বিপাকে পড়তে পারে ইউরোপে আশ্রয় প্রত্যাশী বাংলাদেশিরা

- আপডেট সময় : ০৩:৪৫:২৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫
- / ৩৮৩ বার পড়া হয়েছে

ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিরাপদ দেশের তালিকায় বাংলাদেশ অন্তর্ভুক্ত হলে বিপাকে পড়তে পারেন ইউরোপে আশ্রয় প্রত্যাশী বাংলাদেশিরা। ইইউ’র নতুন প্রস্তাবনা অনুযায়ী, আশ্রয়ের অনুমতি নিতে প্রমাণ করতে হবে নিজ দেশে নির্যাতিত হওয়ার অভিযোগ। এছাড়া, নিরাপদ দেশের নাগরিক হওয়ার পরেও অস্থায়ীভাবে যারা ইউরোপের বিভিন্ন দেশে অবস্থান করছেন তাদেরকেও দেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করবে সংশ্লিষ্ট দেশগুলো। যদিও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আগামী বছর জুনের আগে প্রস্তাবিত অভিবাসন আইন প্রয়োগ করবে না ইইউ।
অবৈধ অভিবাসীদের ঢল সামলাতে ২০১৬ সালে প্রথম ধাপে অভিবাসন আইন সংস্কারের প্রস্তাব তোলে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যরাষ্ট্রগুলো। এর প্রায় ৮ বছর পর অভিবাসন ও আশ্রয় আইন সংস্কারের চুক্তিতে সম্মত হয় ইইউ। তবে সংস্থাটি জানায়, ২০২৬ এর জুন থেকে নতুন এই নিয়মাবলী কার্যকর হবে।
নতুন প্রস্তাব অনুসারে ইউরোপের দেশগুলোতে অস্থায়ী অনুমোদনের ভিত্তিতে বসবাসরত অভিবাসীদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর গতি বাড়ানোর পরামর্শ দেয় ইইউ’র সদস্যরা। বিশেষ করে নিরাপদ দেশের তালিকায় থাকা রাষ্ট্রের অভিবাসীদের দ্রুত চিহ্নিত করার তাগিদ আসে ইউরোপের নেতাদের তরফ থেকে।
পাশাপাশি, পরিস্থিতি বিবেচনায় এখনও পর্যন্ত যে সব দেশের শরণার্থীদের ৫ জনের মধ্যে ১ জনকে অস্থায়ীভাবে ইউরোপের থাকার অনুমতি দেয়া হয়েছে, সেই দেশগুলোর ওপর নজর রাখার নির্দেশনা রাখা হয় সংস্কার প্রস্তাবে।
এমন ঘটনা প্রবাহের মধ্যে গেল সপ্তাহে একটি খসড়া প্রস্তাবের মাধ্যমে বাংলাদেশসহ মোট ৭টি দেশকে নিরাপদ দেশের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার উদ্যোগ নিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। তালিকায় আছে কসোভো, কলম্বিয়া, মিশর, ভারত, মরক্কো ও তিউনিসিয়ার নাম।
বিবিসি’র প্রতিবেদনে দাবি করা হচ্ছে, নয়া এই বন্দোবস্ত কার্যকর হলে, এসব দেশ থেকে ইউরোপে আসা আশ্রয়প্রার্থীদের আবেদন অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অগ্রহণযোগ্য বলে বিবেচিত হবে। আর যারা ইউরোপের অস্থায়ীভাবে বসবাস করছেন তাদেরকেও দেশে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে জোর দেবে ইউরোপ।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন কোনো দেশকে নিরাপদ ঘোষণা করার অর্থ, ঐ দেশে বসবাসের সময় নির্যাতনের কবলে পড়ার বড় ধরণের ঝুঁকি নেই। বরং আছে আইনি প্রতিকার পাওয়ার যথাযথ ব্যবস্থা। ফলে কোনো আশ্রয়প্রার্থী যদি দাবি করেন তিনি নিজ দেশে নির্যাতনের শিকার, তা প্রমাণের দায়ভারও পুরোপুরি তার ওপরই বর্তাবে।
এমন খবরে সবচেয়ে বিপাকে পড়েছেন ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বসবাসের অনুমতি পাওয়ার প্রক্রিয়ায় থাকা বাংলাদেশি অভিবাসন প্রত্যাশীরা। ইন্টারভিউ শেষ হলেও ফলাফল হাতে পাননি অনেকেই। তাদের আশঙ্কা, ইউরোপীয় ইউনিয়নের অভিবাসন আইনের নতুন সংস্কার প্রস্তাব কার্যকর হলে, যে কোনো মুহূর্তে তাদের দেশে ফেরত পাঠাবে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়।
ইইউ’র তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে ইউরোপের দেশগুলোতে আশ্রয় চেয়েছেন ৪৩ হাজার ২৩৬ জন বাংলাদেশি। এর মধ্যে মাত্র আশ্রয় পেয়েছেন মাত্র ৪ শতাংশ। বিশ্লেষকদের আশঙ্কা, বাংলাদেশ নিরাপদ দেশের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হলে এই সংখ্যা আরও কমবে।