ঢাকা ০৮:২৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫, ৩ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

নৌপথে ঈদযাত্রা: প্রস্তুত হচ্ছে ১৭৫ লঞ্চ, বাড়ছে নিরাপত্তা

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১২:৪২:১৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫
  • / ৩৪৫ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

নৌপথে ঈদে যাত্রীদের বাড়ি পৌঁছে দিতে প্রস্তুত করা হচ্ছে ১৭৫টি লঞ্চ। নিরাপত্তায় নদীতে পুলিশি টহল বাড়ানোর পাশাপাশি সব নদীবন্দরে মোতায়েন করা হবে অতিরিক্ত সদস্য। এদিকে, নৌপথে আবারও যাত্রী ফেরাতে সদরঘাটে মেট্রোরেল স্টেশন করার দাবি করেছেন লঞ্চ মালিকরা।

যদিও এসব লঞ্চ মেরামত শ্রমিকদের নেই আগের মতো তাড়াহুড়া। যেখানে আগে এক একজন শ্রমিক ঈদের আগে ৮-৯ টা লঞ্চ মেরামতের তাড়া থাকতো, সেখানে এখন কেবল কাজ করছেন ২ থেকে ৩ টা। এমনকি আগের মতো মালিকরাও খুব একটা ভালোভাবে করাচ্ছেন না মেরামত। এতে করে থেকেই যাচ্ছে ঝুঁকিও।

২০২২ সালে পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর ধীরে ধীরে কমতে থাকে মানুষের নৌ পথের যাত্রা। বিশেষ করে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ। যারা বেশিরভাগই ছুটতেন লঞ্চে। তারাও ক্রমশই ঝুঁকতে থাকে সড়ক পথে।

শেষ তিন বছরের বন্ধ হয়ে গেছে বহু নৌ রুট। তবে, ঈদ বা যেকোনো উৎসবে এলে যাত্রী বাড়ে কয়েকগুণ। ব্যস্ত হয়ে পড়েন লঞ্চ কর্তৃপক্ষ। তবে তারা বলছেন, লঞ্চ খাতে নেই আগের মতো ব্যবসা। উল্টো অনেক মালিকই ভর্তুকি দিয়ে চালাচ্ছেন লঞ্চ। নৌপথে যাত্রী ধরে রাখাটাই এখন মূল লক্ষ্য বলেও জানান মালিকরা।

এমভি পূবালী জাহাজের মালিক আলী আজগর বলেন, ‘সাধারণ ডেক যাত্রী যারা তারা যেদিন আসে সেদিনই উঠে। যারা কেবিনের যাত্রী আগে এক মাস আগে থেকেই বুকিং দিয়ে রাখতো। তবে এবার এখন পর্যন্ত আমাদের কাছে কেউ কেবিন চাইনি।’

লঞ্চ মালিকরা বলেছেন, পদ্মা সেতুর পাশাপাশি লঞ্চে যাত্রী কমার আরেক কারণ হলো গুলিস্তান থেকে সদরঘাট পর্যন্ত রাস্তায় অবৈধ পার্কিং ও দীর্ঘ যানজট। তারা বলছেন, সদরঘাটের মেট্রোরেলের স্টেশন করা গেলে এ খাতে হারানো যৌবন ফিরে আসতো।

যাত্রী কল্যাণ সমিতির তথ্যমতে, এবারের ঈদে প্রায় দেড় কোটি মানুষ বাড়ি ফিরবেন। যার মধ্যে ১৭ শতাংশ মানুষ যাবেন নৌ পথে। বিআইডব্লিউটিএ বলছে, এবারের ঈদে যাত্রীদের বাড়ি পৌঁছে দিতে প্রস্তুত আছে ১৭৫টি লঞ্চ। নৌ পথের নিরাপত্তায় সব নৌ বন্দরেই মোতায়েন করা হবে অতিরিক্ত আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য। বাড়ানো হবে কোস্টগার্ড ও নৌ পুলিশ টহল। ঈদ ঘিরে সব নদী বন্দরে শুধু নৌ পুলিশেরই সদস্য থাকবে সাড়ে ৯০০।

নৌ পুলিশ সদর দপ্তরের ডিআইজি মিজানুর রহমান বলেন, ‘এই বছর আমাদের যৌথ টহল থাকবে। নৌপুলিশ, কোস্টগার্ড, নৌবাহিনী সদস্যরা মিলে টহল জোরদার করবে।’

ঈদের সময় কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ২৩ মার্চ থেকে ৩০ মার্চ পর্যন্ত সদরঘাট বিআইডব্লিউটিএ অধীনে দুইজন মেজিস্ট্রেট মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করবেন। একইসাথে কোনো ফিটনেসহীন লঞ্চ যাতে না চলতে পারে সেবিষয়েও বিশেষ নজর থাকবে বলে জানান বিআইডব্লিউটিএ এর কর্মকর্তা।

ঢাকা নদী বন্দরের যুগ্ম পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘কোনো যদি ত্রুটিযুক্ত নৌযান থাকে সেক্ষেত্রে আমরা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিবো।’ এবার ঈদে নির্বিঘ্নে লঞ্চ চলাচলের জন্য ২৫ মার্চ থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত সব ধরনের বাল্কহেড বন্ধ রাখা হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

