ঢাকা ০৮:১৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫, ২ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी
ব্রেকিং নিউজ ::
ইসরায়েল ও ইরানের সংঘাত: বাংলাদেশিদের জন্য হটলাইন সেবা চালু করা হয়েছে দুতাবাস। ইরানে বসবাসরত বাংলাদেশি নাগরিকদের + ৯৮৯908577368 ও + ৯৮৯১22065745 নম্বরে (হোয়াটসঅ্যাপ সহ) যোগাযোগ করতে বলেছে দূতাবাস কর্তৃপক্ষ।

কী ঘটতে চলেছে; কী আছে গাজার ভাগ্যে?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১১:৪১:০২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৯ মার্চ ২০২৫
  • / ৩৮৩ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় এক রাতেই ইসরায়েলের চালানো হামলায় চার শতাধিক মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। আরও পাঁচ শতাধিক আহত হয়েছেন। এছাড়া হামলায় ধসে পড়া ভবনের নিচে বহু মানুষ আটকে আছেন। এত কিছুর পরও ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বললেন, এটা তো শুরু মাত্র।’

নেতানিয়াহুর এমন সতর্ক বার্তা সত্যিই গাজাবাসীর জন্য বড় ভয়ের। এখন প্রশ্ন জেগেছে— আসলে নতুন করে কী ঘটতে চলেছে; কী আছে গাজার ভাগ্যে? এদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আগে থেকেই গাজা দখলের হুমকি দিয়ে রেখেছেন। সম্প্রতি ট্রাম্প বলেন, ‘ইসরায়েলই গাজাকে আমেরিকার হাতে তুলে দেবে।’ তবে কি নেতানিয়াহু ট্রাম্পের সেই ইচ্ছে পূরণে নেমেছেন?

বুধবার (১৯ মার্চ) এক প্রতিবেদনে বার্তাসংস্থা আনাদোলু বলছে, মঙ্গলবার ভোররাতে আকস্মিকভাবে গাজায় নির্বিচারে বোমা হামলা চালানো শুরু করে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। পবিত্র রমজান মাস হওয়ায় অনেক লোক সেহরি খাচ্ছিলেন, তখনই গাজায় হামলা ও বিস্ফোরণ শুরু হয়। বর্বর এই হামলায় কমপক্ষে ৪০৪ জন নিহত, ৫৬২ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়। গত ১৯ জানুয়ারি যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার পর গাজায় এটিই সবচেয়ে বড় বিমান হামলা।

হামলার পর সামনে আসতে থাকা একের পর এক ছবিতে দেখা যায়, নিহতদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক, যাদের মধ্যে নারী ও শিশুরাও রয়েছে। ভোররাতে বাড়িতে বোমা হামলা চালিয়ে তাদেরকে হত্যা করা হয়েছে।

পরে ইসরায়েলের সরকারি সম্প্রচারমাধ্যমে সম্প্রচারিত এক টেলিভিশন ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু দাবি করেন, ‘আমরা যুদ্ধবিরতি কয়েক সপ্তাহের জন্য বাড়িয়েছিলাম, যদিও বিনিময়ে আমরা জিম্মিদের ফেরত পাইনি।’

তিনি আরও দাবি করেন, ‘আমরা দোহায় প্রতিনিধিদল পাঠিয়েছিলাম এবং মার্কিন দূত স্টিভ উইটকফের প্রস্তাবও গ্রহণ করেছি, কিন্তু হামাস সকল প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে।’

ইসরায়েলি গণমাধ্যম গত বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, উইটকফ উভয় পক্ষের কাছে একটি হালনাগাদ প্রস্তাব পেশ করেছিলেন, যেখানে ৫০ দিনের যুদ্ধবিরতির জন্য পাঁচজন ইসরায়েলি বন্দির মুক্তি, ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি, মানবিক সহায়তার প্রবেশাধিকার এবং তিন ধাপের যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপে আলোচনার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল।

