ঢাকা ০১:৫৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ ২০২৫, ৩ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

কীভাবে ‘কামব্যাক’ করতে হয়, সেটাই দেখাল বার্সেলোনা

স্পোর্টস ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১১:৪৭:৩৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫
  • / ৩৫৫ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ম্যাচের ৭১ মিনিট পর্যন্ত ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে ছিল আতলেতিকো মাদ্রিদ। তখন মনে হয়েছিল, চলতি মৌসুমে দিয়েগো সিমিওনের দলের বিপক্ষে আগের দুইবারের দেখার মতো এ ম্যাচেও জয়হীন থাকতে হবে বার্সেলোনাকে।

কিন্তু সে ভাবনাকে পোক্ত হতে দেননি রবের্ত লেভানদফস্কি-লামিন ইয়ামালরা। শেষ কয়েক মিনিট যেন রূপকথার গল্প লিখল বার্সা। তাতে খাদের কিনারে থেকে দারুণ প্রত্যাবর্তনের গল্প লিখে শেষ পর্যন্ত ৪-২ ব্যবধানের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে হানসি ফ্লিকের দল। একইসঙ্গে পয়েন্ট টেবিলেও শীর্ষে উঠেছে কাতালান ক্লাবটি।

প্রথমার্ধের শেষ মুহূর্তে হুলিয়ান আলভারেস ও ৭০ মিনিটে আলেক্সান্দার সরলথের গোলে এগিয়ে গিয়েছিল আতলেতিকো। পরের গল্পটা শুধুই বার্সেলোনার। ৭২ মিনিটে লেভানদফস্কির গোলে ব্যবধান কমানোর ৬ মিনিট পর স্কোরলাইন ২-২ করেন ফেরান তোরেস। এরপর যোগ করা সময়ের দ্বিতীয় মিনিটে লামিন ইয়ামালের গোলে এগিয়ে (৩-২) যায় বার্সা। আর শেষ বাঁশি বাজার ঠিক আগ মুহূর্তে ফেরান তোরেসের দ্বিতীয় গোলে ৪-২ ব্যবধানের জয় নিশ্চিত হয় বার্সার।

এ জয়ে ২৭ ম্যাচে ৬০ পয়েন্ট নিয়ে লিগ টেবিলে সবার ওপরে উঠে এসেছে বার্সেলোনা। দ্বিতীয় স্থানে থাকা রেয়াল মাদ্রিদের পয়েন্টও সমান ৬০। তবে আনচেলত্তির দল গোল ব্যবধানে পিছিয়ে আছে। তাছাড়া মাদ্রিদ বার্সার চেয়ে একটা ম্যাচ বেশি খেলেছে। আর মাদ্রিদের সমান ২৮ ম্যাচ খেলে ৫৬ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে আছে আতলেতিকো।

চলতি মৌসুমে এর আগে আতলেতিকো মাদ্রিদের সঙ্গে দুবার মুখোমুখি হয়েছিল বার্সা। এর মধ্যে গত ডিসেম্বরে লা লিগার ম্যাচে শুরুতে এগিয়ে গিয়েও শেষ পর্যন্ত ২-১ ব্যবধানে হেরেছিল হানসি ফ্লিকের দল। আর গত মাসে কোপা দেল রের সেমিফাইনালের প্রথম লেগে বার্সা-মাদ্রিদ ম্যাচ আরেকদফা নাটক দেখেছিল।

ঘরের মাঠ স্তাদিও অলম্পিক লুইস কোম্পানিতে সেদিন শুরুর ৬ মিনিটেই ২-০ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়েছিল বার্সা। এরপর দারুণ প্রত্যাবর্তনের গল্প লিগে এক পর্যায়ে স্কোরলাইন ৪-২ করে বার্সা। কিন্তু শেষ দিকে আবার দুই গোল ফেরত দিয়ে ম্যাচ ৪-৪ সমতায় শেষ করে দিয়েগো সিমিওনের দল। অবশেষে তৃতীয়বারের দেখায় আতলেতিকোর বিপক্ষে জয়ের দেখা পেল বার্সা।

গতকাল রিয়াদ এয়ার মেত্রোপলিতানোতে ম্যাচের প্রথম বড় সুযোগটা পেয়েছিল বার্সা। তবে পঞ্চম মিনিটে ইয়মালের শট পোস্ট ঘেঁষে বেরিয়ে যায়। প্রথমার্ধের শেষ দিকে (৪৪ মিনিটে) বার্সাকে এগিয়ে দেওয়ার দারুণ সুযোগ পেয়েছিলেন লেভানদফস্কি। কিন্তু পোলিশ তারকার শট বারের সামান্য ওপর দিয়ে যায়।

