ঢাকা ০৩:৩৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫, ১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी
ব্রেকিং নিউজ ::
ইসরায়েল ও ইরানের সংঘাত: বাংলাদেশিদের জন্য হটলাইন সেবা চালু করা হয়েছে দুতাবাস। ইরানে বসবাসরত বাংলাদেশি নাগরিকদের + ৯৮৯908577368 ও + ৯৮৯১22065745 নম্বরে (হোয়াটসঅ্যাপ সহ) যোগাযোগ করতে বলেছে দূতাবাস কর্তৃপক্ষ।

কাশ্মীরে হামলায় ভারতই জড়িত: পাকিস্তান

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০১:০৭:০৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫
  • / ৩৯৪ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

জম্মু ও কাশ্মীরের পাহেলগামে হামলায় ২৬ জন নিহতের ঘটনাকে ভারতেরই ‘ফলস ফ্ল্যাগ অপারেশন’ বলে দাবি করছেন পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা। মঙ্গলবারের এই ঘটনায় প্রমাণ ছাড়াই পাকিস্তানকে দায়ী করা হচ্ছে বলেও দাবি তাদের। পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম জিও নিউজের এক প্রতিবেদনে এমনটাই বলা হচ্ছে।

কাশ্মীরের পাহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ২৬ জন নিহত হয়েছে। এর মধ্যে একজন বিদেশি নাগরিকও রয়েছেন। এই হামলার প্রাথমিক তদন্তে পাকিস্তানের কিছু গোষ্ঠীর সংযোগ পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। তবে পাকিস্তান এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। এ নিয়ে আজ বৃহস্পতিবার তাদের বিশেষ বৈঠকে বসার কথা।

এবার পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা বললেন, এসব ঘটনার সময় ভারত প্রতিবারই পাকিস্তানের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে দেয়। এতে কোনো প্রমাণ থাকুক বা না থাকুক। ২৬ জন নিহতের ঘটনা ভারতেরই ‘ফলস ফ্ল্যাগ অপারেশন’। উল্লেখ্য, শত্রুপক্ষকে দোষ চাপিয়ে দেওয়ার জন্য কোনো ঘটনা ঘটানো হলে তাকে ফলস ফ্ল্যাগ অপারেশন বলা হয়ে থাকে। এটি এমন এক ধরনের কার্যক্রম, যাতে সহজেই অন্য পক্ষকে দোষী হিসেবে চিহ্নিত করা যায়।

কাশ্মীরের ঘটনা নিয়ে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ ব্রিগেডিয়ার (অব.) আহমেদ সাঈদ মিনহাস বলেন, ভারতীয় গণমাধ্যম প্রমাণ ছাড়াই পাকিস্তানকে দোষারোপ করছে। হামলাটি তাদের দখল করা এলাকার ৪০০ কিলোমিটার ভেতরে সংঘটিত হয়েছিল। কিন্তু পাকিস্তান ২০১৯ সালে ভারতীয় পাইলট অভিনন্দনকে নিরাপদে ফিরিয়ে দিয়ে অত্যন্ত সংযম দেখিয়েছিল।

আরেক বিশ্লেষক ব্রিগেডিয়ার (অব.) রশিদ ওয়ালিও ভারতের পদক্ষেপ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি উল্লেখ করেছেন, হামলার প্রায় পরপরই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রচারণা শুরু হয়, ভারতীয় গণমাধ্যম ভিত্তিহীন দাবি প্রচার করে। ভারত যদি কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার চেষ্টা করে, তাহলে বালাকোট ঘটনার মতো লজ্জার মুখোমুখি হতে পারে।

প্রবীণ পররাষ্ট্র বিষয়ক বিশেষজ্ঞ সাবেক সিনেটর মুশাহিদ হুসেন সৈয়দ বলেন, সন্ত্রাসী ঘটনাগুলোর পরে পাকিস্তানকে দোষারোপ করা ভারতের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। তিনি এটিকে ভারত সরকারের ‘স্বয়ংক্রিয় প্রতিক্রিয়া’ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি উল্লেখ করেছেন, জাফর এক্সপ্রেস হামলা এবং এখন পাহেলগাম ঘটনার মতো এই ধরনের পদক্ষেপগুলো তদন্ত ছাড়াই পাকিস্তানের ওপর ভারতের দোষ চাপানোর পুরোনো অভ্যাসকে মনে করিয়ে দেয়।

ভারতের অভিযোগের ওপর মন্তব্য করতে গিয়ে পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ সৈয়দ মুহাম্মদ আলী বলেন, নয়াদিল্লির কথিত ‘ফলস ফ্ল্যাগ অপারেশন’ ইসলাম, পাকিস্তান ও কাশ্মীরি জনগণের অবমাননা করার জন্য কাজ করছে। একইসঙ্গে অভ্যন্তরীণ বিষয় থেকে মনোযোগ সরাতে চায় তারা। তিনি আরও উল্লেখ করেন, ভারত হয়তো বাণিজ্য বিষয়ে আন্তর্জাতিক চাপ কমানোর চেষ্টা করছে, বিশেষ করে আমেরিকার সঙ্গে।

পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম জিও নিউজ বলছে, ‘ভারত-অধিকৃত’ জম্মু ও কাশ্মীরের পাহেলগাম এলাকায় এক হামলায় ২৬ প্রাণহানির ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে পাকিস্তান। গণমাধ্যমের প্রশ্নের জবাবে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র শাফকাত আলী খান বলেছেন, পাকিস্তান এই ঘটনায় দুঃখিত এবং নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেছে।

