ঢাকা ০৮:২৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ১৫ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সুযোগ তৈরি হয়েছে: ড. কামাল হোসেন

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১১:৫১:৪০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫
  • / ৩৪৮ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

চব্বিশের ছাত্র-জনতার গণ-আন্দোলনের মধ্য দিয়ে দেশে গণতন্ত্র ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার এক নতুন সুযোগ তৈরি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের সংবিধান প্রণেতা, গণফোরামের ইমেরিটাস সভাপতি ড. কামাল হোসেন।

রোববার (২৭ এপ্রিল) জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে বাংলাদেশের সংবিধান প্রণেতা, গণফোরামের ইমেরিটাস সভাপতি ড. কামাল হোসেনের ৮৮তম জন্মদিন উৎসব উপলক্ষ্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ড. কামাল হোসেন লিখিত বক্তব্যে বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীনতার মূল লক্ষ্য ছিল গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা ও শোষণমুক্ত সমাজ গড়ে তোলা। কিন্তু বিগত ৫৪ বছরে তা অর্জনে আমরা ব্যর্থ হয়েছি। ২৪-এর ছাত্র-জনতার গণ-আন্দোলনের মধ্য দিয়ে দেশে গণতন্ত্র ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার এক নতুন সুযোগ তৈরি হয়েছে।

তিনি বলেন, দেশের জনগণ স্বপ্ন দেখছে স্বাধীন ও বৈষম্যমুক্ত এক নতুন বাংলাদেশের। কোনো অশুভ শক্তি বা ষড়যন্ত্র যেন এই রক্তস্নাত বিজয় ও মহান মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্নের বাংলাদেশ বিনির্মাণে বাধা সৃষ্টি করতে না পারে, এ ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। বর্তমান পরিস্থিতিতে ছাত্র-জনতার যে ঐক্য গড়ে উঠেছে, তা দেশ গড়ার কাজে নতুন দিগন্ত তৈরি হবে বলেও আশা ব্যক্ত করেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, আমাদের মনে রাখতে হবে, বিগত সময়ে রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো দলীয়করণের ফলে প্রায় অকার্যকর হয়ে পড়েছিল। এসব প্রতিষ্ঠানগু সংস্কার করতে এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করতে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ব্যক্তিত্ব নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রতিষ্ঠা হয়েছে, তাদের সার্বিক সহযোগিতা করা সব রাজনৈতিক দল ও জনগণের নৈতিক দায়িত্ব।

যথাসময়ে অভীষ্ট সংস্কার কর্মসূচি সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়ন করে যাতে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে গণতন্ত্র উত্তরণের পথ সুগম হয়, এমন মন্তব্যও করেন ড. কামাল হোসেন।

এ সময় গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক ড. মিজানুর রহমান বলেন, সংস্কারের নামে এখন কেবল সময়ক্ষেপণ করা হচ্ছে, বিরাজনীতীকরণের অপচেষ্টাও হচ্ছে এখন, জন আকাঙ্ক্ষার ভিত্তিতে জনপ্রশাসন, বিচার প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসনের সংস্কার করতে এক, দুই মাস সময়ই যথেষ্ট।

তিনি আরও বলেন, গত বছরের জুলাই, আগস্টে গণমানুষের যে জাগরণ তৈরি হয়েছে, তার আলোকে জাতীয় ঐক্য ধরে রাখতে হবে, তবেই আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় মানবিক বাংলাদেশ নির্মাণ করতে পারব।

বাংলাদেশ জাসদের সভাপতি শরীফ নুরুল আম্বিয়া বলেন, দেশে যদি নির্বাচন না হয়, দীর্ঘদিন ধরে যদি একটা অনির্বাচিত সরকার ক্ষমতায় থাকে তবে জবাবদিহিতার জায়গা থাকে না, তাই মানুষের মনে টেকসই গণতন্ত্রের প্রশ্ন উঠেছে। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় একটি গণতান্ত্রিক প্লাটফর্ম গঠনে বড় ভূমিকা রাখতে পারেন।

ড. কামাল হোসেন গণতন্ত্রের আলোকবর্তিকা হয়ে আলো ছড়িয়ে যাবেন বলেও তিনি মনে করেন।

এ সময় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ১২ দলীয় জোটের প্রধান ও জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা।

