ঢাকা ১০:৪৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫, ১৪ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

চুক্তি ভঙ্গ করেই সিন্ধু নদীর পানি বন্ধ করে দেয়ার ঘোষণা ভারতের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০১:৪৬:৫৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫
  • / ৩৪৭ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

চুক্তি ভঙ্গ করেই পাকিস্তানকে সিন্ধু নদীর পানি বন্ধ করে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে ভারত। বিশ্বব্যাংকের মধ্যস্থতায় ১৯৬০ সালে করা এই চুক্তিতে একতরফাভাবে কোনো দেশের তা স্থগিত বা বাতিলের বিধান ছিল না। দুই দেশের দীর্ঘ কূটনৈতিক টানাপোড়নের মধ্যেও চুক্তিটি টিকে ছিল। এখন ভারত চাইলেই সিন্ধু নদীর পানি বন্ধ করতে পারবে কিনা তা নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন।

জম্মু-কাশ্মীরে বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ পর্যটক নিহতের ঘটনায় ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক এখন চরমে। হত্যাকাণ্ডের দায় পাকিস্তানের ঘাড়ে চাপিয়ে নানা বিধিনিষেধও আরোপ করেছে ভারত। যার মধ্যে অন্যতম সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিতের বিষয়টি। যা নিয়ে পাল্টাপাল্টি হুমকিও দিয়েছে পারমাণবিক শক্তিধর দুই দেশ।

ভারতের উজান থেকে পাকিস্তানের সিন্ধু অববাহিকায় প্রবাহিত নদীগুলোর পানি বন্টন নিয়ে ১৯৬০ সালে বিশ্বব্যাংকের মধ্যস্থতায় একটি চুক্তি হয়। সিন্ধু পানি চুক্তির আওতায় ৬টি নদীর পানি দুই দেশের মধ্যে বণ্টন করে দেয়া হয়। চুক্তিতে বিরোধ নিষ্পত্তির ব্যবস্থা থাকলেও একতরফাভাবে তা স্থগিত বা বাতিলের ক্ষমতা নেই কোনো দেশের।

সিন্ধু অববাহিকার পূর্বাঞ্চলের তিনটি নদী ইরাবতী, বিপাশা ও শত্রুদের পানি ব্যবহারে অনুমতি পায় ভারত। আর পাকিস্তানকে দেয়া হয় পশ্চিমাঞ্চলের তিনটি নদ-নদী সিন্ধু, ঝিলাম ও চেনাবের অধিকাংশ পানি। ভারতের নদীগুলো উজানে আর পাকিস্তানের নদীগুলো ভাটিতে অবস্থিত।

সিন্ধু ও এর উপনদীগুলোর ওপর বাঁধ ও জলবিদ্যুৎ বিভিন্ন প্রকল্প নিয়ে বিরোধ ও বিতর্কে জড়িয়েছে দুই প্রতিবেশী। পাকিস্তানের অভিযোগ, ভারত অন্যায়ভাবে উজানে বাঁধ নির্মাণ করে পানির প্রবাহ কমিয়ে দিচ্ছে। পাকিস্তানের সেচনির্ভর কৃষির ৮০ শতাংশ পানির জোগান আসে এসব নদী থেকে। এদিকে ভারত বলছে, অভিযোগ নিষ্পত্তির প্রক্রিয়াকে দীর্ঘায়িত করছে পাকিস্তান।

বিশেষজ্ঞদের মতে, সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিতে পাকিস্তানে পানি প্রবাহে তাৎক্ষণিক প্রভাব পড়বে না। কারণ, কয়েক বিলিয়ন ঘনমিটার পানি আটকে রাখার সক্ষমতা ভারতের নেই। তবে বাঁধ থেকে পানি ছাড়া বা বন্যা সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাকিস্তানকে দেয়া বন্ধ করে দিবে নয়াদিল্লি। এছাড়া চুক্তি স্থগিতের ফলে শুষ্ক মৌসুমে ভারতের ন্যূনতম পানি ছাড়ার বাধ্যবাধকতাও থাকছে না।

ভারতের এমন পদক্ষেপ অনিশ্চয়তায় পড়তে পারে পাকিস্তানের কৃষি ব্যবস্থা। দেশটির কৃষি গবেষণা সংস্থা জানায়, পানির প্রবাহ অনিয়মিত হলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে গোটা কৃষি ব্যবস্থা। ফলন কমবে সেচ নির্ভর আখ, গম, ধানের মতো ফসলের। চির প্রতিদ্বন্দ্বী দুই দেশের মধ্যে তিনটি যুদ্ধ ও কূটনৈতিক সম্পর্কে নানা উত্থান-পতনের মধ্যেও চুক্তিটি টিকে ছিল।

