ভারতের মিজোরামের এক সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন জিয়ংহাকা ওরফে জিয়ন। ১৯৪৫ সালে যখন মাত্র ১৭ বছর বয়স, তখন প্রথমবার বিয়ে হয় তাঁর। এরপর বহুবার বিয়ে হয়েছে তাঁর। এইভাবে মোট ৩৯ জন নারীকে বিয়ে করেন তিনি। বিশ্বে এতজন স্ত্রী কারও নেই। এক বছরে তিনি ১০টি বিয়ে করে রেকর্ড গড়েন। শুধু ৩৯ জন স্ত্রী নয়, ৯৪ জন সন্তান, ১৪ জন পুত্রবধূ এবং ৩৩ জন নাতি-নাতনি রয়েছে জিয়নের।২০২১ সালে ৭৬ বছর প্রয়াত হন বিশ্বের বৃহত্তম পরিবারের কর্তা জিয়ন।
বাকতাওয়াং গ্রামে একটি চারতলা বাড়িতে পরিবারের সবাইকে নিয়ে থাকতেন জিয়ন। তাঁর বাড়ি পর্যটকদের কাছে একটা আকর্ষণীয় স্থান হয়ে উঠেছে। বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায় জিয়নের বাড়িটি তার সংসারের মতোই বিশাল বড়। তাঁর বাড়িতে ১০০টি ঘর আছে, সেখানে তিনি সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে থাকতেন। যা এ যুগে বিরল।
তাঁর ঘরের পাশাপাশি ছিল তাঁর স্ত্রী'দের ঘর। বিয়ের দিন অনুযায়ী, তাঁরা দূরে বা কাছে থাকেন। অর্থাৎ যাঁকে শেষে বিয়ে করেছেন, তিনি থাকেন সবথেকে কাছে। আবার যাঁকে প্রথমে বিয়ে করেছেন, তিনি থাকেন সবথেকে দূরে। তবে সবার জিয়নের ঘরে প্রবেশ করার অনুমতি ছিল। জিয়নের বাড়িতে তার সব ছেলেরাই নিজেদের স্ত্রী নিয়ে থাকেন। তার পরিবারে সবার আলাদা ঘর থাকলেও রান্নাঘর কিন্তু একটাই। অর্থাৎ ওই পরিবারের রান্না একসঙ্গেই হয়। খাবার জন্য তাদের প্রতিদিন ১০০ কেজি চাল আর ৭০ কেজির বেশি আলু রান্না হয়। আর মাংস রান্না হলে তো কথাই নেই । মোটামুটি ৬০ কেজি আলু এবং ৪০টি মুরগি লাগে গোটা পরিবারের। জিয়নের ছেলেরা সবাই চাষের কাজ আর পশু পালন করে থাকেন।
বিশ্বের সবথেকে বড় পরিবারের কর্তা হয়ে গর্বিত ছিলেন জিয়ন। পরিবারের ছোট ছোট সদস্যদের জন্য তিনি স্কুল বানিয়েছিলেন। সেখানে তার ছেলেমেয়ে এবং নাতি-নাতনিরা পড়াশোনা করেছে। স্কুলটি সরকারের কিছু অনুদান পায়। মৃত্যুর আগে পর্যন্ত মিজোরামের পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু ছিলেন জিয়ন। রাজ্যে ভ্রমণকারী পর্যটকদের একটি বড় অংশই যেত বকতাওং তলাংনুমের গ্রামে জিয়নের পরিবারের সদস্যদের দেখতে। জিয়নকে নিয়ে একাধিক অনুষ্ঠান ও তথ্যচিত্রও নির্মাণ করা হয়েছে।