নিউজটি শেয়ার করুন

দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সুযোগ তৈরি হয়েছে: ড. কামাল হোসেন

আপডেট সময় : ১১:৫১:৪০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫

চব্বিশের ছাত্র-জনতার গণ-আন্দোলনের মধ্য দিয়ে দেশে গণতন্ত্র ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার এক নতুন সুযোগ তৈরি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের সংবিধান প্রণেতা, গণফোরামের ইমেরিটাস সভাপতি ড. কামাল হোসেন।

রোববার (২৭ এপ্রিল) জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে বাংলাদেশের সংবিধান প্রণেতা, গণফোরামের ইমেরিটাস সভাপতি ড. কামাল হোসেনের ৮৮তম জন্মদিন উৎসব উপলক্ষ্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ড. কামাল হোসেন লিখিত বক্তব্যে বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীনতার মূল লক্ষ্য ছিল গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা ও শোষণমুক্ত সমাজ গড়ে তোলা। কিন্তু বিগত ৫৪ বছরে তা অর্জনে আমরা ব্যর্থ হয়েছি। ২৪-এর ছাত্র-জনতার গণ-আন্দোলনের মধ্য দিয়ে দেশে গণতন্ত্র ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার এক নতুন সুযোগ তৈরি হয়েছে।

তিনি বলেন, দেশের জনগণ স্বপ্ন দেখছে স্বাধীন ও বৈষম্যমুক্ত এক নতুন বাংলাদেশের। কোনো অশুভ শক্তি বা ষড়যন্ত্র যেন এই রক্তস্নাত বিজয় ও মহান মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্নের বাংলাদেশ বিনির্মাণে বাধা সৃষ্টি করতে না পারে, এ ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। বর্তমান পরিস্থিতিতে ছাত্র-জনতার যে ঐক্য গড়ে উঠেছে, তা দেশ গড়ার কাজে নতুন দিগন্ত তৈরি হবে বলেও আশা ব্যক্ত করেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, আমাদের মনে রাখতে হবে, বিগত সময়ে রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো দলীয়করণের ফলে প্রায় অকার্যকর হয়ে পড়েছিল। এসব প্রতিষ্ঠানগু সংস্কার করতে এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করতে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ব্যক্তিত্ব নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রতিষ্ঠা হয়েছে, তাদের সার্বিক সহযোগিতা করা সব রাজনৈতিক দল ও জনগণের নৈতিক দায়িত্ব।

যথাসময়ে অভীষ্ট সংস্কার কর্মসূচি সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়ন করে যাতে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে গণতন্ত্র উত্তরণের পথ সুগম হয়, এমন মন্তব্যও করেন ড. কামাল হোসেন।

এ সময় গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক ড. মিজানুর রহমান বলেন, সংস্কারের নামে এখন কেবল সময়ক্ষেপণ করা হচ্ছে, বিরাজনীতীকরণের অপচেষ্টাও হচ্ছে এখন, জন আকাঙ্ক্ষার ভিত্তিতে জনপ্রশাসন, বিচার প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসনের সংস্কার করতে এক, দুই মাস সময়ই যথেষ্ট।

তিনি আরও বলেন, গত বছরের জুলাই, আগস্টে গণমানুষের যে জাগরণ তৈরি হয়েছে, তার আলোকে জাতীয় ঐক্য ধরে রাখতে হবে, তবেই আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় মানবিক বাংলাদেশ নির্মাণ করতে পারব।

বাংলাদেশ জাসদের সভাপতি শরীফ নুরুল আম্বিয়া বলেন, দেশে যদি নির্বাচন না হয়, দীর্ঘদিন ধরে যদি একটা অনির্বাচিত সরকার ক্ষমতায় থাকে তবে জবাবদিহিতার জায়গা থাকে না, তাই মানুষের মনে টেকসই গণতন্ত্রের প্রশ্ন উঠেছে। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় একটি গণতান্ত্রিক প্লাটফর্ম গঠনে বড় ভূমিকা রাখতে পারেন।

ড. কামাল হোসেন গণতন্ত্রের আলোকবর্তিকা হয়ে আলো ছড়িয়ে যাবেন বলেও তিনি মনে করেন।

এ সময় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ১২ দলীয় জোটের প্রধান ও জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা।