ঢাকা ০৮:৪৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২১ মার্চ ২০২৫, ৭ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

গাজায় এবার স্থল অভিযান চালাচ্ছে ইসরায়েল, আরও ৭০ প্রাণহানি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০২:১৯:৪৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ ২০২৫
  • / ৩৪৮ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েলি বাহিনী। ব্যাপক বিমান হামলার পর এখন চলছে স্থল অভিযান। যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভাঙার পর টানা হামলায় মঙ্গলবার থেকে এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছে ৪৩০ জনের বেশি। বুধবার এক দিনে ৭০ জনের বেশি হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার বিবিসি ও আল জাজিরা এসব তথ্য জানিয়েছে। প্রতিবেদন বলছে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী উত্তর গাজায় গোলাবর্ষণ শুরু করেছে। এতে তাৎক্ষণিকভাবে প্রাণহানির সংখ্যা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

ইসরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, সেনারা এখন গাজাকে উত্তর ও দক্ষিণে বিভক্তকারী নেটজারিম করিডোরে চলে গেছে। তারা গাজায় উত্তর ও দক্ষিণের মধ্যে আংশিক বাফার তৈরির জন্য স্থল অভিযান শুরু করেছে।

গাজার বাসিন্দাদের স্থল সীমান্তের তিন পাশের বিশাল এলাকা ছেড়ে যাওয়ার জন্য নির্দেশ জারি করা হয়েছে। এতেই শিগগিরই আরও বড় স্থল অভিযান শুরু হওয়ার ইঙ্গিত মিলেছে।

বিবিসি বলছে, এই নির্দেশ ফিলিস্তিনি পরিবারগুলোর মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে, যাদের অনেকেই যুদ্ধের কারণে বারবার বাস্তুচ্যুত হয়েছিলেন এবং যুদ্ধবিরতির সময় বাড়ি ফিরে এসেছেন।

পরিবারগুলোকে যা সম্ভব তা বহন করতে এবং ইসরায়েলি সেনাবাহিনী দ্বারা চিহ্নিত এলাকা থেকে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য হেঁটে, গাড়িতে বা যানবাহনে করে বেরিয়ে যেতে দেখা গেছে।

বুধবার এক ভিডিও বার্তায় ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ‘শেষ সতর্কতা’ জারি করে সেখানে আটক অবশিষ্ট জিম্মিদের ফিরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

ইসরায়েল জানিয়েছে, হামাস এখনও ৫৯ জন জিম্মিকে ধরে রেখেছে, যাদের মধ্যে ২৪ জন জীবিত বলে ধারণা করা হচ্ছে। কাটজ আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, যদি কোনো দাবিই পূরণ না হয়, তাহলে বিকল্প হবে ‘সম্পূর্ণ ধ্বংস এবং ধ্বংসযজ্ঞ’।

এরআগে মঙ্গলবার, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, তারা পূর্ণশক্তিতে যুদ্ধ পুনরায় শুরু করেছেন এবং যেকোনো যুদ্ধবিরতি আলোচনা এখন ‘আগুনের মুখেই’ হবে।

প্রতিবেদন বলছে, গত ১৯ জানুয়ারি গাজায় ছয় সপ্তাহের যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হয়। এর দু পক্ষের আলোচনা চলছে চুক্তির মেয়াদ বাড়াতে। এর মধ্যেই মঙ্গলবার ব্যাপক হামলা শুরু করে ইসরায়েল।

ইসরায়েল এবং হামাস প্রথম পর্যায়ের পরে যুদ্ধবিরতি কীভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে তা নিয়ে একমত হতে ব্যর্থ হয়েছে। হামাস ও ইসরায়েল এ নিয়ে পরষ্পরকে দুষছে।

বিবিসি লিখেছে, হামাসের ওপর চাপ সৃষ্টি করার জন্য মার্চের শুরুতে ইসরায়েল গাজায় প্রবেশকারী সমস্ত খাদ্য, জ্বালানি এবং চিকিৎসা সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে। এখন ইসরায়েল সেনা এবং কঠোর সামরিক শক্তি ব্যবহার করে হামাসকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে স্বাক্ষর করতে বাধ্য করার চেষ্টা করছে।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায় হামাস। এতে আক্রমণে প্রায় ১২০০ জন নিহত এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয়। জিম্মিদের মধ্যে ২৫ জনকে যুদ্ধবিরতির প্রথম পর্যায়ে জীবিত মুক্তি দেওয়া হয়েছে।

হামাস-নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েল ব্যাপক সামরিক আক্রমণের মাধ্যমে ওই হামলার প্রতিক্রিয়া জানায়। যার ফলে ৪৮ হাজার ৫০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, পাশাপাশি ঘরবাড়ি ও অবকাঠামোতে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

