ঢাকা ১১:৩৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩১ মার্চ ২০২৫, ১৭ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

মহাসড়কে ডাকাত আতঙ্ক, নিরাপত্তা জোরদার করছে পুলিশ

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১০:৩১:৫৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৯ মার্চ ২০২৫
  • / ৩৫১ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

উত্তরের মানুষের ঈদযাত্রায় এবার যানজটের চেয়েও বড় দুশ্চিন্তা মহাসড়কে ডাকাত আতঙ্ক। গেল দুই মাসে যমুনা সেতুর পশ্চিম মহাসড়ক ও সিরাজগঞ্জের মহাসড়কে বেশ কিছু ডাকাতির ঘটনায় উদ্বিগ্ন যাত্রী ও পরিবহন চালকরা। এমন অবস্থায় দিনের পাশাপাশি মহাসড়কে রাতেও নিরাপত্তা জোরদারের কথা বলছে পুলিশ।

উত্তরের প্রবেশদ্বার যমুনা সেতুর সংযোগ মহাসড়ক টাঙ্গাইলের এলেংগা থেকে যমুনা সেতু পার হয়ে হাটিকুমরুল মোড়ে দিয়ে রাতদিন চলাচল করে উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের ২২ জেলার যানবাহন।

তবে সন্ধ্যা নামতেই এই মহাসড়কে অহরহই ঘটছে ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা। ঘুটঘুটে অন্ধকারে যানবাহন থামিয়ে ডাকাতি করে সহজেই পালিয়ে যায় ডাকাতদল।

ফেব্রুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত ঘটেছে অন্তত পাঁচটি ডাকাতির ঘটনা। বেড়েছে ছিনতাইয়ের ঘটনাও। এমন অবস্থায় শঙ্কিত এই পথে চলাচলকারীরা।

যাত্রীদের মধ্যে একজন বলেন, ‘রেলক্রসিং যে জায়গাটায় ওখানে গাড়ি অনেক স্লো হওয়ার কারণে ওখানে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। চাকা পামচার হলেও দেখা যায় চাকা খুলতে খুলতে ওরা এসে সব নিয়ে চলে যায়।’

চালকরা জানান, দিনে নিরাপদ থাকলেও রাত যত গভীর হয় ততই অনিরাপদ হয়ে পড়ে যমুনা সেতুর পশ্চিম পাড়ের সয়দাবাদ, ঝাঐল, কোনাবাড়ী ও সীমান্তবাজার এলাকা। চলতি বছর সিরাজগঞ্জ জেলার মহাসড়কে এখন পর্যন্ত সাতটি ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। তাই পুলিশি নজরদারির দাবি জানান তারা।

চালকদের মধ্যে একজন বলেন, ‘পুলিশের তৎপরতা বেশি থাকলে ভালো হয়। সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ মনে হয় যখন আমরা এলেঙ্গা থেকে যমুনা ব্রিজ পর্যন্ত আসি।’

যমুনা সেতু পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনারুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের থানা থেকে নলকা পর্যন্ত ১৭ কিলোমিটার। এর মধ্যে চারটা টহল থাকে। এর সাথে আমার গাড়িও ডিউটি করে। আমি বিশ্বাস করি আমার এখান দিয়ে যারা যাবে, তারা নিরাপদেই যাবে।’

বগুড়া রিজিয়নের হাইওয়ে পুলিশের পুলিশ সুপার মো. শহিদ উল্লাহ বলেন, ‘মহাসড়কে যদি এভাবে ছিনতাই হয় তাহেল অবশ্যই আমাদের সমন্বিত হয়ে কাজ করতে হবে। এবং লোকজনদেরও সচেতন হতে হবে। এ বিষয়ে আমরা আরও বেশি সচেতন হবো ও সচেষ্ট হবো। রাতে আন-অথোরাইজ লোক যারা চলাচল করবে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

