সংখ্যালঘু নিয়ে ভুল তথ্য ছড়াচ্ছে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান পরিষদ: প্রেস উইং

- আপডেট সময় : ০৭:১৫:৫৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ ২০২৫
- / ৩৪৫ বার পড়া হয়েছে

গত ১২ মার্চ প্রকাশিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ দাবি করেছে, বাংলাদেশে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সহিংসতা অতীতের মতোই অব্যাহত রয়েছে। তাদের এ দাবির পক্ষে পরিষদ জানায়, ২০২৫ সালের প্রথম দুই মাসে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে মোট ৯২টি সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে, যার মধ্যে ১১টি হত্যাকাণ্ড রয়েছে। তবে মাঠ পর্যায়ের তথ্য বিশ্লেষণ করলে পরিষদের এই দাবি বাস্তব পরিস্থিতির সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ বলে প্রতীয়মান হয়। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে এসব তথ্য জানানো হয়।
প্রেস উইং বলছে, হত্যাকাণ্ডের প্রসঙ্গে পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে, এসব ঘটনা কোনো সাম্প্রদায়িক সহিংসতার অংশ ছিল না; বরং, বিভিন্ন সামাজিক ও ব্যক্তিগত কারণ যেমন— পূর্বশত্রুতা, চুরি, পারিবারিক বিরোধ ও অসতর্ক আচরণের কারণে এ মৃত্যুগুলো ঘটেছে।
নিম্নে কিছু ঘটনার বিস্তারিত দেওয়া হলো:
গাইবান্ধা: চুরি করা টাকা ভাগাভাগি নিয়ে বিরোধের জেরে দিপলু সরকার তার সঙ্গীদের হাতে খুন হন।
নেত্রকোনা: দিলীপ কুমার সাহা রায় তার পরিবারের অনুপস্থিতিতে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের হাতে নিজ বাড়িতে খুন হন।
রাজীব তালুকদার ব্যক্তিগত শত্রুতার কারণে খুন হন।
সুনামগঞ্জ: রাস্তা পার হওয়ার সময় অজ্ঞাত একটি মোটরসাইকেলের ধাক্কায় গীতা রানি দাসের মৃত্যু হয়।
বান্দরবান: একটি ছাগলকে কেন্দ্র করে প্রতিবেশীর সঙ্গে বিবাদের পর উমেপ্রু মারমা তার বাড়ির বাইরে অজ্ঞাত বন্দুকধারীদের গুলিতে নিহত হন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ: অটো-রিকশা চুরি করতে গিয়ে অপরাধীরা চালক শ্রী পলাশকে হত্যা করে।
মৌলভীবাজার: দীর্ঘদিনের বিরোধের জেরে শ্রী দিপেন মুণ্ডা খুন হন।
কানাই শব্দকার পারিবারিক কলহের ফলে প্রাণ হারান।
কানাই পাশী-এর মৃতদেহ এক চা বাগানে রহস্যজনক পরিস্থিতিতে পাওয়া যায়।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র অর্ণব কুমার সরকার পূর্ববিরোধের জেরে অজ্ঞাত বন্দুকধারীদের গুলিতে নিহত হন।
নারায়ণগঞ্জ: ১,৫০,০০০ টাকা লুটের সময় অজ্ঞাত দুষ্কৃতকারীরা উৎপল রায়কে খুন করে।
উপরোক্ত ঘটনাগুলো বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, এসব হত্যাকাণ্ড মূলত ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব, অপরাধমূলক কার্যকলাপ বা দুর্ঘটনার ফল, যা কোনো সাম্প্রদায়িক সহিংসতার অংশ নয়।
দুঃখজনকভাবে, এটি প্রথমবার নয় যে বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ এমন ভুল তথ্য পরিবেশন করেছে। অতীতেও তারা বারবার সংখ্যালঘু নিপীড়ন নিয়ে বিতর্কিত দাবি করেছে। কিন্তু সঠিক তথ্য উপস্থাপনের অনুরোধ জানানো হলেও, তারা তাদের বিভ্রান্তিকর প্রতিবেদন সংশোধন করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
এ ধরনের সংবেদনশীল বিষয় নিয়ে সাবধানতার সঙ্গে কাজ করা অত্যন্ত জরুরি, যাতে তথ্য বিকৃত না হয় এবং কোনো নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য অপব্যবহার না হয়। বিভিন্ন সহিংসতার প্রকৃত কারণ চিহ্নিত করা প্রয়োজন, যাতে বিভক্তির পরিবর্তে ঐক্য ও শান্তির পরিবেশ সৃষ্টি করা যায়।