ঢাকা ০১:৫৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ১৪ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

অনাহারে রেখে গাজাবাসীকে হত্যা করবে ইসরাইল

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৪:৩৪:১৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫
  • / ৩৪৯ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

গাজায় শনিবার (২৬ এপ্রিল) চালানো ইসরাইলি আগ্রাসনে আরো ৪০ জনের প্রাণ গেছে। পাল্টা হামলায় প্রাণ গেছে এক ইসরাইলি সেনা ও এক পুলিশ কর্মকর্তার। এর মধ্যেই, দীর্ঘমেয়াদে যুদ্ধ বন্ধের শর্ত দিয়ে নতুন করে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়েছে হামাস। কাতারের রাজধানী দোহায় মধ্যস্থতাকারীদের কাছ এ প্রস্তাব তুলে ধরা হয়েছে বলে জানিয়েছে সংগঠনটি। এদিকে, ইসরাইলি অবরোধে খাদ্য সংকট চরমে পৌঁছানোয় উপত্যকাটিতে চূড়ান্ত দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা করছে জাতিসংঘ। বোমা ও গুলি চালানো ছাড়াও, অনাহারে রেখে গাজাবাসীকে হত্যার পাঁয়তারা করছে ইসরাইল।

জানুয়ারিতে হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তি প্রত্যাখ্যান করে ১৭ মার্চ থেকে হামলার মাত্রা বাড়িয়ে গাজাবাসীকে একটি মুহূর্তের জন্য নিস্তার দিচ্ছে না বর্বর ইসরাইলি বাহিনী। এখন পর্যন্ত প্রাণহানির সংখ্যা ৫১ হাজারের বেশি।

তাদের অবরোধের কারণে ২ মার্চ থেকে তিল পরিমাণ কোনও মানবিক বা বাণিজ্যিক পণ্য ঢোকেনি মৃত্যুপুরীতে রূপ নেয়া এ নগরীতে। ২৫টি বেকারি বন্ধ হওয়ায় অন্তত ৮ লাখ মানুষের খাদ্যসেবা নিশ্চিত করতে পারছে না জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি।

ফিলিস্তিনের ডব্লিউএফপির কান্ট্রি ডিরেক্টর অ্যান্টোইন রেনার্ড বলেন, ‘গাজায় আমাদের মূল খাদ্য সহায়তার জন্য বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির খাদ্য সরবরাহ সম্পূর্ণরূপে শেষ হয়ে গেছে। ২ মার্চ থেকে কোনও মানবিক বা বাণিজ্যিক পণ্য ঢুকতে পারেনি। আমাদের সহায়তা ক্ষমতা এখন নেই বললেই চলে। ৮ লাখ মানুষকে সেবা দেয়া হতো, এমন ২৫টি বেকারিও বন্ধ রয়েছে।’

ইসরাইলি অবরোধে ১০ লাখ শিশুসহ গাজার বেসামরিক নাগরিকরা অনাহারের ঝুঁকিতে। চরম খাদ্য সংকটে অপুষ্টির ঝুঁকিও বাড়ছে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। ক্ষুধা ও অনাহারে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শিশুরা। তাই ইসরাইল অবরোধের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে যুক্তরাজ্য। এভাবে চলতে থাকলে পূর্ণমাত্রার দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি তৈরির শঙ্কা সহায়তা সংস্থাগুলোর।

গাজা ওসিএইচএ প্রধান জোনাথন হুইটল বলেন, ‘আগামী দিনগুলো গাজায় আরও ভয়াবহ সংকট দেখা দেবে। এখন গাজায় মানুষ বোমা ও গুলিতে দিয়ে মারা যাচ্ছে না; খাবার অভাবে তারা ধীরে ধীরে মারা যাচ্ছে। মানবিক সহায়তা অস্বীকারের কোনও যুক্তি নেই। অথচ এটিকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।’

ইসরাইলি বর্বরতার পাল্টা জবাব দিচ্ছে গাজার স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস। হামাসের পাল্টা হামলায় এক ইসরাইলি সেনা ও এক পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন। এমন উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যে গাজায় যুদ্ধবিরতি ও বন্দী বিনিময় ইস্যুতে মিশরে থাকা মধ্যস্থতাকারীদের কাছে নতুন পরিকল্পনা উপস্থাপন করলো হামাস।

এদিকে ইয়েমেনের হুতি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা অব্যাহত রেখেছে মার্কিন বিমান বাহিনী। শনিবার সন্ধ্যায় সানা ও হুদেইদাহসহ বেশ কয়েকটি প্রদেশে বিমান হামলা চালিয়েছে বলে দাবি করছে হুতিদের সাথে সম্পর্কিত গণমাধ্যম। এসব হামলায় বেশ কয়েকজন হতাহতের দাবি করা হলেও, সঠিক সংখ্যা উল্লেখ করা হয়নি।

