ঢাকা ১০:১৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৯ মার্চ ২০২৫, ১৫ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

ফ্রিজার ঘরে ফেলে রাখা হয় অস্কারজয়ী ফিলিস্তিনি নির্মাতাকে

বিনোদন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৮:৫৬:১৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ মার্চ ২০২৫
  • / ৩৪৮ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ফিলিস্তিনের অস্কারজয়ী নির্মাতা হামদান বল্লালকে অপহরণের একদিন পর মুক্তি দিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। পশ্চিম তীরের একটি সামরিক ঘাঁটিতে তাঁকে আটকে রাখা হয়েছিল। এ সময় তিনি ইসরায়েলিদের হাতে চরমভাবে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বলে দাবি করেছেন। সারাক্ষণ তাঁর চোখ বাঁধা ছিল, এমনকি বরফের মতো ঠান্ডা একটি ফ্রিজার ঘরে বন্দি করে রাখার কথাও বলছেন।

সোমবার (২৪ মার্চ) ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে অবস্থিত সুসিয়া গ্রামে অভিযান চালায় ইসরায়েলি সৈন্যরা। এ সময় তারা ‘নো আদার ল্যান্ড’খ্যাত নির্মাতাকে তুলে নিয়ে যায়। প্রথমে একদল ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারী (কয়েকজন মুখোশধারীও ছিল) হামদানের ওপর হামলা করে, এরপর সৈন্যরা এসে তাঁকে আটক করেছিল। কিন্তু আটকের পর তাঁর কোনো খোঁজ-খবর পাওয়া যাচ্ছিল না। ২৪ ঘণ্টা পর ছাড়া পান তিনি।

সামাজিক মাধ্যম এক্স’র এক পোস্টে নো আদার ল্যান্ড তথ্যচিত্রটির আরেক পরিচালক যুবাল আব্রাহাম লেখেন, ‘সারারাত হাতকড়া পরিয়ে সামরিক ঘাঁটিতে মারধরের পর হামদান বল্লাল এখন মুক্ত এবং পরিবারের কাছে বাড়ি ফিরতে চলেছেন।’

বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) জানিয়েছে যে, তাদের সাংবাদিকরা হামদান এবং আরও দুই ফিলিস্তিনিকে অধিকৃত পশ্চিম তীরের ইসরায়েলি বসতি কিরিয়াত আরবাতের একটি পুলিশ স্টেশন থেকে বের হতে দেখেছেন। এ সময় তাঁর মুখে ছিল আঘাতের চিহ্ন এবং পোশাকে রক্তের দাগ।

মুক্তির পর পশ্চিম তীরের আল খালিল হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন হামদান। বার্তা সংস্থা এপিকে তিনি জানান, তাঁকে একটি সেনা ঘাঁটিতে আটকে রাখা হয়েছিল এবং হিমায়িত এয়ার কন্ডিশনারের (এসি) নিচে ঘুমাতে বাধ্য করা হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘আমাকে ২৪ ঘণ্টা চোখ বেঁধে রাখা হয়েছিল।’

যোগ করে বলেন, ‘সারারাত ঠাণ্ডায় কাতরাচ্ছিলাম। ওটা একটা ঘর ছিল, আমি কিছুই দেখতে পাচ্ছিলাম না… সৈন্যরা আমাকে নিয়ে হাসাহাসি করছিল শুনতে পাচ্ছিলাম।’

এই নির্মাতা আরও জানান, নিজের গ্রাম সুসিয়ায় আক্রমণের সময় ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীরা তাঁর মাথায় ‘ফুটবলের মতো’ লাথি মারছিল।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী অবশ্য তাৎক্ষণিকভাবে হামদানকে নির্যাতনের বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া দেয়নি। অন্যদিকে, গ্রামে হামদানের হামলাকারী হিসেবে চিহ্নিত শেম তোভ লুস্কিও মারধরের ঘটনা অস্বীকার করেছেন। এপিকে বলছেন, তিনি জানতেন না যে হামদান অস্কারজয়ী!