নিউজটি শেয়ার করুন

চুক্তি ভঙ্গ করেই সিন্ধু নদীর পানি বন্ধ করে দেয়ার ঘোষণা ভারতের

আপডেট সময় : ০১:৪৬:৫৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫

চুক্তি ভঙ্গ করেই পাকিস্তানকে সিন্ধু নদীর পানি বন্ধ করে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে ভারত। বিশ্বব্যাংকের মধ্যস্থতায় ১৯৬০ সালে করা এই চুক্তিতে একতরফাভাবে কোনো দেশের তা স্থগিত বা বাতিলের বিধান ছিল না। দুই দেশের দীর্ঘ কূটনৈতিক টানাপোড়নের মধ্যেও চুক্তিটি টিকে ছিল। এখন ভারত চাইলেই সিন্ধু নদীর পানি বন্ধ করতে পারবে কিনা তা নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন।

জম্মু-কাশ্মীরে বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ পর্যটক নিহতের ঘটনায় ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক এখন চরমে। হত্যাকাণ্ডের দায় পাকিস্তানের ঘাড়ে চাপিয়ে নানা বিধিনিষেধও আরোপ করেছে ভারত। যার মধ্যে অন্যতম সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিতের বিষয়টি। যা নিয়ে পাল্টাপাল্টি হুমকিও দিয়েছে পারমাণবিক শক্তিধর দুই দেশ।

ভারতের উজান থেকে পাকিস্তানের সিন্ধু অববাহিকায় প্রবাহিত নদীগুলোর পানি বন্টন নিয়ে ১৯৬০ সালে বিশ্বব্যাংকের মধ্যস্থতায় একটি চুক্তি হয়। সিন্ধু পানি চুক্তির আওতায় ৬টি নদীর পানি দুই দেশের মধ্যে বণ্টন করে দেয়া হয়। চুক্তিতে বিরোধ নিষ্পত্তির ব্যবস্থা থাকলেও একতরফাভাবে তা স্থগিত বা বাতিলের ক্ষমতা নেই কোনো দেশের।

সিন্ধু অববাহিকার পূর্বাঞ্চলের তিনটি নদী ইরাবতী, বিপাশা ও শত্রুদের পানি ব্যবহারে অনুমতি পায় ভারত। আর পাকিস্তানকে দেয়া হয় পশ্চিমাঞ্চলের তিনটি নদ-নদী সিন্ধু, ঝিলাম ও চেনাবের অধিকাংশ পানি। ভারতের নদীগুলো উজানে আর পাকিস্তানের নদীগুলো ভাটিতে অবস্থিত।

সিন্ধু ও এর উপনদীগুলোর ওপর বাঁধ ও জলবিদ্যুৎ বিভিন্ন প্রকল্প নিয়ে বিরোধ ও বিতর্কে জড়িয়েছে দুই প্রতিবেশী। পাকিস্তানের অভিযোগ, ভারত অন্যায়ভাবে উজানে বাঁধ নির্মাণ করে পানির প্রবাহ কমিয়ে দিচ্ছে। পাকিস্তানের সেচনির্ভর কৃষির ৮০ শতাংশ পানির জোগান আসে এসব নদী থেকে। এদিকে ভারত বলছে, অভিযোগ নিষ্পত্তির প্রক্রিয়াকে দীর্ঘায়িত করছে পাকিস্তান।

বিশেষজ্ঞদের মতে, সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিতে পাকিস্তানে পানি প্রবাহে তাৎক্ষণিক প্রভাব পড়বে না। কারণ, কয়েক বিলিয়ন ঘনমিটার পানি আটকে রাখার সক্ষমতা ভারতের নেই। তবে বাঁধ থেকে পানি ছাড়া বা বন্যা সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাকিস্তানকে দেয়া বন্ধ করে দিবে নয়াদিল্লি। এছাড়া চুক্তি স্থগিতের ফলে শুষ্ক মৌসুমে ভারতের ন্যূনতম পানি ছাড়ার বাধ্যবাধকতাও থাকছে না।

ভারতের এমন পদক্ষেপ অনিশ্চয়তায় পড়তে পারে পাকিস্তানের কৃষি ব্যবস্থা। দেশটির কৃষি গবেষণা সংস্থা জানায়, পানির প্রবাহ অনিয়মিত হলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে গোটা কৃষি ব্যবস্থা। ফলন কমবে সেচ নির্ভর আখ, গম, ধানের মতো ফসলের। চির প্রতিদ্বন্দ্বী দুই দেশের মধ্যে তিনটি যুদ্ধ ও কূটনৈতিক সম্পর্কে নানা উত্থান-পতনের মধ্যেও চুক্তিটি টিকে ছিল।