এরপর হামাস শুক্রবার জানায়, তারা মধ্যস্থতাকারীদের প্রস্তাব গ্রহণ করেছে। একইসঙ্গে গাজা যুদ্ধবিরতি এবং বন্দি বিনিময়ের জন্য দ্বিতীয় ধাপের আলোচনা পুনরায় শুরু করার অংশ হিসেবে একজন ইসরায়েলি-আমেরিকান সৈন্যের মুক্তি এবং চার দ্বৈত নাগরিকের মৃতদেহ ফেরত দিতে সম্মত হয়েছে।

কিন্তু নেতানিয়াহু পাল্টা বলেন, ‘আমি হামাসকে সতর্ক করে দিয়েছিলাম যে যদি তারা আমাদের বন্দিদের মুক্তি না দেয়, তাহলে আমরা আবার যুদ্ধ শুরু করব — এবং আমরা তা করেছি।’

ইসরায়েল অনুমান করছে, গাজায় ৫৯ জন ইসরায়েলিকে আটক করে রাখা হয়েছে, যাদের মধ্যে ২৪ জন এখনও জীবিত। বিপরীতে ৯ হাজার ৫০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি ইসরায়েলি কারাগারে বন্দি রয়েছেন। যাদের অনেকেই নির্যাতন, বঞ্চনা এবং চিকিৎসা অবহেলার শিকার হয়েছেন এবং অনেকেই মারা গেছেন বলে ফিলিস্তিনি ও ইসরায়েলি মানবাধিকার রিপোর্টে উঠে এসেছে।

মঙ্গলবার নেতানিয়াহু বলেন, ‘এটি (নতুন করে হামলা) কেবল শুরু। এখন থেকে আমরা হামাসের বিরুদ্ধে ক্রমবর্ধমান তীব্রতার সাথে পদক্ষেপ নেব, কেবল আক্রমণের মুখে আলোচনা করব এবং আমরা আমাদের সমস্ত যুদ্ধ লক্ষ্য অর্জনের জন্য লড়াই চালিয়ে যাব।’

আনাদোলু বলছে, চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। তিন দফার এই যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপ গত ১ মার্চ শেষ হয়ে যায়। তবে নেতানিয়াহু দ্বিতীয় ধাপে প্রবেশ করতে অস্বীকৃতি জানান।

নিউজটি শেয়ার করুন

কী ঘটতে চলেছে; কী আছে গাজার ভাগ্যে?

আপডেট সময় : ১১:৪১:০২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৯ মার্চ ২০২৫

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় এক রাতেই ইসরায়েলের চালানো হামলায় চার শতাধিক মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। আরও পাঁচ শতাধিক আহত হয়েছেন। এছাড়া হামলায় ধসে পড়া ভবনের নিচে বহু মানুষ আটকে আছেন। এত কিছুর পরও ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বললেন, এটা তো শুরু মাত্র।’

নেতানিয়াহুর এমন সতর্ক বার্তা সত্যিই গাজাবাসীর জন্য বড় ভয়ের। এখন প্রশ্ন জেগেছে— আসলে নতুন করে কী ঘটতে চলেছে; কী আছে গাজার ভাগ্যে? এদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আগে থেকেই গাজা দখলের হুমকি দিয়ে রেখেছেন। সম্প্রতি ট্রাম্প বলেন, ‘ইসরায়েলই গাজাকে আমেরিকার হাতে তুলে দেবে।’ তবে কি নেতানিয়াহু ট্রাম্পের সেই ইচ্ছে পূরণে নেমেছেন?