এই হামলার দায় স্বীকার করেছে পাকিস্তান ভিত্তিক সন্ত্রাসী সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বার স্থানীয় শাখা দ্য রেসিস্ট্যান্স ফ্রন্ট। তারা ফেসবুকে এই দায় স্বীকার করে।

নিউজটি শেয়ার করুন

কাশ্মীরে হামলায় ভারতই জড়িত: পাকিস্তান

আপডেট সময় : ০১:০৭:০৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫

জম্মু ও কাশ্মীরের পাহেলগামে হামলায় ২৬ জন নিহতের ঘটনাকে ভারতেরই ‘ফলস ফ্ল্যাগ অপারেশন’ বলে দাবি করছেন পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা। মঙ্গলবারের এই ঘটনায় প্রমাণ ছাড়াই পাকিস্তানকে দায়ী করা হচ্ছে বলেও দাবি তাদের। পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম জিও নিউজের এক প্রতিবেদনে এমনটাই বলা হচ্ছে।

কাশ্মীরের পাহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ২৬ জন নিহত হয়েছে। এর মধ্যে একজন বিদেশি নাগরিকও রয়েছেন। এই হামলার প্রাথমিক তদন্তে পাকিস্তানের কিছু গোষ্ঠীর সংযোগ পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। তবে পাকিস্তান এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। এ নিয়ে আজ বৃহস্পতিবার তাদের বিশেষ বৈঠকে বসার কথা।

এবার পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা বললেন, এসব ঘটনার সময় ভারত প্রতিবারই পাকিস্তানের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে দেয়। এতে কোনো প্রমাণ থাকুক বা না থাকুক। ২৬ জন নিহতের ঘটনা ভারতেরই ‘ফলস ফ্ল্যাগ অপারেশন’। উল্লেখ্য, শত্রুপক্ষকে দোষ চাপিয়ে দেওয়ার জন্য কোনো ঘটনা ঘটানো হলে তাকে ফলস ফ্ল্যাগ অপারেশন বলা হয়ে থাকে। এটি এমন এক ধরনের কার্যক্রম, যাতে সহজেই অন্য পক্ষকে দোষী হিসেবে চিহ্নিত করা যায়।

কাশ্মীরের ঘটনা নিয়ে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ ব্রিগেডিয়ার (অব.) আহমেদ সাঈদ মিনহাস বলেন, ভারতীয় গণমাধ্যম প্রমাণ ছাড়াই পাকিস্তানকে দোষারোপ করছে। হামলাটি তাদের দখল করা এলাকার ৪০০ কিলোমিটার ভেতরে সংঘটিত হয়েছিল। কিন্তু পাকিস্তান ২০১৯ সালে ভারতীয় পাইলট অভিনন্দনকে নিরাপদে ফিরিয়ে দিয়ে অত্যন্ত সংযম দেখিয়েছিল।

আরেক বিশ্লেষক ব্রিগেডিয়ার (অব.) রশিদ ওয়ালিও ভারতের পদক্ষেপ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি উল্লেখ করেছেন, হামলার প্রায় পরপরই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রচারণা শুরু হয়, ভারতীয় গণমাধ্যম ভিত্তিহীন দাবি প্রচার করে। ভারত যদি কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার চেষ্টা করে, তাহলে বালাকোট ঘটনার মতো লজ্জার মুখোমুখি হতে পারে।

প্রবীণ পররাষ্ট্র বিষয়ক বিশেষজ্ঞ সাবেক সিনেটর মুশাহিদ হুসেন সৈয়দ বলেন, সন্ত্রাসী ঘটনাগুলোর পরে পাকিস্তানকে দোষারোপ করা ভারতের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। তিনি এটিকে ভারত সরকারের ‘স্বয়ংক্রিয় প্রতিক্রিয়া’ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি উল্লেখ করেছেন, জাফর এক্সপ্রেস হামলা এবং এখন পাহেলগাম ঘটনার মতো এই ধরনের পদক্ষেপগুলো তদন্ত ছাড়াই পাকিস্তানের ওপর ভারতের দোষ চাপানোর পুরোনো অভ্যাসকে মনে করিয়ে দেয়।

ভারতের অভিযোগের ওপর মন্তব্য করতে গিয়ে পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ সৈয়দ মুহাম্মদ আলী বলেন, নয়াদিল্লির কথিত ‘ফলস ফ্ল্যাগ অপারেশন’ ইসলাম, পাকিস্তান ও কাশ্মীরি জনগণের অবমাননা করার জন্য কাজ করছে। একইসঙ্গে অভ্যন্তরীণ বিষয় থেকে মনোযোগ সরাতে চায় তারা। তিনি আরও উল্লেখ করেন, ভারত হয়তো বাণিজ্য বিষয়ে আন্তর্জাতিক চাপ কমানোর চেষ্টা করছে, বিশেষ করে আমেরিকার সঙ্গে।

পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম জিও নিউজ বলছে, ‘ভারত-অধিকৃত’ জম্মু ও কাশ্মীরের পাহেলগাম এলাকায় এক হামলায় ২৬ প্রাণহানির ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে পাকিস্তান। গণমাধ্যমের প্রশ্নের জবাবে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র শাফকাত আলী খান বলেছেন, পাকিস্তান এই ঘটনায় দুঃখিত এবং নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেছে।

এই হামলার দায় স্বীকার করেছে পাকিস্তান ভিত্তিক সন্ত্রাসী সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বার স্থানীয় শাখা দ্য রেসিস্ট্যান্স ফ্রন্ট। তারা ফেসবুকে এই দায় স্বীকার করে।