জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের বাংলাদেশ সফর রোহিঙ্গা সংকট ও দেশের সংস্কারে ভূমিকা রাখতে পারে। বিশ্লেষকরা বলছেন, বাংলাদেশের উদ্যোগ বিশ্বের নজরে আনতে পারেন জাতিসংঘ মহাসচিব। তবে এ দুটি বিষয়ে জাতিসংঘের সরাসরি কিছু করার নেই। বিশেষজ্ঞদের মতে, জাতিসংঘ নয়, সংকটের সমাধান করতে হবে বাংলাদেশকেই।
২০১৮ সালের পর দ্বিতীয়বার বাংলাদেশ সফর করলেন জাতিসংঘ মহাসচিব গুতেরেস। পরিদর্শন করেছেন কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবির। সংকট সমাধানে মিয়ানমারের ওপর চাপ বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন।
রোহিঙ্গাদের জন্য আর্থিক সহায়তা কমিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। যদি নতুন করে বরাদ্দ মেলে তবেই গুতেরেসের বাংলাদেশ সফর স্বার্থক হবে বলে মনে করেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ। আর সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ুন কবির বলছেন, জাতিসংঘ পাশে থাকলেও রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান করতে হবে বাংলাদেশকেই।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, ‘জাতিসংঘ বা সেক্রেটারি জেনারেল এটা সমাধান করতে পারবে না। এটা না বোঝার কারণ নেই। তার সেই ক্ষমতাও নেই। আমরা জানি ইউক্রেনের যুদ্ধ বন্ধে সৌদিতে আলোচনা শুরু হয়েছে। যেখানে রাশিয়া, ইউক্রেন ও আমেরিকার প্রতিনিধি ছিল। এ অবস্থায় দেখে বোঝাই যাচ্ছে, জাতিসংঘ এর আশেপাশেও নেই। আমার মনে হয় না রোহিঙ্গা সংকট যেটা আছে সেটা জাতিসংঘ সমাধান করতে পারবে।’
সাবেক রাষ্ট্রদূতএম হুমায়ুন কবির বলেন, ‘রোহিঙ্গা সমস্যার যদি সমাধান করতে হয় তারা আমাদের সহযোগী হতে পারে। কিন্তু সমাধান আমাদেরই করতে হবে। সফলতা নির্ভর করে অনেক ফ্যাক্টের ওপর। দেখতে হবে আমরা কতটুকু উদ্যোগী ও সৃজনশীল হতে পারি।’
এবারের বাংলাদেশ সফরে এসে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গেও বৈঠক করেছেন গুতেরেস। দেশের চলমান সংস্কারে পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এক্ষেত্রে জাতিসংঘের কিছু করার সুযোগ নেই।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, ‘বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রশ্নেও জাতিসংঘ কিছু করতে পারে বলে আমি মনে করি না। এটা বাংলাদেশের জনগনের ব্যাপার। আগেও জাতিসংঘের লোক পাঠানো হয়েছিলো কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। জাতিসংঘের ওপর নির্ভর না করে দেশের জনগনের ওপর নির্ভর করতে হবে।’
সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ুন কবির বলেন, ‘মহাসচিবের সফরের মধ্য দিয়ে সম্ভাবনা অনেকগুলো তৈরি হয়েছে। কিন্তু সেগুলো কাজে লাগাতে হবে আমাদের। কারণ এই যে সংস্কার বলছি, উত্তরণ বলছি গণতন্ত্রের এটা আমাদের কাজ, মহাসচিবের কাজ না। আমরা করবো তারা আমাদের সহায়তা করবে।’