান ও অস্ট্রেলিয়া। ইসরাইলের অস্ত্র আমদানিতে কোনো পরিবর্তন আসেনি, কারণ যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে পাওয়া অস্ত্রই তেল আবিব ব্যবহার করছে গাজা উপত্যকায় আগ্রাসন চালিয়ে যাচ্ছে।

সিপ্রি বলছে, বিশ্বের ১০০ অস্ত্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের বিক্রি বছর ব্যবধানে চার শতাংশের ওপরে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৩ হাজার কোটি ডলার।

নিউজটি শেয়ার করুন

অস্ত্র আমদানিতে শীর্ষে ইউক্রেন, রপ্তানিতে যুক্তরাষ্ট্র

আপডেট সময় : ০১:২৮:৪২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ মার্চ ২০২৫

সারাবিশ্বে সমরাস্ত্র বিক্রির পরিমাণ ও শীর্ষ রপ্তানিকারক দেশ অপরিবর্তনীয় থাকলেও নাটকীয়ভাবে পরিবর্তন এসেছে অস্ত্র কেনা দেশের। সামরিক খাতের বিশ্বস্ত গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপ্রির প্রতিবেদন বলছে, গেলো পাঁচ বছরে বিশ্বের সবচেয়ে বড় অস্ত্র কেনার দেশে পরিণত হয়েছে ইউক্রেন। অস্ত্র রপ্তানিতে অপ্রতিরোধ্য অবস্থান ধরে রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র।

স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ সেন্টারের প্রতিবেদনের প্রথম লাইনই তাক লাগিয়ে দেয়ার মতো। ২০১০ থেকে ২০১৯ সালের তুলনায় ২০২০ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত সারাবিশ্বে অস্ত্র বিক্রির পরিমাণ অল্প বিস্তর ওঠানামা করলেও ভূরাজনীতিতে নাটকীয় পরিবর্তনে কয়েকটি দেশের অস্ত্র আমদানি অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় আকাশ ছুঁয়েছে।

ইউক্রেনে রুশ সেনা অভিযানের কারণে দেশ রক্ষায় অবাধে অস্ত্র আমদানি করায়, গেলো পাঁচ বছরে সমরাস্ত্র আমদানিতে শীর্ষে উঠেছে ইউক্রেন। এই অস্ত্রের ৪৫ শতাংশই দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু অভ্যন্তরীণভাবে অস্ত্র তৈরিতে জোর দেয়ায় অস্ত্র আমদানি খুব একটা বাড়াতে হয়নি রাশিয়াকে।

একই সময় ইউরোপের ন্যাটো সদস্যভুক্ত দেশগুলো নিজেদের সামরিক খাত শক্তিশালী তো করেছেই। সেইসঙ্গে তিন বছর ধরে সহযোগিতা করছে ইউক্রেনকে। বিগত পাঁচ বছরে এই অঞ্চলে অস্ত্র আমদানি ১০০ শতাংশের বেশি বেড়েছে। এরমধ্যে ৬০ শতাংশ অস্ত্রের উৎসই যুক্তরাষ্ট্র।

এদিকে অস্ত্র বিক্রি করে গেলো পাঁচ বছরে মুনাফার পাল্লা ভারি হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের। মোট অস্ত্র রপ্তানির ৪৩ শতাংশই করেছে ওয়াশিংটন। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ফ্রান্স, তাও মাত্র ৯.৬ শতাংশ।

২০২০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে ১০৭ টি দেশে অস্ত্র সরবরাহ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ইউক্রেনে সেনা অভিযান শুরু করে আগ্রাসন চালিয়ে যেতে অস্ত্রের প্রয়োজন পড়ায় অস্ত্র রপ্তানিতে অনেক নিচে নেমে গেছে রাশিয়া। পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞায় ভারত আর চীন ছাড়া কোনো দেশ রাশিয়ার অস্ত্র কিনতেও পারছে না।

যদিও রাশিয়ার চাপ আর ট্রাম্পের প্রেসিডেন্সির কারণে আস্থা সংকটে আমদানি কমিয়ে নিজেদের অভ্যন্তরীণ প্রতিরক্ষা খাত শক্তিশালী করতে জোর দিচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। সিপ্রির প্রতিবেদনে বলা হয়, রাশিয়ার হুমকিতে ইউরোপ অস্ত্র আমদানি বাড়িয়ে দিলেও নিরাপত্তা সংকটের মধ্যে নানা কারণে আমদানি কমিয়েছে ভারত, চীন, সৌদি আরবের মতো দেশ।

রাজনৈতিক অস্থিরতার জেরে মধ্যপ্রাচ্যেও অস্ত্র কেনাবেচায় বড় ধরনের পরিবর্তন এসেছে। পাঁচ বছরের ব্যবধানে ২০ শতাংশ কমে গেছে অস্ত্র আমদানি। সর্বোচ্চ অস্ত্র আমদানি করেছে কাতার, সৌদি আরব, মিশর ও কুয়েত। সর্বোচ্চ অস্ত্র আমদানিকারক আরও চার দেশ হচ্ছে, ভারত, পাকিস্তান, জাপান ও অস্ট্রেলিয়া। ইসরাইলের অস্ত্র আমদানিতে কোনো পরিবর্তন আসেনি, কারণ যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে পাওয়া অস্ত্রই তেল আবিব ব্যবহার করছে গাজা উপত্যকায় আগ্রাসন চালিয়ে যাচ্ছে।

সিপ্রি বলছে, বিশ্বের ১০০ অস্ত্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের বিক্রি বছর ব্যবধানে চার শতাংশের ওপরে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৩ হাজার কোটি ডলার।