ইরানে ‘রক্ত বৃষ্টি’তে বদলে গেল সমুদ্র

- আপডেট সময় : ০১:১৫:৩৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫
- / ৩৫০ বার পড়া হয়েছে

ইরানের সমুদ্র সৈকতে দেখা গেল এক বিরল প্রাকৃতিক ঘটনা, যেখানে বালি ও জল রক্তের মতো লাল হয়ে উঠল। বিজ্ঞানীরা এটি ‘ব্লাড রেন’ বা রক্তবৃষ্টি বলেছেন। এটি একটি দুর্লভ ঘটনা।
রহস্যময় লাল বৃষ্টি—কীভাবে ঘটল এই ঘটনা? সম্প্রতি ইরানের এক সমুদ্র সৈকতে স্থানীয়রা এক অবিশ্বাস্য দৃশ্যের সাক্ষী হয়েছেন। সৈকতের বালি ও জল এক রাতের মধ্যেই রক্তের মতো লাল হয়ে যায়। অনেকেই ভাবছেন, এটি কোনো অশুভ সংকেত নাকি প্রকৃতির কোনও আশ্চর্যজনক রূপ! তবে বিজ্ঞানীরা বলছেন, এটি “ব্লাড রেন” নামে পরিচিত এক বিরল প্রাকৃতিক ঘটনা।
ব্লাড রেন কী? ব্লাড রেন বা রক্তবৃষ্টি হল এক ধরণের অস্বাভাবিক বৃষ্টি, যেখানে বৃষ্টির জল লাল, গোলাপি বা বাদামি রঙ ধারণ করে। এটি সাধারণত তখনই ঘটে, যখন বাতাসে থাকা সূক্ষ্ম লাল কণা বা ধুলা বৃষ্টির ফোঁটার সঙ্গে মিশে যায়। এতে মনে হয়, যেন আকাশ থেকে রক্ত ঝরছে!
কেন ঘটল ইরানে রক্তবৃষ্টি? বিজ্ঞানীদের মতে, এই ঘটনাটির পেছনে একাধিক সম্ভাব্য কারণ থাকতে পারে— ✔️ লাল শৈবাল বা রেড অ্যালগি: কিছু বিজ্ঞানী মনে করছেন, এই ঘটনা সমুদ্রের জলে লাল শৈবাল বা বিশেষ মাইক্রোঅর্গানিজমের কারণে ঘটতে পারে।
https://www.instagram.com/p/DF2TYUToNNH/?utm_source=ig_embed&utm_campaign=embed_video_watch_again
ধুলিঝড়ের প্রভাব: মধ্যপ্রাচ্যে ধুলিঝড় খুব সাধারণ ঘটনা। সেই ধুলো বৃষ্টির ফোঁটার সাথে মিশে এই লালচে রঙের সৃষ্টি করতে পারে। শিল্প দূষণ: কিছু বিজ্ঞানী সন্দেহ করছেন, আশেপাশের কলকারখানা বা শিল্পপ্রতিষ্ঠানের রাসায়নিক দূষণও এর কারণ হতে পারে।
স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক ও কৌতূহল- এই রহস্যময় ঘটনার পর ইরানের সাধারণ মানুষের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। কেউ কেউ মনে করছেন, এটি পৃথিবী ধ্বংসের ইঙ্গিত ! আবার অনেকেই একে প্রকৃতির অপূর্ব সৌন্দর্য বলে মনে করছেন। তবে বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত করেছেন, এটি একেবারেই স্বাভাবিক এক আবহাওয়া সংক্রান্ত ঘটনা, যা খুবই বিরল।
এমন ঘটনা আগে কোথায় ঘটেছে? বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আগেও ব্লাড রেন দেখা গিয়েছে— ভারতের কেরালায় ২০০১ সালে প্রথমবারের মতো রক্তবৃষ্টি দেখা গিয়েছিল, যা বিজ্ঞানীদের অবাক করে দিয়েছিল। স্পেন, শ্রীলঙ্কা ও সাইবেরিয়ার কিছু অংশেও এই ধরনের বৃষ্টির ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। তবে জলের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হচ্ছে, যাতে বোঝা যায় কী কারণে এই লাল রঙ সৃষ্টি হয়েছে। ইরানের সমুদ্রতটে ঘটা এই বিরল ঘটনার পেছনে প্রকৃত কারণ খুঁজতে গবেষণা চলছে। যদি এটি সত্যিই ব্লাড রেন হয়, তাহলে এটি একটি প্রাকৃতিক কিন্তু অতি দুর্লভ ঘটনা।