ঢাকা ০১:৪৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ মার্চ ২০২৫, ২৮ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

ট্রেনে আত্মঘাতী জ্যাকেট পরে বসে আছে বিএলএ বোমারুরা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৪:০৫:২২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫
  • / ৩৪৬ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

পাকিস্তানের বালুচিস্তানে ছিনতাই করা জাফর এক্সপ্রেস এখনও বালুচ লিবারেশন আর্মির নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এখনও পর্যন্ত ট্রেনে থাকা ৩০ জনেরও বেশি পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়েছে। বন্দিদের মুক্ত করার জন্য পাকিস্তানি সেনাবাহিনী উদ্ধার অভিযানে নেমেছে। কিন্তু তথ্য অনুযায়ী, বিএলএ তাদের আত্মঘাতী বোমারুদের বন্দিদের মধ্যেই রেখেছে। যার কারণে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে অভিযান চালানোর ক্ষেত্রে অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করতে হচ্ছে।

পাকিস্তানের একজন স্থানীয় সাংবাদিক সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছেন যে জাফর এক্সপ্রেসে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযান অব্যাহত রয়েছে। হামলাকারীদের মধ্যে আত্মঘাতী বোমা হামলাকারীরাও রয়েছে। বন্দিদের মধ্যে আত্মঘাতী বোমারুরা রয়েছে। এই বোমারুরা আত্মঘাতী জ্যাকেট পরে আছে, যার কারণে ট্রেনের পরিস্থিতি আরও সংবেদনশীল এবং বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে।

বালুচ লিবারেশন আর্মির বিদ্রোহীরা বন্দিদের মানব ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে, যার ফলে পাকিস্তানি নিরাপত্তা বাহিনী তাদের অভিযানে চরম সতর্কতা অবলম্বন করছে। এখনও পর্যন্ত ১৫৫ জন যাত্রীকে বিএলএ-এর বন্দিদশা থেকে পাক নিরাপত্তা বাহিনী উদ্ধার করেছে। ২৭ জন বালুচ যোদ্ধা নিহত হয়েছে। জাফর এক্সপ্রেস ছিনতাই করা আক্রমণকারীরা আফগানিস্তানে থাকা লোকজনের সঙ্গেও যোগাযোগ করছে।

বিদ্রোহীরা জিম্মিদের মানব ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে, যার ফলে পাকিস্তানি নিরাপত্তা বাহিনী তাদের অভিযানে চরম সতর্কতা অবলম্বন করছে। আত্মঘাতী বোমারুদের উপস্থিতির কারণে, অভিযানটি অত্যন্ত সতর্কতার সাথে পরিচালিত হচ্ছে যাতে জিম্মিদের জীবনের কোনও ক্ষতি না হয়। প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে, এখন পর্যন্ত ১৫৫ জন যাত্রীকে বিএলএ-এর বন্দীদশা থেকে পাক নিরাপত্তা বাহিনী উদ্ধার করেছে। এখন পর্যন্ত ২৭ জন যোদ্ধা নিহত হয়েছে।

বিএলএ পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে তাদের দাবি মেনে নেওয়ার জন্য ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে এবং প্রতি ঘণ্টায় ১০ জন বন্দিকে হত্যা করারও হুমকি দিয়েছে। বিএলএ বলছে যে যদি পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ড্রোন হামলা চালায় অথবা গোলাবর্ষণ অব্যাহত রাখে তাহলে ১০ জন বন্দিকে হত্যা করা হবে।

মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে পাকিস্তানের কোয়েটা থেকে পেশোয়ারের উদ্দেশ্যে জাফর এক্সপ্রেস ছেড়ে যায়। এই ট্রেনটি দুপুর ১.৩০ মিনিটে সিব্বিতে পৌঁছনোর কথা ছিল। কিন্তু আক্রমণটি হয়েছিল বোলানের মাশফাক টানেলে। ট্রেনটি যে জায়গা দিয়ে যাচ্ছিল সেটি একটি পাহাড়ি এলাকা। এখানে ১৭টি টানেল রয়েছে, যার কারণে ট্রেনের গতি কমাতে হয়েছিল, যার সুযোগ নিয়ে বিএলএ ৮ নম্বর টানেল উড়িয়ে দেয়। এর ফলে ট্রেনটি লাইনচ্যুত হয় এবং ছিনতাই করা হয়।