বার্সা দারুণ দুটি সুযোগ হাতছাড়া করলেও একই ভুল করেনি আতলেতিকো। ৪৫তম মিনিটে বাঁ প্রান্ত থেকে পাস বাড়ান আতোয়ান গ্রিজমান। সেটা আবার প্রথম স্পর্শে আলভারেসের দিকে দেন জুলিয়ানো সিমিওনে। সেই পাসে দারুণভাবে ফিনিশিং দেন আলভারেস।

৬০ মিনিটে আলভারেসের বদলি হিসেবে মাঠে নামেন সরলথ। এর ১০ মিনিট পর ব্যবধান দ্বিগুণ করেন নরওয়েজিয়ান স্ট্রাইকার।

২-০ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ার পর ঘুম ভাঙে বার্সার। ৭২তম মিনিটে ইনিগো মার্তিনেসের ক্রস বুক দিয়ে দারুণ দক্ষতায় নামিয়ে আতলেতিকোর এক ডিফেন্ডারকে পরাস্ত করে বল জালে জড়ান লেভানদফস্কি। ৬ মিনিট পর রাফিনিয়ার দূর পাল্লার জোরালো শটে হেডে দিক বদলে দেন ফেরান তোরেস। সেটা আর ঠেকাতে পারেননি আতলেতিকো গোলকিপার। স্কোরলাইন তখন ২-২।

এরপর যোগ করা সময়ের দ্বিতীয় মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে দারুণ এক শট নেন ইয়ামাল। স্প্যানিশ তরুণের শট আতলেতিকোর এক ডিফেন্ডারের গায়ে কিছুটা দিক বদলে আশ্রয় নেয় জালে। আর যোগ করা সময়ের অষ্টম মিনিটে আতলেতিকোর এক ডিফেন্ডারের ভুলের সুবাদে বল পেয়ে ডি বক্সের ঠিক বাইরে থেকে মাটি কামড়ানো শটে ব্যক্তিগত দ্বিতীয় গোলটি করেন ফেরান তোরেস।

দুর্দান্ত এ জয়ের পর বার্সা কোচ ফ্লিক বলেছেন, ‘(আতলেতিকোর বিপক্ষে) তৃতীয় ম্যাচ শেষে জয়টা দরকার ছিল। খেলার মান খুবই ভালো ছিল আজ। আমার মনে হয়, ভক্ত সমর্থক থেকে শুরু করে টিভির সামনে যারা ছিল, সবার কাছেই ম্যাচটা ছিল দুর্দান্ত।’

নিউজটি শেয়ার করুন

কীভাবে ‘কামব্যাক’ করতে হয়, সেটাই দেখাল বার্সেলোনা

আপডেট সময় : ১১:৪৭:৩৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫

ম্যাচের ৭১ মিনিট পর্যন্ত ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে ছিল আতলেতিকো মাদ্রিদ। তখন মনে হয়েছিল, চলতি মৌসুমে দিয়েগো সিমিওনের দলের বিপক্ষে আগের দুইবারের দেখার মতো এ ম্যাচেও জয়হীন থাকতে হবে বার্সেলোনাকে।

কিন্তু সে ভাবনাকে পোক্ত হতে দেননি রবের্ত লেভানদফস্কি-লামিন ইয়ামালরা। শেষ কয়েক মিনিট যেন রূপকথার গল্প লিখল বার্সা। তাতে খাদের কিনারে থেকে দারুণ প্রত্যাবর্তনের গল্প লিখে শেষ পর্যন্ত ৪-২ ব্যবধানের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে হানসি ফ্লিকের দল। একইসঙ্গে পয়েন্ট টেবিলেও শীর্ষে উঠেছে কাতালান ক্লাবটি।

প্রথমার্ধের শেষ মুহূর্তে হুলিয়ান আলভারেস ও ৭০ মিনিটে আলেক্সান্দার সরলথের গোলে এগিয়ে গিয়েছিল আতলেতিকো। পরের গল্পটা শুধুই বার্সেলোনার। ৭২ মিনিটে লেভানদফস্কির গোলে ব্যবধান কমানোর ৬ মিনিট পর স্কোরলাইন ২-২ করেন ফেরান তোরেস। এরপর যোগ করা সময়ের দ্বিতীয় মিনিটে লামিন ইয়ামালের গোলে এগিয়ে (৩-২) যায় বার্সা। আর শেষ বাঁশি বাজার ঠিক আগ মুহূর্তে ফেরান তোরেসের দ্বিতীয় গোলে ৪-২ ব্যবধানের জয় নিশ্চিত হয় বার্সার।