নৌপথে ঈদযাত্রা: প্রস্তুত হচ্ছে ১৭৫ লঞ্চ, বাড়ছে নিরাপত্তা

আপডেট সময় : ১২:৪২:১৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫

নৌপথে ঈদে যাত্রীদের বাড়ি পৌঁছে দিতে প্রস্তুত করা হচ্ছে ১৭৫টি লঞ্চ। নিরাপত্তায় নদীতে পুলিশি টহল বাড়ানোর পাশাপাশি সব নদীবন্দরে মোতায়েন করা হবে অতিরিক্ত সদস্য। এদিকে, নৌপথে আবারও যাত্রী ফেরাতে সদরঘাটে মেট্রোরেল স্টেশন করার দাবি করেছেন লঞ্চ মালিকরা।

যদিও এসব লঞ্চ মেরামত শ্রমিকদের নেই আগের মতো তাড়াহুড়া। যেখানে আগে এক একজন শ্রমিক ঈদের আগে ৮-৯ টা লঞ্চ মেরামতের তাড়া থাকতো, সেখানে এখন কেবল কাজ করছেন ২ থেকে ৩ টা। এমনকি আগের মতো মালিকরাও খুব একটা ভালোভাবে করাচ্ছেন না মেরামত। এতে করে থেকেই যাচ্ছে ঝুঁকিও।

২০২২ সালে পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর ধীরে ধীরে কমতে থাকে মানুষের নৌ পথের যাত্রা। বিশেষ করে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ। যারা বেশিরভাগই ছুটতেন লঞ্চে। তারাও ক্রমশই ঝুঁকতে থাকে সড়ক পথে।

শেষ তিন বছরের বন্ধ হয়ে গেছে বহু নৌ রুট। তবে, ঈদ বা যেকোনো উৎসবে এলে যাত্রী বাড়ে কয়েকগুণ। ব্যস্ত হয়ে পড়েন লঞ্চ কর্তৃপক্ষ। তবে তারা বলছেন, লঞ্চ খাতে নেই আগের মতো ব্যবসা। উল্টো অনেক মালিকই ভর্তুকি দিয়ে চালাচ্ছেন লঞ্চ। নৌপথে যাত্রী ধরে রাখাটাই এখন মূল লক্ষ্য বলেও জানান মালিকরা।

এমভি পূবালী জাহাজের মালিক আলী আজগর বলেন, ‘সাধারণ ডেক যাত্রী যারা তারা যেদিন আসে সেদিনই উঠে। যারা কেবিনের যাত্রী আগে এক মাস আগে থেকেই বুকিং দিয়ে রাখতো। তবে এবার এখন পর্যন্ত আমাদের কাছে কেউ কেবিন চাইনি।’

লঞ্চ মালিকরা বলেছেন, পদ্মা সেতুর পাশাপাশি লঞ্চে যাত্রী কমার আরেক কারণ হলো গুলিস্তান থেকে সদরঘাট পর্যন্ত রাস্তায় অবৈধ পার্কিং ও দীর্ঘ যানজট। তারা বলছেন, সদরঘাটের মেট্রোরেলের স্টেশন করা গেলে এ খাতে হারানো যৌবন ফিরে আসতো।

যাত্রী কল্যাণ সমিতির তথ্যমতে, এবারের ঈদে প্রায় দেড় কোটি মানুষ বাড়ি ফিরবেন। যার মধ্যে ১৭ শতাংশ মানুষ যাবেন নৌ পথে। বিআইডব্লিউটিএ বলছে, এবারের ঈদে যাত্রীদের বাড়ি পৌঁছে দিতে প্রস্তুত আছে ১৭৫টি লঞ্চ। নৌ পথের নিরাপত্তায় সব নৌ বন্দরেই মোতায়েন করা হবে অতিরিক্ত আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য। বাড়ানো হবে কোস্টগার্ড ও নৌ পুলিশ টহল। ঈদ ঘিরে সব নদী বন্দরে শুধু নৌ পুলিশেরই সদস্য থাকবে সাড়ে ৯০০।

নৌ পুলিশ সদর দপ্তরের ডিআইজি মিজানুর রহমান বলেন, ‘এই বছর আমাদের যৌথ টহল থাকবে। নৌপুলিশ, কোস্টগার্ড, নৌবাহিনী সদস্যরা মিলে টহল জোরদার করবে।’

ঈদের সময় কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ২৩ মার্চ থেকে ৩০ মার্চ পর্যন্ত সদরঘাট বিআইডব্লিউটিএ অধীনে দুইজন মেজিস্ট্রেট মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করবেন। একইসাথে কোনো ফিটনেসহীন লঞ্চ যাতে না চলতে পারে সেবিষয়েও বিশেষ নজর থাকবে বলে জানান বিআইডব্লিউটিএ এর কর্মকর্তা।

ঢাকা নদী বন্দরের যুগ্ম পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘কোনো যদি ত্রুটিযুক্ত নৌযান থাকে সেক্ষেত্রে আমরা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিবো।’ এবার ঈদে নির্বিঘ্নে লঞ্চ চলাচলের জন্য ২৫ মার্চ থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত সব ধরনের বাল্কহেড বন্ধ রাখা হবে।