ঢাকা ১০:০০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫, ১ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

আইনে ত্রুটি: অধিকার বঞ্চিত ভোক্তা, উন্নতি হয়নি সূচকের

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০১:১৩:৫৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫
  • / ৩৫২ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

গেল ১৫ বছরে বাজার তদারকি করে প্রায় ১৪০ কোটি টাকা জরিমানা করেছে ভোক্তা অধিদপ্তর। তাতে ভোক্তা অধিকার আদায়ের সূচকে উন্নতি হয়নি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আইনের ত্রুটিতেই ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন ভোক্তারা। এদিকে, ভোক্তার অধিকার নিয়ে কাজ করা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের দাবি অধিকার প্রতিষ্ঠায় স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান বা পৃথক মন্ত্রণালয়ের।

ভোক্তা-ব্যবসায়ীর পাল্টাপাল্টি অভিযোগের গন্তব্য কোথায় তার বেশ ক’টির উত্তর মেলে ভোক্তা অধিকার নিয়ে কাজ করা সরকারি প্রতিষ্ঠানের কাজের উপর। দেশে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণে বেশ কয়েকটি সরকারি প্রতিষ্ঠান কাজ করলেও মূল দায়িত্ব ভোক্তা অধিদপ্তরের উপরেই।

এই প্রতিষ্ঠান ভোক্তা আইন-২০০৯ অনুযায়ী বাজার তদারকি, ভোক্তার অধিকার সংরক্ষণ, অপরাধের বিচার ও অভিযোগ নিষ্পত্তি করে থাকেন। কিন্তু প্রশ্ন হলো এরপরও ভোক্তা ন্যায্য অধিকার হারাচ্ছেন কেন?

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ আলীম আখতার খান বলেন, ‘সমাজে আসলে ভোক্তারা তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিতই আছে। কিছু ত্রুটি আছে, এটা অস্বীকার করা যাবে না। আমরা যেটা নেই সেটা প্রশাসনিক ব্যবস্থা। এটাকে মোবাইল কোর্ট বলার সুযোগ নেই।’

আইনে ই-কমার্স, স্বাস্থ্যসেবা, টেলিকম, বাড়িভাড়াসহ সরকারি সেবা প্রতিষ্ঠানের অভিযোগের বিষয়ে উল্লেখ নাই অথচ ই-কমার্স ও সেবা খাতের অভিযোগই শীর্ষে রয়েছে। একই সঙ্গে আইন প্রয়োগে রয়েছে দ্বৈতনীতি।

বিদ্যমান আইনে অপরাধীর সর্বোচ্চ সাজা ৩ বছর। কারাদণ্ডসহ ২ লাখ টাকার জরিমানারও বিধান রয়েছে। তবে, এতকিছু থাকলেও মামলা করার এখতিয়ার নাই অধিদপ্তরের। আবার এ বিষয়ে আদালতে মামলা করতেও লাগবে ভোক্তার মহাপরিচালকের সুপারিশ!

মোহাম্মদ আলীম আখতার খান বলেন, ‘এখানে আইনে যেটা বলা আছে, দ্বৈত বিচারে বাধা। এক অর্থে আমারটা বিচার নয়, ওনারটা বিচার। দ্বৈত হয় না। কিন্তু পাবলিক তো দুইবার সাজার সম্মুখীন হচ্ছে।’

আইনের ফাঁকফোকরে বন্দী ভোক্তার অধিকার, বলছেন ভোক্তা অধিকার নিয়ে কাজ করা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান।

কনশাস কনজ্যুমার্স সোসাইটির নির্বাহী পরিচালক পলাশ মাহমুদ বলেন, ‘যারা ভোক্তার এ অধিকারগুলো নিয়ে কাজ করে, সরকানি প্রতিষ্ঠানগুলো এদের স্বতন্ত্র একটা প্লাটফর্ম বা আলাদা মিনিস্ট্রি হতে পারে যদি বড় করে চিন্তা করা হয়। নিতান্তই যদি মিনিস্ট্রি না হয় স্বতন্ত্র সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান হওয়া দরকার।’

বিগত কয়েক বছরের ভোক্তা অধিদপ্তরের প্রতিবেদনে দেখা যায়, নিয়মিত বাড়ছে অভিযোগ, যা নিষ্পত্তিতে বাড়তি সময় লাগছে। সাথে রয়েছে জনবল সংকট।

তবে এর মাঝেই, ভোক্তা আইন প্রতিষ্ঠার পর গেল ১৫ বছরে বাজার তদারকিতে জরিমানা আদায় হয়েছে প্রায় ১৪০ কোটি টাকা। আর বাজারে অভিযানের সংখ্যা ও অভিযোগের পরিমাণ ছাড়িয়েছে কয়েক লাখ।