এ জয়ে ২৭ ম্যাচে ৬০ পয়েন্ট নিয়ে লিগ টেবিলে সবার ওপরে উঠে এসেছে বার্সেলোনা। দ্বিতীয় স্থানে থাকা রেয়াল মাদ্রিদের পয়েন্টও সমান ৬০। তবে আনচেলত্তির দল গোল ব্যবধানে পিছিয়ে আছে। তাছাড়া মাদ্রিদ বার্সার চেয়ে একটা ম্যাচ বেশি খেলেছে। আর মাদ্রিদের সমান ২৮ ম্যাচ খেলে ৫৬ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে আছে আতলেতিকো।

চলতি মৌসুমে এর আগে আতলেতিকো মাদ্রিদের সঙ্গে দুবার মুখোমুখি হয়েছিল বার্সা। এর মধ্যে গত ডিসেম্বরে লা লিগার ম্যাচে শুরুতে এগিয়ে গিয়েও শেষ পর্যন্ত ২-১ ব্যবধানে হেরেছিল হানসি ফ্লিকের দল। আর গত মাসে কোপা দেল রের সেমিফাইনালের প্রথম লেগে বার্সা-মাদ্রিদ ম্যাচ আরেকদফা নাটক দেখেছিল।

ঘরের মাঠ স্তাদিও অলম্পিক লুইস কোম্পানিতে সেদিন শুরুর ৬ মিনিটেই ২-০ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়েছিল বার্সা। এরপর দারুণ প্রত্যাবর্তনের গল্প লিগে এক পর্যায়ে স্কোরলাইন ৪-২ করে বার্সা। কিন্তু শেষ দিকে আবার দুই গোল ফেরত দিয়ে ম্যাচ ৪-৪ সমতায় শেষ করে দিয়েগো সিমিওনের দল। অবশেষে তৃতীয়বারের দেখায় আতলেতিকোর বিপক্ষে জয়ের দেখা পেল বার্সা।

গতকাল রিয়াদ এয়ার মেত্রোপলিতানোতে ম্যাচের প্রথম বড় সুযোগটা পেয়েছিল বার্সা। তবে পঞ্চম মিনিটে ইয়মালের শট পোস্ট ঘেঁষে বেরিয়ে যায়। প্রথমার্ধের শেষ দিকে (৪৪ মিনিটে) বার্সাকে এগিয়ে দেওয়ার দারুণ সুযোগ পেয়েছিলেন লেভানদফস্কি। কিন্তু পোলিশ তারকার শট বারের সামান্য ওপর দিয়ে যায়।

বার্সা দারুণ দুটি সুযোগ হাতছাড়া করলেও একই ভুল করেনি আতলেতিকো। ৪৫তম মিনিটে বাঁ প্রান্ত থেকে পাস বাড়ান আতোয়ান গ্রিজমান। সেটা আবার প্রথম স্পর্শে আলভারেসের দিকে দেন জুলিয়ানো সিমিওনে। সেই পাসে দারুণভাবে ফিনিশিং দেন আলভারেস।

৬০ মিনিটে আলভারেসের বদলি হিসেবে মাঠে নামেন সরলথ। এর ১০ মিনিট পর ব্যবধান দ্বিগুণ করেন নরওয়েজিয়ান স্ট্রাইকার।

২-০ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ার পর ঘুম ভাঙে বার্সার। ৭২তম মিনিটে ইনিগো মার্তিনেসের ক্রস বুক দিয়ে দারুণ দক্ষতায় নামিয়ে আতলেতিকোর এক ডিফেন্ডারকে পরাস্ত করে বল জালে জড়ান লেভানদফস্কি। ৬ মিনিট পর রাফিনিয়ার দূর পাল্লার জোরালো শটে হেডে দিক বদলে দেন ফেরান তোরেস। সেটা আর ঠেকাতে পারেননি আতলেতিকো গোলকিপার। স্কোরলাইন তখন ২-২।

এরপর যোগ করা সময়ের দ্বিতীয় মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে দারুণ এক শট নেন ইয়ামাল। স্প্যানিশ তরুণের শট আতলেতিকোর এক ডিফেন্ডারের গায়ে কিছুটা দিক বদলে আশ্রয় নেয় জালে। আর যোগ করা সময়ের অষ্টম মিনিটে আতলেতিকোর এক ডিফেন্ডারের ভুলের সুবাদে বল পেয়ে ডি বক্সের ঠিক বাইরে থেকে মাটি কামড়ানো শটে ব্যক্তিগত দ্বিতীয় গোলটি করেন ফেরান তোরেস।

দুর্দান্ত এ জয়ের পর বার্সা কোচ ফ্লিক বলেছেন, ‘(আতলেতিকোর বিপক্ষে) তৃতীয় ম্যাচ শেষে জয়টা দরকার ছিল। খেলার মান খুবই ভালো ছিল আজ। আমার মনে হয়, ভক্ত সমর্থক থেকে শুরু করে টিভির সামনে যারা ছিল, সবার কাছেই ম্যাচটা ছিল দুর্দান্ত।’