এদিকে ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে এবারই প্রথম মহাসড়কে যাত্রীবাহী বাস ও যাত্রীদের ভিডিও সংরক্ষণ করছে নাটোর জেলা পুলিশ। এতে অপরাধীদের শনাক্ত করা সহজ হওয়ার পাশাপাশি মহাসড়ক নিরাপদ হবে বলে মনে করছেন তারা।

নাটোর ট্রাফিক বিভাগের টিএসআই ফারুখ খান বলেন, ‘নাটোর ট্রাফিক বিভাগ হতে আমরা রাত্রিকালীন নৈশ্যকোচগুলোর যাত্রীদের নিরাপত্তাকল্পে ভিডিও করে রাখছি যেন কোনো ডাকাতি, চুরি না হয়। আমরা ক্রাই শূণ্যের কোটায় নিয়ে আসার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।’

এছাড়া যানবাহনের অতিরিক্ত গতি নিয়ন্ত্রণ ও ফিটনেসবিহীন গাড়ির বিরুদ্ধে মহাসড়কে তৎপর হাইওয়ে পুলিশ। পাশাপাশি দুর্ঘটনা রোধে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে ছোট যানবাহনও। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এই উদ্যোগে খুশি চালক ও যাত্রীরাও।

যাত্রীদের মধ্যে একজন বলেন, ‘এটা ভালো উদ্যোগ, আমরা চাইবো এটা চলমান থাক।’

নাটোর ঝলমলিয়া হাইওয়ে ফাঁড়ির সার্জেন্ট লুৎফুন্নাহার লতা বলেন, ‘ওভার স্পিড যেন পরিহার করে সেজন্য ওভার স্পিডের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছি। এবং থ্রি-হুইলারকে নিষিদ্ধ করার চেষ্টা করছি। কারণ এগুলোর গতি অনেক কম থাকার কারণে যখন বড় গাড়িগুলো যায় তখন দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা থাকে।’

ঈদের আগে নির্বিঘ্নে বাড়ি ফেরার পাশাপাশি ঈদ শেষে নিরাপদে কর্মস্থলে ফিরতে মোট ১০ দিন এই কার্যক্রম অব্যাহত রাখবে জেলা ও হাইওয়ে পুলিশ।

নিউজটি শেয়ার করুন

মহাসড়কে ডাকাত আতঙ্ক, নিরাপত্তা জোরদার করছে পুলিশ

আপডেট সময় : ১০:৩১:৫৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৯ মার্চ ২০২৫

উত্তরের মানুষের ঈদযাত্রায় এবার যানজটের চেয়েও বড় দুশ্চিন্তা মহাসড়কে ডাকাত আতঙ্ক। গেল দুই মাসে যমুনা সেতুর পশ্চিম মহাসড়ক ও সিরাজগঞ্জের মহাসড়কে বেশ কিছু ডাকাতির ঘটনায় উদ্বিগ্ন যাত্রী ও পরিবহন চালকরা। এমন অবস্থায় দিনের পাশাপাশি মহাসড়কে রাতেও নিরাপত্তা জোরদারের কথা বলছে পুলিশ।

উত্তরের প্রবেশদ্বার যমুনা সেতুর সংযোগ মহাসড়ক টাঙ্গাইলের এলেংগা থেকে যমুনা সেতু পার হয়ে হাটিকুমরুল মোড়ে দিয়ে রাতদিন চলাচল করে উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের ২২ জেলার যানবাহন।

তবে সন্ধ্যা নামতেই এই মহাসড়কে অহরহই ঘটছে ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা। ঘুটঘুটে অন্ধকারে যানবাহন থামিয়ে ডাকাতি করে সহজেই পালিয়ে যায় ডাকাতদল।

ফেব্রুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত ঘটেছে অন্তত পাঁচটি ডাকাতির ঘটনা। বেড়েছে ছিনতাইয়ের ঘটনাও। এমন অবস্থায় শঙ্কিত এই পথে চলাচলকারীরা।

যাত্রীদের মধ্যে একজন বলেন, ‘রেলক্রসিং যে জায়গাটায় ওখানে গাড়ি অনেক স্লো হওয়ার কারণে ওখানে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। চাকা পামচার হলেও দেখা যায় চাকা খুলতে খুলতে ওরা এসে সব নিয়ে চলে যায়।’