নিউজটি শেয়ার করুন

আইনে ত্রুটি: অধিকার বঞ্চিত ভোক্তা, উন্নতি হয়নি সূচকের

আপডেট সময় : ০১:১৩:৫৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫

গেল ১৫ বছরে বাজার তদারকি করে প্রায় ১৪০ কোটি টাকা জরিমানা করেছে ভোক্তা অধিদপ্তর। তাতে ভোক্তা অধিকার আদায়ের সূচকে উন্নতি হয়নি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আইনের ত্রুটিতেই ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন ভোক্তারা। এদিকে, ভোক্তার অধিকার নিয়ে কাজ করা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের দাবি অধিকার প্রতিষ্ঠায় স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান বা পৃথক মন্ত্রণালয়ের।

ভোক্তা-ব্যবসায়ীর পাল্টাপাল্টি অভিযোগের গন্তব্য কোথায় তার বেশ ক’টির উত্তর মেলে ভোক্তা অধিকার নিয়ে কাজ করা সরকারি প্রতিষ্ঠানের কাজের উপর। দেশে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণে বেশ কয়েকটি সরকারি প্রতিষ্ঠান কাজ করলেও মূল দায়িত্ব ভোক্তা অধিদপ্তরের উপরেই।

এই প্রতিষ্ঠান ভোক্তা আইন-২০০৯ অনুযায়ী বাজার তদারকি, ভোক্তার অধিকার সংরক্ষণ, অপরাধের বিচার ও অভিযোগ নিষ্পত্তি করে থাকেন। কিন্তু প্রশ্ন হলো এরপরও ভোক্তা ন্যায্য অধিকার হারাচ্ছেন কেন?

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ আলীম আখতার খান বলেন, ‘সমাজে আসলে ভোক্তারা তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিতই আছে। কিছু ত্রুটি আছে, এটা অস্বীকার করা যাবে না। আমরা যেটা নেই সেটা প্রশাসনিক ব্যবস্থা। এটাকে মোবাইল কোর্ট বলার সুযোগ নেই।’

আইনে ই-কমার্স, স্বাস্থ্যসেবা, টেলিকম, বাড়িভাড়াসহ সরকারি সেবা প্রতিষ্ঠানের অভিযোগের বিষয়ে উল্লেখ নাই অথচ ই-কমার্স ও সেবা খাতের অভিযোগই শীর্ষে রয়েছে। একই সঙ্গে আইন প্রয়োগে রয়েছে দ্বৈতনীতি।

বিদ্যমান আইনে অপরাধীর সর্বোচ্চ সাজা ৩ বছর। কারাদণ্ডসহ ২ লাখ টাকার জরিমানারও বিধান রয়েছে। তবে, এতকিছু থাকলেও মামলা করার এখতিয়ার নাই অধিদপ্তরের। আবার এ বিষয়ে আদালতে মামলা করতেও লাগবে ভোক্তার মহাপরিচালকের সুপারিশ!

মোহাম্মদ আলীম আখতার খান বলেন, ‘এখানে আইনে যেটা বলা আছে, দ্বৈত বিচারে বাধা। এক অর্থে আমারটা বিচার নয়, ওনারটা বিচার। দ্বৈত হয় না। কিন্তু পাবলিক তো দুইবার সাজার সম্মুখীন হচ্ছে।’

আইনের ফাঁকফোকরে বন্দী ভোক্তার অধিকার, বলছেন ভোক্তা অধিকার নিয়ে কাজ করা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান।

কনশাস কনজ্যুমার্স সোসাইটির নির্বাহী পরিচালক পলাশ মাহমুদ বলেন, ‘যারা ভোক্তার এ অধিকারগুলো নিয়ে কাজ করে, সরকানি প্রতিষ্ঠানগুলো এদের স্বতন্ত্র একটা প্লাটফর্ম বা আলাদা মিনিস্ট্রি হতে পারে যদি বড় করে চিন্তা করা হয়। নিতান্তই যদি মিনিস্ট্রি না হয় স্বতন্ত্র সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান হওয়া দরকার।’

বিগত কয়েক বছরের ভোক্তা অধিদপ্তরের প্রতিবেদনে দেখা যায়, নিয়মিত বাড়ছে অভিযোগ, যা নিষ্পত্তিতে বাড়তি সময় লাগছে। সাথে রয়েছে জনবল সংকট।

তবে এর মাঝেই, ভোক্তা আইন প্রতিষ্ঠার পর গেল ১৫ বছরে বাজার তদারকিতে জরিমানা আদায় হয়েছে প্রায় ১৪০ কোটি টাকা। আর বাজারে অভিযানের সংখ্যা ও অভিযোগের পরিমাণ ছাড়িয়েছে কয়েক লাখ।