ঢাকা ০১:১৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫, ৩০ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

বোনকে ফ্ল্যাট হস্তান্তরে টিউলিপের জাল স্বাক্ষর

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০২:২৪:৪৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫
  • / ৩৫২ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির সাবেক মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক বাংলাদেশে তাঁর বোন আজমিনা সিদ্দিকের নামে সম্পত্তি হস্তান্তরে জাল নোটারি নথি ব্যবহার করেছেন বলে অভিযোন এনেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন জমির অবৈধ বরাদ্দের অভিযোগের তদন্তের অংশ হিসেবে দুদক এ অভিযোগ তুলেছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমস।

দুর্নীতি দমন কমিশনের দাবি, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগনি টিউলিপ সিদ্দিক তাঁর রাজনৈতিক প্রভাব ব্যবহার করে ঢাকার পূর্বাচল নিউ টাউন প্রকল্পে সরকারি প্লট নিজের এবং তাঁর পরিবারের জন্য দখল করেছেন, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন জমির অবৈধ বরাদ্দের সুবিধা নিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার দুদকের প্রকাশিত একটি অভিযোগপত্র অনুসারে, কমিশন আরও অভিযোগ করেছে, টিউলিপ তাঁর বোনের নামে একটি পৃথক ফ্ল্যাট হস্তান্তরের জন্য একটি জাল নোটারি ব্যবহার করেছিলেন। দুদক এখন টিউলিপের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ জমা দেবে। মামলাটি বিচারের আওতায় আনার আগে আদালতকে অনুমোদন করতে হবে।

যুক্তরাজ্যে টিউলিপের ফ্ল্যাটের মালিকানাসহ নানা দুর্নীতি নিয়ে প্রথম খবর প্রকাশ করে ফিনান্সিয়াল টাইম। ওই প্রতিবেদনের পর রাজনৈতিক চাপের মুখে গত জানুয়ারিতে যুক্তরাজ্যের সরকারি পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন তিনি।

খালা শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন দল আওয়ামী লীগের সাথে সম্পর্কিত সম্পত্তি থেকে টিউলিপ লাভবান হয়েছেন– এমন অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। তিনি ধারাবাহিকভাবে কোনও অন্যায় কাজ করার কথা অস্বীকার করে আসছেন।

দুর্নীতি দমন কমিশন জানিয়েছে, তারা রাষ্ট্রীয় সম্পদ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগের বিস্তৃত তদন্তের অংশ হিসেবে টিউলিপ সিদ্দিকসহ হাসিনার পরিবারের একাধিক সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছে।

দুদক বলছে, শেখ হাসিনা এবং তাঁর আত্মীয়রা যোগ্যতার নিয়ম লঙ্ঘন করে, মানসম্মত বরাদ্দ পদ্ধতি উপেক্ষা করে সরকারি জমি অধিগ্রহণ করেছেন।

দুদকের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আব্দুল মোমেন বলেন, এটি কেবল একটি হিমশৈলের চূড়া। এখন দুদকের তদন্তাধীন আরও অনেক অভিযোগ রয়েছে, যা ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী এবং তাঁর নিকটাত্মীয় পরিবারের সদস্যদের দুর্নীতির বিশাল আকারের কথা বলবে।

দুর্নীতি দমন কমিশন দাবি করেছে, ঢাকার উপকণ্ঠে অবস্থিত বৃহৎ আবাসিক উন্নয়ন প্রকল্প পূর্বাচল নিউ টাউন প্রকল্পে ৬০ কাঠা (প্রায় এক একর) সরকারি জমি বেআইনিভাবে হাসিনা, তাঁর সন্তান এবং ঘনিষ্ঠ পরিবারের সদস্যদের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছিল।

তদন্তকারীরা অভিযোগ করেছেন, টিউলিপকে একটি সম্পত্তির মালিকানা পেতে অযোগ্য ঘোষণা করা উচিত ছিল, কিন্তু তিনি এবং তাঁর পরিবারের সদস্যরা নিয়মকানুনে হস্তক্ষেপ করেছেন। যোগ্যতার মানদণ্ডকে উপেক্ষা করেছেন।

বৃহত্তর তদন্তের অংশ হিসেবে দুদক আরও দাবি করেছে, টিউলিপ ঢাকার গুলশান এলাকার একটি ফ্ল্যাটের মালিকানা তাঁর বোন আজমিনা সিদ্দিকের নামে হস্তান্তর করার জন্য একটি জাল নোটারি নথি ব্যবহার করেছিলেন।

অভিযোগপত্র অনুসারে, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী গাজী সিরাজুল ইসলামের ওই নথিতে সিল রয়েছে। তিনি অবশ্য নোটারি করার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, স্বাক্ষরটি তাঁর নিজের সাথে মেলেনি।

দুদক অভিযোগ করেছে, নোটারি জালিয়াতি সম্পত্তির আসল মালিকানা গোপন করার প্রচেষ্টার অংশ ছিল।

অভিযোগের বিষয়ে টিউলিপ সিদ্দিক কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

