বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন করে যৌন নিপীড়ন-বিরোধী সেল গঠনের নির্দেশ দিয়েছে। ফলে পূর্বের অনেক নিষ্পত্তি না হওয়া অভিযোগের সমাধান হবে বলে আশা কর্তৃপক্ষের। রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত থেকে এসব সেলের কাজ করা এবং শিক্ষার্থীদের হয়রানি এড়ানোর বিষয়টিও নিশ্চিত করা হবে।
দেশে চলমান সহিংসতা প্রতিরোধে গত ৯ মার্চ প্রথম প্রহরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল নারী শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে 'ধর্ষণবিরোধী মঞ্চ' গঠনের ঘোষণা দেয়া হয়, একইদিন মশাল শেষে এ মঞ্চের পক্ষ থেকে ৫টি দাবি তুলে ধরেন শিক্ষার্থীরা।
পাঁচ দাবির দ্বিতীয় দফায় সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কর্মক্ষেত্রে 'নারী ও শিশু নিপীড়ন-বিরোধী সেল' গঠনের কথা বলা হয়েছে। এতে নতুন করে আলোচনায় নিপীড়ন বিরোধী সেল কার্যকর করার বিষয়টি।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা বলছেন, যৌন নিপীড়ন বিরোধী সেলের বিষয়টি জানেন না অনেকেই। এ বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে সভা-সেমিনার-ওয়ার্কশপসহ বিভিন্ন কর্মসূচি নিতে হবে। এছাড়া ডিপার্টমেন্ট ভিত্তিক সেল গঠন করে সেখানে শিক্ষার্থী প্রতিনিধি নিয়োগের দাবি তাদের।
যৌন নিপীড়ন বিরোধী সেল সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নতুন করে কাজ শুরু করা হলে আগের অভিযোগগুলোরও যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া যাবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যৌন নিপীড়ন বিরোধী সেলের প্রধান উপমা কবির বলেন, ‘পুরোনো যে কমিটি ছিল, যেহেতু তারা কোনো সিদ্ধান্ত দেন নি, সেজন্য এগুলো পেন্ডিং অবস্থায় রয়ে গেছে। আমাদের ক্ষেত্রে যেটা হবে অবশ্যই, কেসটা যখন আমাদের কাছে আসবে আমরা আমাদের মতো যাচাই বাছাই করেই পরবর্তী কাজগুলো করবো।’
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. রেজাউল করিম বলেন, ফ্যাক্টস অনুযায়ী যে পদক্ষেপ নেয়া দরকার সে পদক্ষেপ নিব। আর কর্মকর্তা-কর্মচারী, শিক্ষক যেই জড়িত থাকুক যদি সেটা প্রমাণিত হয়, তাহলে সর্বোচ্চ যে পদক্ষেপ নেয়ার দরকার আমরা সেটা নিব।’
দেশের ৪৫টি পাবলিক ও ৯৭টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে এ সেল গঠিত ছিল। এছাড়াও দেশের কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন সেল গঠন করা হলেও বাকিগুলোতে চিঠি পাঠিয়েছে ইউজিসি।
রাজনৈতিক ও দলীয় আনুগত্যের ঊর্ধ্বে থেকে নতুন এই সেলগুলো কাজ করবে বলে আশা অধ্যাপক তানজীম উদ্দিন খানের।
ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক তানজীম উদ্দিন খান বলেন, আমরা আপাতত অ্যাসেসমেন্ট করতে চাচ্ছি কী অবস্থায় আছে। আমরা ভাবছি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দায়িত্বে যারা আছেন তাদের নিয়ে আমরা বসবো।
শিক্ষার্থীরা যাতে কোনোভাবেই হয়রানির শিকার না হন সে ব্যাপারেও খেয়াল রাখার আশ্বাস দেন এই ইউজিসি সদস্য।