এদিকে, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের উপদেষ্টা রানা সানাউল্লাহ বালুচিস্তান ট্রেন হাইজ্যাকের ঘটনায় ভারতের বিরুদ্ধে বড়সড় অভিযোগ আনেন। রানা সানাউল্লাহর দাবি, ‘এই হামলার পিছনে ভারতের হাত আছে।’ তিনি সংবাদ সংস্থা ডন-কে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে বলেন, ‘আফগানিস্তানের ভেতর থেকে ভারত এই হামলার পরিচালনা করছে।’ ‘ডন’ – এর সঞ্চালক তাঁকে জিজ্ঞাসা করেন, ‘তাহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান (টিটিপি) এবং বালুচ বিদ্রোহীদের মধ্যে কি কোনও সম্পর্ক আছে? টিটিপি কি বালুচদের সমর্থন করে?’ তখন রানা সানাউল্লাহ বলেন, ‘এই সব ভারত করছে, এতে কোনও সন্দেহ নেই। বালুচ বিদ্রোহীরা আফগানিস্তানে নিরাপদ আশ্রয় পায়।’

রানা সানাউল্লাহ আরও বলেন, ‘আফগানিস্তানে বসে তারা সব ধরনের ষড়যন্ত্র করে। আফগানিস্তানে পাকিস্তানের শত্রুরা সক্রিয় এবং এ ব্যাপারে আর কোনও সন্দেহ নেই। এটি কোনও রাজনৈতিক বিষয় নয় এবং কোনও অ্যাজেন্ডার অংশ নয়, বরং একটি ষড়যন্ত্র।’ তিনি ভারতের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ আনেন এবং বলেন, ‘হ্যাঁ, ভারত তাহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান (টিটিপি) এবং বালুচ লিবারেশন আর্মি (বিএলএ) উভয়কেই সমর্থন করছে।’

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্রেনে আত্মঘাতী জ্যাকেট পরে বসে আছে বিএলএ বোমারুরা

আপডেট সময় : ০৪:০৫:২২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫

পাকিস্তানের বালুচিস্তানে ছিনতাই করা জাফর এক্সপ্রেস এখনও বালুচ লিবারেশন আর্মির নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এখনও পর্যন্ত ট্রেনে থাকা ৩০ জনেরও বেশি পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়েছে। বন্দিদের মুক্ত করার জন্য পাকিস্তানি সেনাবাহিনী উদ্ধার অভিযানে নেমেছে। কিন্তু তথ্য অনুযায়ী, বিএলএ তাদের আত্মঘাতী বোমারুদের বন্দিদের মধ্যেই রেখেছে। যার কারণে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে অভিযান চালানোর ক্ষেত্রে অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করতে হচ্ছে।

পাকিস্তানের একজন স্থানীয় সাংবাদিক সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছেন যে জাফর এক্সপ্রেসে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযান অব্যাহত রয়েছে। হামলাকারীদের মধ্যে আত্মঘাতী বোমা হামলাকারীরাও রয়েছে। বন্দিদের মধ্যে আত্মঘাতী বোমারুরা রয়েছে। এই বোমারুরা আত্মঘাতী জ্যাকেট পরে আছে, যার কারণে ট্রেনের পরিস্থিতি আরও সংবেদনশীল এবং বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে।

বালুচ লিবারেশন আর্মির বিদ্রোহীরা বন্দিদের মানব ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে, যার ফলে পাকিস্তানি নিরাপত্তা বাহিনী তাদের অভিযানে চরম সতর্কতা অবলম্বন করছে। এখনও পর্যন্ত ১৫৫ জন যাত্রীকে বিএলএ-এর বন্দিদশা থেকে পাক নিরাপত্তা বাহিনী উদ্ধার করেছে। ২৭ জন বালুচ যোদ্ধা নিহত হয়েছে। জাফর এক্সপ্রেস ছিনতাই করা আক্রমণকারীরা আফগানিস্তানে থাকা লোকজনের সঙ্গেও যোগাযোগ করছে।