চালকরা জানান, দিনে নিরাপদ থাকলেও রাত যত গভীর হয় ততই অনিরাপদ হয়ে পড়ে যমুনা সেতুর পশ্চিম পাড়ের সয়দাবাদ, ঝাঐল, কোনাবাড়ী ও সীমান্তবাজার এলাকা। চলতি বছর সিরাজগঞ্জ জেলার মহাসড়কে এখন পর্যন্ত সাতটি ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। তাই পুলিশি নজরদারির দাবি জানান তারা।

চালকদের মধ্যে একজন বলেন, ‘পুলিশের তৎপরতা বেশি থাকলে ভালো হয়। সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ মনে হয় যখন আমরা এলেঙ্গা থেকে যমুনা ব্রিজ পর্যন্ত আসি।’

যমুনা সেতু পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনারুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের থানা থেকে নলকা পর্যন্ত ১৭ কিলোমিটার। এর মধ্যে চারটা টহল থাকে। এর সাথে আমার গাড়িও ডিউটি করে। আমি বিশ্বাস করি আমার এখান দিয়ে যারা যাবে, তারা নিরাপদেই যাবে।’

বগুড়া রিজিয়নের হাইওয়ে পুলিশের পুলিশ সুপার মো. শহিদ উল্লাহ বলেন, ‘মহাসড়কে যদি এভাবে ছিনতাই হয় তাহেল অবশ্যই আমাদের সমন্বিত হয়ে কাজ করতে হবে। এবং লোকজনদেরও সচেতন হতে হবে। এ বিষয়ে আমরা আরও বেশি সচেতন হবো ও সচেষ্ট হবো। রাতে আন-অথোরাইজ লোক যারা চলাচল করবে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

এদিকে ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে এবারই প্রথম মহাসড়কে যাত্রীবাহী বাস ও যাত্রীদের ভিডিও সংরক্ষণ করছে নাটোর জেলা পুলিশ। এতে অপরাধীদের শনাক্ত করা সহজ হওয়ার পাশাপাশি মহাসড়ক নিরাপদ হবে বলে মনে করছেন তারা।

নাটোর ট্রাফিক বিভাগের টিএসআই ফারুখ খান বলেন, ‘নাটোর ট্রাফিক বিভাগ হতে আমরা রাত্রিকালীন নৈশ্যকোচগুলোর যাত্রীদের নিরাপত্তাকল্পে ভিডিও করে রাখছি যেন কোনো ডাকাতি, চুরি না হয়। আমরা ক্রাই শূণ্যের কোটায় নিয়ে আসার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।’

এছাড়া যানবাহনের অতিরিক্ত গতি নিয়ন্ত্রণ ও ফিটনেসবিহীন গাড়ির বিরুদ্ধে মহাসড়কে তৎপর হাইওয়ে পুলিশ। পাশাপাশি দুর্ঘটনা রোধে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে ছোট যানবাহনও। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এই উদ্যোগে খুশি চালক ও যাত্রীরাও।

যাত্রীদের মধ্যে একজন বলেন, ‘এটা ভালো উদ্যোগ, আমরা চাইবো এটা চলমান থাক।’

নাটোর ঝলমলিয়া হাইওয়ে ফাঁড়ির সার্জেন্ট লুৎফুন্নাহার লতা বলেন, ‘ওভার স্পিড যেন পরিহার করে সেজন্য ওভার স্পিডের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছি। এবং থ্রি-হুইলারকে নিষিদ্ধ করার চেষ্টা করছি। কারণ এগুলোর গতি অনেক কম থাকার কারণে যখন বড় গাড়িগুলো যায় তখন দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা থাকে।’

ঈদের আগে নির্বিঘ্নে বাড়ি ফেরার পাশাপাশি ঈদ শেষে নিরাপদে কর্মস্থলে ফিরতে মোট ১০ দিন এই কার্যক্রম অব্যাহত রাখবে জেলা ও হাইওয়ে পুলিশ।