সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষতার নজির স্থাপন করবে আগামী নির্বাচন, প্রত্যাশা জাতিসংঘের

- আপডেট সময় : ০৯:৩২:৪৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫
- / ৩৪৫ বার পড়া হয়েছে

আগামীতে বাংলাদেশে শক্তিশালী গণতন্ত্র দেখতে চায় জাতিসংঘ। সেইসঙ্গে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষতার নজির স্থাপন করবে আগামী নির্বাচন– এমন প্রত্যাশা সংস্থাটির। আজ দুপুরে রাজধানীর একটি হোটেলে রাজনৈতিক দল ও সংস্কার কমিশনের সঙ্গে অ্যান্তোনিও গুতেরেসের বৈঠকে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে বিএনপিসহ বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল দ্রুত নির্বাচনের ওপর জোর দিলেও জাতীয় নাগরিক পার্টির পক্ষ থেকে মৌলিক সংস্কারকেই প্রাধান্য দেয়া হয়।
চারদিনের বাংলাদেশ সফরের তৃতীয় দিনে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে গোলটেবিল বৈঠক করেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। শনিবার দুপুরে রাজধানীর এক হোটেলে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় উঠে আসে নির্বাচন, সংস্কার ও জুলাই আগস্ট হত্যার বিচারের বিষয়।
বৈঠক শেষে একে একে গণমাধ্যমে কথা বলেন বিএনপি, জামায়াত, জাতীয় নাগরিক পার্টি সহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা। এসময় বিএনপি মহাসচিব বলেন, শুধু মাত্র নির্বাচন কেন্দ্রিক সংস্কার শেষ করে দ্রুত নির্বাচনের পক্ষে বিএনপি।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘নির্বাচনকেন্দ্রিক সংস্কার অবশ্যই করতে হবে। আমরা বলেছি, সেই সংস্কারটা যত দ্রুত সম্ভব করে ফেলা দরকার। এরপর নির্বাচন করে একটা পার্লামেন্টের মাধ্যমে বাকি অন্যান্য বিষয়গুলো করতে হবে। এটা একটা চলমান প্রক্রিয়া।’
সংস্কার, টেকসই গণতন্ত্র, জাতীয় ঐক্য ও জুলাই অভ্যুত্থানের গণহত্যার বিচারসহ নির্বাচনের বিষয়ে জাতিসংঘ মহাসচিব এর সাথে কথা হয়েছে বলে জানান জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ড. আব্দুললাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, ‘আমরা সংস্কারের ব্যাপারে কথা বলেছি, একটা ফেয়ার নির্বাচনের ব্যাপারে আমরা কথা বলেছি, টেকসই গণতন্ত্রের ব্যাপারে আমরা কথা বলেছি এবং জাতীয় ঐক্যের ব্যাপারে আমরা কথা বলেছি।’
মৌলিক সংস্কার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকেই করতে হবে বলে জানায় এনসিপি। সংস্কার না করে নির্বাচন দিলে সেটি জুলাই বিপ্লবের উদ্দেশ্য পূরণ হবে না। এমন মন্তব্য করেন জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যের ভিত্তিতে জুলাই সনদ ও গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে, সংবিধান পরিবর্তনের কথা বলা হয়েছে।
জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘জনগণের কাছে আমাদের যে সংস্কারের কমিটমেন্ট এবং এর ধারাবাহিকতা সেটা বাস্তবায়নের জন্য আমরা জুলাই সনদে তা দ্রুত বাস্তবায়নের কথা বলেছি।’
তিনি বলেন, ‘সংবিধান সংস্কারের ব্যাপারে আমাদের অবস্থান যে, গণপরিষদের মাধ্যমেই সংবিধান সংস্কার বাস্তবায়ন করতে হবে, অন্যথায় পার্লামেন্টে সংবিধান সংস্কার টেকসই হবে না।’
বিএনপি-জামায়াত-এনসিপি-এবি পার্টিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের আলোচনায় উঠে আসে সংস্কার ও নির্বাচনের নানা বিষয়। বৈঠকে এবি পার্টির পক্ষ থেকে দাবি জানানো হয়েছে, জাতিসংঘে বিভিন্ন সংস্থায় চাকরি করছে শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলসহ তার পরিবারের ৩ সদস্য। তাদের সরিয়ে দিতে হবে।
এবি পার্টির যুগ্ম সদস্যসচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, ‘জাতিসংঘের ৩টা প্রতিষ্ঠানে এখনো পতিত স্বৈরাচার শেখ পরিবারের ৩জন সদস্য কাজ করছে, তাদের সরিয়ে দিতে হবে। গত ১৫ বছর যে পরিবারটা বাংলাদেশকে শোষণ করেছে, নির্যাতন করেছে এবং স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে এসব জায়গায় কাজ পেয়েছে, আমরা বলেছি সেই নিয়োগগুলোকে পুনর্বিবেচনা করার জন্য।’
তরুণ প্রতিনিধি দলের পক্ষ থেকে আওয়ামী লীগের জুলাই গণহত্যার বিবরণ দেয়া হয়। এসময় ভারত থেকে শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে বিচারের মুখোমুখি করা যায় কিনা সে ব্যাপারেও কথা হয় জাতিসংঘের মহাসচিবের সাথে।
জুলাই গণহত্যার বিচারের জন্য সব রকম সহায়তা দেয়ার আশ্বাস দেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।