‘জনতার বাংলাদেশ পার্টি নামের রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ

- আপডেট সময় : ০৯:৫১:২৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ মার্চ ২০২৫
- / ৩৪৩ বার পড়া হয়েছে

দেশে ‘জনতার বাংলাদেশ পার্টি’ নামে নতুন একটি রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ ঘটেছে। এ অনুষ্ঠানে ১০১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করেছে। কমিটিতে অ্যাডভোকেট সফিকুল ইসলাম সবুজকে চেয়ারম্যান ও অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলামকে মহাসচিব হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে আইনজীবীদের নেতৃত্বে আনুষ্ঠানিকভাবে দলটি আত্মপ্রকাশ করে।
দলটির আত্মপ্রকাশের ঘোষণা করেন মুফতি মুসলিম উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘২৪ জুলাই বিপ্লবের তারুণ্যেকে ধারণ করে, দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে, ৭১- এর চেতনাকে অনুসরণ করে, ইসলামী মূল্যবোধের ভিত্তিতে এক ঝাঁক তরুণ আইনজীবী ও ছাত্র-জনতা এবং অন্য পেশাজীবীসহ সব ব্যক্তিবর্গের উদ্যোগে একটি নতুন রাজনৈতিক দল ‘জনতার বাংলাদেশ পার্টি’ নামে আত্মপ্রকাশ হতে যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ‘জনতার বাংলাদেশ পার্টির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করবেন অ্যাডভোকেট মো. সফিকুল ইসলাম সবুজ খান ও মহাসচিবের দায়িত্ব পালন করবেন অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম।’
দলটির আত্মপ্রকাশের পর দলের চেয়ারম্যান, মহাসচিবসহ ১০১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করেন দলের মহাসচিব অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম। এ সময় দলের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকা ১১ জনের নাম ঘোষণা করেন তিনি।
ঘোষিত কমিটিতে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব পদে অ্যাডভোকেট নিয়ামুল হক তালুকদার, সাংগঠনিক সম্পাদক পদে অ্যাডভোকেট জাহিদুর রহমান, প্রচার সম্পাদক পদে আব্দুল্লাহ আল নাকিব, দপ্তর সম্পাদক পদে সালেহীন ভূঁইয়া মুকুল ও অর্থ সম্পাদক পদে আলমগীর হোসেন, কোষাধ্যক্ষ সম্পাদক পদে হাবিবুর রহমান, প্রকাশনা সম্পাদক পদে মো: মাইন উদ্দিন ভূঁইয়া, ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক পদে অ্যাডভোকেট জুলেখা আক্তার ইলা, তথ্য-প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক পদে মো. মহসিন মিয়া, আপ্যায়নবিষয়ক সম্পাদক পদে অ্যাডভোকেট সজীব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক পদে মো. ফয়সাল আহাম্মদের নাম ঘোষণা করা হয়।
আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে ‘জনতার বাংলাদেশ পার্টি’র মহাসচিব অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘সারা বিশ্ব যখন আইনজীবীরা নেতৃত্ব দিচ্ছেন, যোগ্যতা ও মেধার তীব্র প্রতিযোগিতা হচ্ছে, রাষ্ট্রপ্রধান হচ্ছেন, তখন বাংলাদেশ পিছিয়ে থাকার কারণে জুলাই-২০২৪ বিপ্লবের তারুণ্যে জাগরণে উচ্ছ্বাসিত হয়ে এক ঝাঁক আইনজীবীদের উদ্যোগে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে রাজনৈতিক দল গঠনে প্রলুব্ধ হয়ে সততা, নীতি, আদর্শ ও ইসলামী মূল্যবোধের ভিত্তিতে আইনজীবীরা দেশের পক্ষে এবং মানুষের পক্ষে দাঁড়াবে। সত্যকে সত্য বলবে, মিথ্যার বিরুদ্ধে স্পষ্ট অবস্থান নেবে, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, যানজট নিরসন ও দেশের বেকারত্ব দূরীকরণে কার্যকরী ভূমিকা নিয়ে কথা বলবে। কৃষক, শ্রমিক সব পেশাজীবী মানুষের পক্ষে এবং মানবিক বাংলাদেশ গড়তে কথা বলবে।’
দলের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মো. সফিকুল ইসলাম সবুজ খান বলেন, ‘আজ জনতার বাংলাদেশ পার্টির জন্য একটি ঐতিহাসিক দিন।
আজ এর আনুষ্ঠানিক বীজ রোপণ করা হলো। একদিন তা ফুলে ফুলে ছেয়ে যাবে পুরো দেশ। তার সৌরভ উপলব্ধি করবে মানুষ। তার মূল উদ্দেশ্য একটি সুস্থ, সুন্দর, মানবিক ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় আজন্ম বিপ্লবী ভূমিকায় থাকবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আগামী নির্বাচনে যদি নিবন্ধন লাভ করি তাহলে ২০০ আসনে আইনজীবী প্রার্থী দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
বাকি ১০০ আসন হবে অন্যান্য পেশাজীবীর। দেশের রাজনীতিতে নির্মূল হোক টাকার প্রভাব। সততা আর যোগ্যতা হোক প্রশংসিত। ফিরে আসুক সত্যের উদ্ভাসিত সূর্য ও তারুণ্যের জয়গান।’
এ সময় আরো বক্তব্য দেন দলটির সহসভাপতি মো. আলী হোসেন, মো. আব্দুল মালেক, আব্দুল করিম চৌধুরী লেলিন, যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট মো. ফুয়াদ, সাংগঠনিক সম্পাদক জাহিদুর রহমান, আইন সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. বিল্লাল হোসেন প্রমুখ।
আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে দলটির পক্ষ থেকে ২০ দফা ঘোষণা করা হয়।
জনতার বাংলাদেশ পার্টির ২০ দফা হলো—
১. যানজট নিরসন। ২. দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ। ৩. আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা। ৪. কর্মসংস্থান সৃষ্টি। ৫. মাদকদ্রব্য নির্মূল করা। ৬. সুশিক্ষা বা নৈতিক শিক্ষার প্রসার। ৭. দেশের প্রান্তিক পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা। ৮. দুর্নীতি রোধ। ৯. মানবাধিকার সুরক্ষা ও নাগরিক হিসাবে সর্বোচ্চ জীবনযাপন করা। ১০. বৈষম্যহীন সমাজ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা। ১১. নিরাপদ বাসযোগ্য ভূমি। ১২. রাজনীতিতে টাকার প্রভাব ও পেশিশক্তি কমিয়ে মেধাবীদের অগ্রাধিকার। ১৩. মানুষকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করা। ১৪. কৃষিকে উৎসাহিত করা বা কৃষি বিপ্লব ঘটানো। ১৫. ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ও সুস্থ মালিক-শ্রমিক সম্পর্ক তৈরি করা। ১৬. ইসলামি ব্যবস্থাকে অগ্রাধিকার দিয়ে ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত ধর্মশিক্ষা বাধ্যতামূলক করা। ১৭. জনসংখ্যাকে প্রকৃত মানব সম্পদে রূপান্তরিত করা। ১৮. দেশকে উৎপাদনমুখী করা। ১৯. প্রশাসনকে শক্ত করে স্বনির্ভর বাংলাদেশ গড়া। ২০. দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব অক্ষুণ্ন রাখা।