দুবাইয়ে চাঙ্গা হচ্ছে প্রক্রিয়াজাত হীরার বাজার

- আপডেট সময় : ০৪:১০:১১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫
- / ৩৪৯ বার পড়া হয়েছে

বাজার ঊর্ধ্বমুখী থাকায় দুবাইয়ের স্বর্ণের ক্রেতারা ঝুঁকছেন ডায়মন্ডের দিকে। কেনার সামর্থ্য থাকায় বিনিয়োগের জন্য সুরক্ষিত হলুদ এই ধাতু নিয়ে ক্রেতাদের মধ্যে রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। যদিও বিক্রেতারা বলছেন, স্বর্ণের দাম বাড়লেও বিক্রি কমবে না। এমন অবস্থায় চাঙ্গা হচ্ছে ভারতের রপ্তানিমুখী প্রক্রিয়াজাত হীরার বাজার।
দুবাইয়ের ঐহিত্যবাহী স্বর্ণালঙ্কারের বিপণি বিতান হিসেবে পরিচিত দুবাই গোল্ড সুক। স্বর্ণের শহর হিসেবে পরিচিত এই মার্কেটে বিয়ে, ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান কিংবা বিনিয়োগে ২২ ক্যারেটের স্বর্ণ ক্রেতাদের প্রথম পছন্দ। তবে স্বর্ণের দাম আউন্স প্রতি স্মরণকালের সর্বোচ্চ ৩ হাজার ৪শ’ ডলারে পৌঁছানোয় গ্রাহকরা ঝুঁকছেন ডায়মন্ড আর হালকা স্বর্ণের গহনার দিকে।
দাম বাড়ায় আগের চেয়ে স্বর্ণ কেনা কমিয়েছেন ক্রেতারা। যেকোনো অনুষ্ঠান উপলক্ষে ক্রেতারা হীরার গহনার দিকে ঝুঁকছেন। কিন্তু স্বর্ণ ছাড়া তো আর হীরার গহনা হয় না।
এক ক্রেতা জানান, আমার মনে হয় না স্বর্ণের দাম সহজে কমবে। উল্টো বাড়তেই থাকবে। মানুষও এতে অভ্যস্ত হয়ে যাবে। এখন কিনতে কষ্ট হচ্ছে, সামনে হবে না।
বছরের শুরু থেকে বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দর ছিল ঊর্ধ্বমুখী। এরমধ্যে ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্কযুদ্ধে স্বর্ণের চাহিদা বাড়ায় দামও বেড়েছে কয়েকগুণ। কিন্তু স্বর্ণের গহনার বেলায় পরিস্থিতি ভিন্ন। অনেকেই পিছিয়ে যাচ্ছেন দামের কারণে।
কেউ যদি ২৪ ক্যারেটের স্বর্ণ কিনতে চান, সেটার দাম তাদের জন্য সহনীয় হবেনা। তাকে ২২ ক্যারেট অথবা ১৮ ক্যারেটের স্বর্ণই কিনতে হবে।
আরেক অধিবাসী জানান, এখন স্বর্ণ অনেক বেশি ব্যয়বহুল। কেনার সামর্থ্য থাকাই কঠিন। যে কারণে ডায়মন্ডই ভরসা। স্বর্ণের চেয়ে তো দাম কম।
ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিল বলছে, দুবাইয়ের মতো বিলাসবহুল মার্কেট থেকে একদিকে বিনিয়োগের নিরাপদ মাধ্যম হিসেবে মানুষ স্বর্ণ কিনছে, অন্যদিকে স্বর্ণের গহনার চাহিদাও কমছে।
দুবাইয়ের স্বর্ণের বাজার গেলো ৮০ বছর ধরে ক্রেতাদের চুম্বকের মতো আকর্ষণ করে আসছে। এরমধ্যে ইরান আর ভারতীয় ব্যবসায়ীরা তো আছেনই। উৎসবে – পার্বণে কিংবা বিনিয়োগ ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের জন্য তারা বেছে নেন দুবাইকে।
ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিল বলছে, গেলো বছর স্বর্ণের দাম ২৭ শতাংশ বেড়েছে, সংযুক্ত আরব আমিরাতে চাহিদা কমেছে ১২ শতাংশ, বিশ্বব্যাপী চাহিদা কমেছে ১১ শতাংশ। কাউন্সিলের পূর্বাভাস, ২০২৫ সালেও সারাবিশ্বে স্বর্ণের বাজার চাপের মুখে পড়তে পারে, যদি দর বাড়তেই থাকে। গোল্ডম্যান স্যাকসের পূর্বাভাস বলছে, চলতি বছরের শেষ নাগাদ স্বর্ণের দর পৌঁছাতে পারে সাড়ে ৪ হাজার ডলারে।
এমন অবস্থায় হীরার চাহিদা বাড়ায় ভারত থেকে প্রক্রিয়াজাত হীরা আমদানি করছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। ২০২৪ সালেও দেশটিতে গবেষণাগারে প্রক্রিয়াজাত করা ১৭ কোটি ডলারের হীরা রপ্তানি করেছে ভারত। বিশ্বব্যাপী ডায়মন্ডের গহনা থেকে ২০৩০ সাল নাগাদ ২০০ কোটি ডলার আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে দুবাই।