নিউজটি শেয়ার করুন

বোনকে ফ্ল্যাট হস্তান্তরে টিউলিপের জাল স্বাক্ষর

আপডেট সময় : ০২:২৪:৪৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫

যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির সাবেক মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক বাংলাদেশে তাঁর বোন আজমিনা সিদ্দিকের নামে সম্পত্তি হস্তান্তরে জাল নোটারি নথি ব্যবহার করেছেন বলে অভিযোন এনেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন জমির অবৈধ বরাদ্দের অভিযোগের তদন্তের অংশ হিসেবে দুদক এ অভিযোগ তুলেছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমস।

দুর্নীতি দমন কমিশনের দাবি, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগনি টিউলিপ সিদ্দিক তাঁর রাজনৈতিক প্রভাব ব্যবহার করে ঢাকার পূর্বাচল নিউ টাউন প্রকল্পে সরকারি প্লট নিজের এবং তাঁর পরিবারের জন্য দখল করেছেন, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন জমির অবৈধ বরাদ্দের সুবিধা নিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার দুদকের প্রকাশিত একটি অভিযোগপত্র অনুসারে, কমিশন আরও অভিযোগ করেছে, টিউলিপ তাঁর বোনের নামে একটি পৃথক ফ্ল্যাট হস্তান্তরের জন্য একটি জাল নোটারি ব্যবহার করেছিলেন। দুদক এখন টিউলিপের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ জমা দেবে। মামলাটি বিচারের আওতায় আনার আগে আদালতকে অনুমোদন করতে হবে।

যুক্তরাজ্যে টিউলিপের ফ্ল্যাটের মালিকানাসহ নানা দুর্নীতি নিয়ে প্রথম খবর প্রকাশ করে ফিনান্সিয়াল টাইম। ওই প্রতিবেদনের পর রাজনৈতিক চাপের মুখে গত জানুয়ারিতে যুক্তরাজ্যের সরকারি পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন তিনি।

খালা শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন দল আওয়ামী লীগের সাথে সম্পর্কিত সম্পত্তি থেকে টিউলিপ লাভবান হয়েছেন– এমন অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। তিনি ধারাবাহিকভাবে কোনও অন্যায় কাজ করার কথা অস্বীকার করে আসছেন।

দুর্নীতি দমন কমিশন জানিয়েছে, তারা রাষ্ট্রীয় সম্পদ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগের বিস্তৃত তদন্তের অংশ হিসেবে টিউলিপ সিদ্দিকসহ হাসিনার পরিবারের একাধিক সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছে।

দুদক বলছে, শেখ হাসিনা এবং তাঁর আত্মীয়রা যোগ্যতার নিয়ম লঙ্ঘন করে, মানসম্মত বরাদ্দ পদ্ধতি উপেক্ষা করে সরকারি জমি অধিগ্রহণ করেছেন।

দুদকের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আব্দুল মোমেন বলেন, এটি কেবল একটি হিমশৈলের চূড়া। এখন দুদকের তদন্তাধীন আরও অনেক অভিযোগ রয়েছে, যা ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী এবং তাঁর নিকটাত্মীয় পরিবারের সদস্যদের দুর্নীতির বিশাল আকারের কথা বলবে।

দুর্নীতি দমন কমিশন দাবি করেছে, ঢাকার উপকণ্ঠে অবস্থিত বৃহৎ আবাসিক উন্নয়ন প্রকল্প পূর্বাচল নিউ টাউন প্রকল্পে ৬০ কাঠা (প্রায় এক একর) সরকারি জমি বেআইনিভাবে হাসিনা, তাঁর সন্তান এবং ঘনিষ্ঠ পরিবারের সদস্যদের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছিল।

তদন্তকারীরা অভিযোগ করেছেন, টিউলিপকে একটি সম্পত্তির মালিকানা পেতে অযোগ্য ঘোষণা করা উচিত ছিল, কিন্তু তিনি এবং তাঁর পরিবারের সদস্যরা নিয়মকানুনে হস্তক্ষেপ করেছেন। যোগ্যতার মানদণ্ডকে উপেক্ষা করেছেন।

বৃহত্তর তদন্তের অংশ হিসেবে দুদক আরও দাবি করেছে, টিউলিপ ঢাকার গুলশান এলাকার একটি ফ্ল্যাটের মালিকানা তাঁর বোন আজমিনা সিদ্দিকের নামে হস্তান্তর করার জন্য একটি জাল নোটারি নথি ব্যবহার করেছিলেন।

অভিযোগপত্র অনুসারে, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী গাজী সিরাজুল ইসলামের ওই নথিতে সিল রয়েছে। তিনি অবশ্য নোটারি করার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, স্বাক্ষরটি তাঁর নিজের সাথে মেলেনি।

দুদক অভিযোগ করেছে, নোটারি জালিয়াতি সম্পত্তির আসল মালিকানা গোপন করার প্রচেষ্টার অংশ ছিল।

অভিযোগের বিষয়ে টিউলিপ সিদ্দিক কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।