ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় আবারও নতুন করে হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল। আজ মঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়া এই হামলায় এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা ৩০০ ছাড়িয়েছে। আহত হয়েছে অসংখ্য ফিলিস্তিনি।
গাজার সরকারি প্রচারমাধ্যমের বরাত দিয়ে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জারিরা জানিয়েছে, হতাহতের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। কারণ হামলা চলছে পুরো গাজাজুড়ে। হতাহতের মধ্যে সবচেয়ে বেশি রয়েছেন নারী ও শিশু।
কেন এই হামলা
গত ১৯ জানুয়ারি থেকে ছয় সপ্তাহের যুদ্ধবরিতি চলছিল গাজায়। এই যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়ানোর জন্য কয়েক সপ্তাহ ধরে আলোচনা হলেও শেষ পর্যন্ত যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়ানো যায়নি। যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে হামাস।
হামাস জানিয়েছে, ইসরায়েল যুদ্ধবিরতির চুক্তি ভঙ্গ করেছে, যার ফলে গাজায় এখনো বন্দি থাকা ৫৯ জন জিম্মির ভাগ্য অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
অন্যদিকে ইসরায়েরি সেনাবাহিনীর একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা রয়টার্সকে বলেছেন, যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা ব্যর্থ হওয়ার কারণে আবারও গাজায় অভিযান শুরু করা হয়েছে। যতদিন প্রয়োজন, গাজায় হামলা চলবে এবং তা শুধু বিমান হামলায় সীমাবদ্ধ থাকবে না। আইডিএফ প্রস্তুত আছে এবং সমগ্র অঞ্চলজুড়ে তাদের উপস্থিতি নিশ্চিত করা হয়েছে।
সামরিক কর্মকর্তারা জানান, হামাসের নেতৃবৃন্দ ও অবকাঠামো লক্ষ্য করে হামলা চালানো হচ্ছে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, তিনি হামাসের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন, কারণ তারা ইসরায়েল থেকে নেওয়া বন্দীদের মুক্তি দিতে বা যুদ্ধবিরতি বাড়ানোর প্রস্তাবে রাজি হয়নি।
গাজা থেকে আল জাজিরার আরবি সংবাদদাতা জানিয়েছেন, ইসরায়েলি ট্যাঙ্কগুলো খান ইউনিসের আবাসান শহরের পূর্বাঞ্চলে গোলাবর্ষণ করছে, একই সাথে তীব্র গোলাগুলির ঘটনা ঘটছে।
আল জাজিরার লাইভে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার সকালে আধা ঘণ্টায় গাজায় ৩৫টিরও বেশি ইসরায়েলি বিমান হামলা হয়েছে। অ্যাম্বুলেন্স এবং বেসামরিক প্রতিরক্ষা কর্মীরা মৃত ও আহতদের সরিয়ে নিতে হিমশিম খাচ্ছেন।
২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি আগ্রাসনে গাজায় নিহতের সংখ্যা সাড়ে ৪৮ হাজার ছাড়িয়েছে। আহতের সংখ্যা ১ লাখ ১২ হাজারের বেশি। ওই হামলায় বিরতি আসে গত ১৯ জানুয়ারি। এরপর গাজায় ফিরতে শুরু করেন বাস্তুচ্যুতরা। এ অবস্থাতেই এবার হঠাৎ করে ফের হামলা শুরু করল ইসরায়েল।