বুধবার (১৯ মার্চ) এক প্রতিবেদনে বার্তাসংস্থা আনাদোলু বলছে, মঙ্গলবার ভোররাতে আকস্মিকভাবে গাজায় নির্বিচারে বোমা হামলা চালানো শুরু করে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। পবিত্র রমজান মাস হওয়ায় অনেক লোক সেহরি খাচ্ছিলেন, তখনই গাজায় হামলা ও বিস্ফোরণ শুরু হয়। বর্বর এই হামলায় কমপক্ষে ৪০৪ জন নিহত, ৫৬২ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়। গত ১৯ জানুয়ারি যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার পর গাজায় এটিই সবচেয়ে বড় বিমান হামলা।

হামলার পর সামনে আসতে থাকা একের পর এক ছবিতে দেখা যায়, নিহতদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক, যাদের মধ্যে নারী ও শিশুরাও রয়েছে। ভোররাতে বাড়িতে বোমা হামলা চালিয়ে তাদেরকে হত্যা করা হয়েছে।

পরে ইসরায়েলের সরকারি সম্প্রচারমাধ্যমে সম্প্রচারিত এক টেলিভিশন ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু দাবি করেন, ‘আমরা যুদ্ধবিরতি কয়েক সপ্তাহের জন্য বাড়িয়েছিলাম, যদিও বিনিময়ে আমরা জিম্মিদের ফেরত পাইনি।’

তিনি আরও দাবি করেন, ‘আমরা দোহায় প্রতিনিধিদল পাঠিয়েছিলাম এবং মার্কিন দূত স্টিভ উইটকফের প্রস্তাবও গ্রহণ করেছি, কিন্তু হামাস সকল প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে।’

ইসরায়েলি গণমাধ্যম গত বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, উইটকফ উভয় পক্ষের কাছে একটি হালনাগাদ প্রস্তাব পেশ করেছিলেন, যেখানে ৫০ দিনের যুদ্ধবিরতির জন্য পাঁচজন ইসরায়েলি বন্দির মুক্তি, ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি, মানবিক সহায়তার প্রবেশাধিকার এবং তিন ধাপের যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপে আলোচনার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল।

এরপর হামাস শুক্রবার জানায়, তারা মধ্যস্থতাকারীদের প্রস্তাব গ্রহণ করেছে। একইসঙ্গে গাজা যুদ্ধবিরতি এবং বন্দি বিনিময়ের জন্য দ্বিতীয় ধাপের আলোচনা পুনরায় শুরু করার অংশ হিসেবে একজন ইসরায়েলি-আমেরিকান সৈন্যের মুক্তি এবং চার দ্বৈত নাগরিকের মৃতদেহ ফেরত দিতে সম্মত হয়েছে।

কিন্তু নেতানিয়াহু পাল্টা বলেন, ‘আমি হামাসকে সতর্ক করে দিয়েছিলাম যে যদি তারা আমাদের বন্দিদের মুক্তি না দেয়, তাহলে আমরা আবার যুদ্ধ শুরু করব — এবং আমরা তা করেছি।’

ইসরায়েল অনুমান করছে, গাজায় ৫৯ জন ইসরায়েলিকে আটক করে রাখা হয়েছে, যাদের মধ্যে ২৪ জন এখনও জীবিত। বিপরীতে ৯ হাজার ৫০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি ইসরায়েলি কারাগারে বন্দি রয়েছেন। যাদের অনেকেই নির্যাতন, বঞ্চনা এবং চিকিৎসা অবহেলার শিকার হয়েছেন এবং অনেকেই মারা গেছেন বলে ফিলিস্তিনি ও ইসরায়েলি মানবাধিকার রিপোর্টে উঠে এসেছে।

মঙ্গলবার নেতানিয়াহু বলেন, ‘এটি (নতুন করে হামলা) কেবল শুরু। এখন থেকে আমরা হামাসের বিরুদ্ধে ক্রমবর্ধমান তীব্রতার সাথে পদক্ষেপ নেব, কেবল আক্রমণের মুখে আলোচনা করব এবং আমরা আমাদের সমস্ত যুদ্ধ লক্ষ্য অর্জনের জন্য লড়াই চালিয়ে যাব।’

আনাদোলু বলছে, চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। তিন দফার এই যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপ গত ১ মার্চ শেষ হয়ে যায়। তবে নেতানিয়াহু দ্বিতীয় ধাপে প্রবেশ করতে অস্বীকৃতি জানান।