গাজায় এবার স্থল অভিযান চালাচ্ছে ইসরায়েল, আরও ৭০ প্রাণহানি

আপডেট সময় : ০২:১৯:৪৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ ২০২৫

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েলি বাহিনী। ব্যাপক বিমান হামলার পর এখন চলছে স্থল অভিযান। যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভাঙার পর টানা হামলায় মঙ্গলবার থেকে এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছে ৪৩০ জনের বেশি। বুধবার এক দিনে ৭০ জনের বেশি হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার বিবিসি ও আল জাজিরা এসব তথ্য জানিয়েছে। প্রতিবেদন বলছে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী উত্তর গাজায় গোলাবর্ষণ শুরু করেছে। এতে তাৎক্ষণিকভাবে প্রাণহানির সংখ্যা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

ইসরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, সেনারা এখন গাজাকে উত্তর ও দক্ষিণে বিভক্তকারী নেটজারিম করিডোরে চলে গেছে। তারা গাজায় উত্তর ও দক্ষিণের মধ্যে আংশিক বাফার তৈরির জন্য স্থল অভিযান শুরু করেছে।

গাজার বাসিন্দাদের স্থল সীমান্তের তিন পাশের বিশাল এলাকা ছেড়ে যাওয়ার জন্য নির্দেশ জারি করা হয়েছে। এতেই শিগগিরই আরও বড় স্থল অভিযান শুরু হওয়ার ইঙ্গিত মিলেছে।

বিবিসি বলছে, এই নির্দেশ ফিলিস্তিনি পরিবারগুলোর মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে, যাদের অনেকেই যুদ্ধের কারণে বারবার বাস্তুচ্যুত হয়েছিলেন এবং যুদ্ধবিরতির সময় বাড়ি ফিরে এসেছেন।

পরিবারগুলোকে যা সম্ভব তা বহন করতে এবং ইসরায়েলি সেনাবাহিনী দ্বারা চিহ্নিত এলাকা থেকে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য হেঁটে, গাড়িতে বা যানবাহনে করে বেরিয়ে যেতে দেখা গেছে।

বুধবার এক ভিডিও বার্তায় ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ‘শেষ সতর্কতা’ জারি করে সেখানে আটক অবশিষ্ট জিম্মিদের ফিরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

ইসরায়েল জানিয়েছে, হামাস এখনও ৫৯ জন জিম্মিকে ধরে রেখেছে, যাদের মধ্যে ২৪ জন জীবিত বলে ধারণা করা হচ্ছে। কাটজ আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, যদি কোনো দাবিই পূরণ না হয়, তাহলে বিকল্প হবে ‘সম্পূর্ণ ধ্বংস এবং ধ্বংসযজ্ঞ’।

এরআগে মঙ্গলবার, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, তারা পূর্ণশক্তিতে যুদ্ধ পুনরায় শুরু করেছেন এবং যেকোনো যুদ্ধবিরতি আলোচনা এখন ‘আগুনের মুখেই’ হবে।

প্রতিবেদন বলছে, গত ১৯ জানুয়ারি গাজায় ছয় সপ্তাহের যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হয়। এর দু পক্ষের আলোচনা চলছে চুক্তির মেয়াদ বাড়াতে। এর মধ্যেই মঙ্গলবার ব্যাপক হামলা শুরু করে ইসরায়েল।

ইসরায়েল এবং হামাস প্রথম পর্যায়ের পরে যুদ্ধবিরতি কীভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে তা নিয়ে একমত হতে ব্যর্থ হয়েছে। হামাস ও ইসরায়েল এ নিয়ে পরষ্পরকে দুষছে।

বিবিসি লিখেছে, হামাসের ওপর চাপ সৃষ্টি করার জন্য মার্চের শুরুতে ইসরায়েল গাজায় প্রবেশকারী সমস্ত খাদ্য, জ্বালানি এবং চিকিৎসা সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে। এখন ইসরায়েল সেনা এবং কঠোর সামরিক শক্তি ব্যবহার করে হামাসকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে স্বাক্ষর করতে বাধ্য করার চেষ্টা করছে।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায় হামাস। এতে আক্রমণে প্রায় ১২০০ জন নিহত এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয়। জিম্মিদের মধ্যে ২৫ জনকে যুদ্ধবিরতির প্রথম পর্যায়ে জীবিত মুক্তি দেওয়া হয়েছে।

হামাস-নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েল ব্যাপক সামরিক আক্রমণের মাধ্যমে ওই হামলার প্রতিক্রিয়া জানায়। যার ফলে ৪৮ হাজার ৫০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, পাশাপাশি ঘরবাড়ি ও অবকাঠামোতে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়েছে।