সিরিয়ায় অন্তর্বর্তী সরকার থাকছে ৫ বছর, নতুন সংবিধানে স্বাক্ষর

- আপডেট সময় : ০১:১৮:৩১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫
- / ৩৪৮ বার পড়া হয়েছে

পরিবর্তনকালীন পর্যায়ের জন্য একটি অস্থায়ী সংবিধানে স্বাক্ষর করেছেন সিরিয়ার অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা। গতকাল বৃহস্পতিবার এই সাংবিধানিক ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করেন তিনি। অস্থায়ী সংবিধানে বলা আছে, ইসলামপন্থী শাসনে চলবে সিরিয়া। এই অস্থায়ী সংবিধান পরিবর্তনকালীন পর্যায় অর্থাৎ পাঁচ বছরের জন্য কার্যকর হবে।
এর আগে গত জানুয়ারিতেই বাতিল করা হয়েছে আগের সংবিধান। আগেই অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা জানিয়েছিলেন, প্রেসিডেন্ট নির্বাচন দিতে ৪-৫ বছর লাগতে পারে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, অন্তর্বর্তী সরকারের পাঁচ বছর পর্যন্ত এই অস্থায়ী সংবিধান কার্যকর থাকবে বলে জানিয়েছেন সিরিয়ার অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা। এর মধ্য দিয়ে ব্যাপক আক্রমণ চালিয়ে বাশার আল-আসাদের সরকারকে উৎখাত করার তিন মাস পর সাংবিধানিক ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করা হলো। এবার স্থায়ী সংবিধানের জন্য আরেকটি কমিটি করা হবে।
সাংবিধানিক ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করার সময় আল-শারা বলেন, ‘এটি সিরিয়ার জন্য একটি নতুন ইতিহাসের সূচনা করবে বলে প্রত্যাশা করছি। এর মাধ্যমে আমরা নিপীড়নের পরিবর্তে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করব।’ দুই সপ্তাহের কম সময় আগে একটি কমিটি করে এই ঘোষণাপত্র বানানোর নির্দেশ দেন শারা।
সংবিধান খসড়া কমিটির সদস্য আব্দুল হামিদ আল-আওয়াক বলেন, আগের সংবিধানের কিছু বিষয় নতুন অস্থায়ী সংবিধানেও রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে, রাষ্ট্রপ্রধানকে মুসলিম হতে হবে এবং আইনশাস্ত্রের প্রধান উৎস হিসেবে ইসলামি আইন প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
নতুন এই সংবিধানের ব্যাপারে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার সাংবাদিক রেসুল সেরদার বলেন, নেতাদের ধর্মীয় সম্পৃক্ততার ওপর আইন চালু করার প্রশ্নটি একটি ‘বিতর্কিত বিষয়’ ছিল। বিষয়টি সংবিধানের একটি ধারা হবে কি না, তা নিয়ে অনেক প্রশ্ন ছিল। কিন্তু এখন এটা স্পষ্ট যে, রাষ্ট্রপ্রধানকে মুসলিম হতে হবে।
সংবিধান খসড়া কমিটির সদস্য আব্দুল হামিদ আল-আওয়াক বলেন, মত প্রকাশ ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা এবং নারীদের সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অধিকার নিশ্চিত করার বিধানও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে এতে। এই সংবিধানে বেশি মনোযোগ থাকবে অন্তর্বর্তী সময়ে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার ওপর। এর লক্ষ্য হবে পূর্ববর্তী বাশার আল-আসাদ সরকারের অধীনে সংঘটিত অপরাধের বিচার নিশ্চিত করা।
যেকোনো সমস্যা মোকাবিলায় দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজনীয়তার দিকে ইঙ্গিত করে আল-আওয়াক বলেন, অস্থায়ী সংবিধানের অধীনে নির্বাহী ক্ষমতা শুধু প্রেসিডেন্টের হাতে সীমাবদ্ধ থাকবে।
তবে আল জাজিরার সাংবাদিক বলেন, অস্থায়ী সংবিধানে একটি গণপরিষদের কথা বলা হয়েছে। এটির এক-তৃতীয়াংশ সদস্য নিযুক্ত করবেন প্রেসিডেন্ট। নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হওয়ার আগ পর্যন্ত সব আইন প্রণয়নের দায়িত্বে থাকবে এই গণপরিষদের হাতে।
প্রেসিডেন্টের মতে, নির্বাচন হতে সম্ভবত চার থেকে পাঁচ বছর সময় লাগবে। আর সংবিধান প্রণয়ন করতে সময় লাগবে তিন বছর।
সংবাদমাধ্যম সিএনএন বলছে, গণপরিষদের হাতে রাষ্ট্রপতিকে ক্ষমতাচ্যুত করার ক্ষমতাও থাকবে। তাত্ত্বিকভাবে এটি সম্ভব হলেও বাস্তবে অত্যন্ত কঠিন হবে। কারণ, গণপরিষদের সদস্য সরাসরি রাষ্ট্রপতি নিজেই নিযুক্ত করবেন। স্থায়ী সংবিধান প্রণয়নের জন্য একটি নতুন কমিটি গঠন করা হবে। তবে এটি সিরিয়ার রাজনৈতিক, ধর্মীয় ও জাতি গোষ্ঠীগুলোকে আরও অন্তর্ভুক্ত করবে কি না, তা স্পষ্ট নয়।