নিউজটি শেয়ার করুন

অনাহারে রেখে গাজাবাসীকে হত্যা করবে ইসরাইল

আপডেট সময় : ০৪:৩৪:১৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫

গাজায় শনিবার (২৬ এপ্রিল) চালানো ইসরাইলি আগ্রাসনে আরো ৪০ জনের প্রাণ গেছে। পাল্টা হামলায় প্রাণ গেছে এক ইসরাইলি সেনা ও এক পুলিশ কর্মকর্তার। এর মধ্যেই, দীর্ঘমেয়াদে যুদ্ধ বন্ধের শর্ত দিয়ে নতুন করে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়েছে হামাস। কাতারের রাজধানী দোহায় মধ্যস্থতাকারীদের কাছ এ প্রস্তাব তুলে ধরা হয়েছে বলে জানিয়েছে সংগঠনটি। এদিকে, ইসরাইলি অবরোধে খাদ্য সংকট চরমে পৌঁছানোয় উপত্যকাটিতে চূড়ান্ত দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা করছে জাতিসংঘ। বোমা ও গুলি চালানো ছাড়াও, অনাহারে রেখে গাজাবাসীকে হত্যার পাঁয়তারা করছে ইসরাইল।

জানুয়ারিতে হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তি প্রত্যাখ্যান করে ১৭ মার্চ থেকে হামলার মাত্রা বাড়িয়ে গাজাবাসীকে একটি মুহূর্তের জন্য নিস্তার দিচ্ছে না বর্বর ইসরাইলি বাহিনী। এখন পর্যন্ত প্রাণহানির সংখ্যা ৫১ হাজারের বেশি।

তাদের অবরোধের কারণে ২ মার্চ থেকে তিল পরিমাণ কোনও মানবিক বা বাণিজ্যিক পণ্য ঢোকেনি মৃত্যুপুরীতে রূপ নেয়া এ নগরীতে। ২৫টি বেকারি বন্ধ হওয়ায় অন্তত ৮ লাখ মানুষের খাদ্যসেবা নিশ্চিত করতে পারছে না জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি।

ফিলিস্তিনের ডব্লিউএফপির কান্ট্রি ডিরেক্টর অ্যান্টোইন রেনার্ড বলেন, ‘গাজায় আমাদের মূল খাদ্য সহায়তার জন্য বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির খাদ্য সরবরাহ সম্পূর্ণরূপে শেষ হয়ে গেছে। ২ মার্চ থেকে কোনও মানবিক বা বাণিজ্যিক পণ্য ঢুকতে পারেনি। আমাদের সহায়তা ক্ষমতা এখন নেই বললেই চলে। ৮ লাখ মানুষকে সেবা দেয়া হতো, এমন ২৫টি বেকারিও বন্ধ রয়েছে।’

ইসরাইলি অবরোধে ১০ লাখ শিশুসহ গাজার বেসামরিক নাগরিকরা অনাহারের ঝুঁকিতে। চরম খাদ্য সংকটে অপুষ্টির ঝুঁকিও বাড়ছে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। ক্ষুধা ও অনাহারে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শিশুরা। তাই ইসরাইল অবরোধের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে যুক্তরাজ্য। এভাবে চলতে থাকলে পূর্ণমাত্রার দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি তৈরির শঙ্কা সহায়তা সংস্থাগুলোর।

গাজা ওসিএইচএ প্রধান জোনাথন হুইটল বলেন, ‘আগামী দিনগুলো গাজায় আরও ভয়াবহ সংকট দেখা দেবে। এখন গাজায় মানুষ বোমা ও গুলিতে দিয়ে মারা যাচ্ছে না; খাবার অভাবে তারা ধীরে ধীরে মারা যাচ্ছে। মানবিক সহায়তা অস্বীকারের কোনও যুক্তি নেই। অথচ এটিকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।’

ইসরাইলি বর্বরতার পাল্টা জবাব দিচ্ছে গাজার স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস। হামাসের পাল্টা হামলায় এক ইসরাইলি সেনা ও এক পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন। এমন উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যে গাজায় যুদ্ধবিরতি ও বন্দী বিনিময় ইস্যুতে মিশরে থাকা মধ্যস্থতাকারীদের কাছে নতুন পরিকল্পনা উপস্থাপন করলো হামাস।

এদিকে ইয়েমেনের হুতি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা অব্যাহত রেখেছে মার্কিন বিমান বাহিনী। শনিবার সন্ধ্যায় সানা ও হুদেইদাহসহ বেশ কয়েকটি প্রদেশে বিমান হামলা চালিয়েছে বলে দাবি করছে হুতিদের সাথে সম্পর্কিত গণমাধ্যম। এসব হামলায় বেশ কয়েকজন হতাহতের দাবি করা হলেও, সঠিক সংখ্যা উল্লেখ করা হয়নি।