বিদ্রোহীরা জিম্মিদের মানব ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে, যার ফলে পাকিস্তানি নিরাপত্তা বাহিনী তাদের অভিযানে চরম সতর্কতা অবলম্বন করছে। আত্মঘাতী বোমারুদের উপস্থিতির কারণে, অভিযানটি অত্যন্ত সতর্কতার সাথে পরিচালিত হচ্ছে যাতে জিম্মিদের জীবনের কোনও ক্ষতি না হয়। প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে, এখন পর্যন্ত ১৫৫ জন যাত্রীকে বিএলএ-এর বন্দীদশা থেকে পাক নিরাপত্তা বাহিনী উদ্ধার করেছে। এখন পর্যন্ত ২৭ জন যোদ্ধা নিহত হয়েছে।

বিএলএ পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে তাদের দাবি মেনে নেওয়ার জন্য ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে এবং প্রতি ঘণ্টায় ১০ জন বন্দিকে হত্যা করারও হুমকি দিয়েছে। বিএলএ বলছে যে যদি পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ড্রোন হামলা চালায় অথবা গোলাবর্ষণ অব্যাহত রাখে তাহলে ১০ জন বন্দিকে হত্যা করা হবে।

মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে পাকিস্তানের কোয়েটা থেকে পেশোয়ারের উদ্দেশ্যে জাফর এক্সপ্রেস ছেড়ে যায়। এই ট্রেনটি দুপুর ১.৩০ মিনিটে সিব্বিতে পৌঁছনোর কথা ছিল। কিন্তু আক্রমণটি হয়েছিল বোলানের মাশফাক টানেলে। ট্রেনটি যে জায়গা দিয়ে যাচ্ছিল সেটি একটি পাহাড়ি এলাকা। এখানে ১৭টি টানেল রয়েছে, যার কারণে ট্রেনের গতি কমাতে হয়েছিল, যার সুযোগ নিয়ে বিএলএ ৮ নম্বর টানেল উড়িয়ে দেয়। এর ফলে ট্রেনটি লাইনচ্যুত হয় এবং ছিনতাই করা হয়।

এদিকে, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের উপদেষ্টা রানা সানাউল্লাহ বালুচিস্তান ট্রেন হাইজ্যাকের ঘটনায় ভারতের বিরুদ্ধে বড়সড় অভিযোগ আনেন। রানা সানাউল্লাহর দাবি, ‘এই হামলার পিছনে ভারতের হাত আছে।’ তিনি সংবাদ সংস্থা ডন-কে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে বলেন, ‘আফগানিস্তানের ভেতর থেকে ভারত এই হামলার পরিচালনা করছে।’ ‘ডন’ – এর সঞ্চালক তাঁকে জিজ্ঞাসা করেন, ‘তাহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান (টিটিপি) এবং বালুচ বিদ্রোহীদের মধ্যে কি কোনও সম্পর্ক আছে? টিটিপি কি বালুচদের সমর্থন করে?’ তখন রানা সানাউল্লাহ বলেন, ‘এই সব ভারত করছে, এতে কোনও সন্দেহ নেই। বালুচ বিদ্রোহীরা আফগানিস্তানে নিরাপদ আশ্রয় পায়।’

রানা সানাউল্লাহ আরও বলেন, ‘আফগানিস্তানে বসে তারা সব ধরনের ষড়যন্ত্র করে। আফগানিস্তানে পাকিস্তানের শত্রুরা সক্রিয় এবং এ ব্যাপারে আর কোনও সন্দেহ নেই। এটি কোনও রাজনৈতিক বিষয় নয় এবং কোনও অ্যাজেন্ডার অংশ নয়, বরং একটি ষড়যন্ত্র।’ তিনি ভারতের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ আনেন এবং বলেন, ‘হ্যাঁ, ভারত তাহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান (টিটিপি) এবং বালুচ লিবারেশন আর্মি (বিএলএ) উভয়কেই সমর্থন করছে।’