চলতি মার্চের শুরুতে ‘নো আদার ল্যান্ড’ যখন অস্কারে সেরা তথ্যচিত্রের পুরস্কার জিতেছিল, তখন লস অ্যাঞ্জেলেসের ডলবি থিয়েটার আলোকিত করেছিলেন হামদান বল্লাল ও তাঁর সহকারী তিন নির্মাতা। তথ্যচিত্রে তাঁরা ইসরায়েলি দখলদারিত্বের মুখে ফিলিস্তিনিদের জীবন সংগ্রামের চিত্র ফ্রেমবন্দি করেন। সূত্র: এপি, দ্য গার্ডিয়ান

নিউজটি শেয়ার করুন

ফ্রিজার ঘরে ফেলে রাখা হয় অস্কারজয়ী ফিলিস্তিনি নির্মাতাকে

আপডেট সময় : ০৮:৫৬:১৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ মার্চ ২০২৫

ফিলিস্তিনের অস্কারজয়ী নির্মাতা হামদান বল্লালকে অপহরণের একদিন পর মুক্তি দিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। পশ্চিম তীরের একটি সামরিক ঘাঁটিতে তাঁকে আটকে রাখা হয়েছিল। এ সময় তিনি ইসরায়েলিদের হাতে চরমভাবে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বলে দাবি করেছেন। সারাক্ষণ তাঁর চোখ বাঁধা ছিল, এমনকি বরফের মতো ঠান্ডা একটি ফ্রিজার ঘরে বন্দি করে রাখার কথাও বলছেন।

সোমবার (২৪ মার্চ) ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে অবস্থিত সুসিয়া গ্রামে অভিযান চালায় ইসরায়েলি সৈন্যরা। এ সময় তারা ‘নো আদার ল্যান্ড’খ্যাত নির্মাতাকে তুলে নিয়ে যায়। প্রথমে একদল ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারী (কয়েকজন মুখোশধারীও ছিল) হামদানের ওপর হামলা করে, এরপর সৈন্যরা এসে তাঁকে আটক করেছিল। কিন্তু আটকের পর তাঁর কোনো খোঁজ-খবর পাওয়া যাচ্ছিল না। ২৪ ঘণ্টা পর ছাড়া পান তিনি।

সামাজিক মাধ্যম এক্স’র এক পোস্টে নো আদার ল্যান্ড তথ্যচিত্রটির আরেক পরিচালক যুবাল আব্রাহাম লেখেন, ‘সারারাত হাতকড়া পরিয়ে সামরিক ঘাঁটিতে মারধরের পর হামদান বল্লাল এখন মুক্ত এবং পরিবারের কাছে বাড়ি ফিরতে চলেছেন।’

বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) জানিয়েছে যে, তাদের সাংবাদিকরা হামদান এবং আরও দুই ফিলিস্তিনিকে অধিকৃত পশ্চিম তীরের ইসরায়েলি বসতি কিরিয়াত আরবাতের একটি পুলিশ স্টেশন থেকে বের হতে দেখেছেন। এ সময় তাঁর মুখে ছিল আঘাতের চিহ্ন এবং পোশাকে রক্তের দাগ।

মুক্তির পর পশ্চিম তীরের আল খালিল হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন হামদান। বার্তা সংস্থা এপিকে তিনি জানান, তাঁকে একটি সেনা ঘাঁটিতে আটকে রাখা হয়েছিল এবং হিমায়িত এয়ার কন্ডিশনারের (এসি) নিচে ঘুমাতে বাধ্য করা হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘আমাকে ২৪ ঘণ্টা চোখ বেঁধে রাখা হয়েছিল।’

যোগ করে বলেন, ‘সারারাত ঠাণ্ডায় কাতরাচ্ছিলাম। ওটা একটা ঘর ছিল, আমি কিছুই দেখতে পাচ্ছিলাম না… সৈন্যরা আমাকে নিয়ে হাসাহাসি করছিল শুনতে পাচ্ছিলাম।’

এই নির্মাতা আরও জানান, নিজের গ্রাম সুসিয়ায় আক্রমণের সময় ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীরা তাঁর মাথায় ‘ফুটবলের মতো’ লাথি মারছিল।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী অবশ্য তাৎক্ষণিকভাবে হামদানকে নির্যাতনের বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া দেয়নি। অন্যদিকে, গ্রামে হামদানের হামলাকারী হিসেবে চিহ্নিত শেম তোভ লুস্কিও মারধরের ঘটনা অস্বীকার করেছেন। এপিকে বলছেন, তিনি জানতেন না যে হামদান অস্কারজয়ী!

চলতি মার্চের শুরুতে ‘নো আদার ল্যান্ড’ যখন অস্কারে সেরা তথ্যচিত্রের পুরস্কার জিতেছিল, তখন লস অ্যাঞ্জেলেসের ডলবি থিয়েটার আলোকিত করেছিলেন হামদান বল্লাল ও তাঁর সহকারী তিন নির্মাতা। তথ্যচিত্রে তাঁরা ইসরায়েলি দখলদারিত্বের মুখে ফিলিস্তিনিদের জীবন সংগ্রামের চিত্র ফ্রেমবন্দি করেন। সূত্র: এপি, দ্য গার্ডিয়ান