‘বিশ্বের সব দেশের সঙ্গেই বাংলাদেশের সুসম্পর্ক বজায় আছে’

- আপডেট সময় : ১১:৪৬:২৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫
- / ৩৪৭ বার পড়া হয়েছে

গণহত্যার দায়ে চলতি মাসের শেষে বা আগামী মাসের শুরুতেই শেখ হাসিনার বিচার শুরু হতে পারে। শেখ হাসিনাকে ফেরত দেয়ার ব্যাপারে ভারত সরকারকে এরইমধ্যে চিঠি দেয়া হয়েছে। কাতার ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরাকে দেয়া সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। এ সময় তিনি বাংলাদেশের নির্বাচন, অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার, বিভিন্ন ইস্যুতে রাজনৈতিক দলের মতামত নিয়েও কথা বলেন।
সম্প্রতি কাতার সফরে গিয়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের নানা পরিকল্পনা ও বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার সঙ্গে বিস্তারিত কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহম্মদ ইউনূস। যেখানে আগামী নির্বাচন, বিভিন্ন ইস্যুতে রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত, সংস্কার, রোহিঙ্গা ইস্যু, পতিত সরকারের নেতাকর্মীদের বিচার প্রক্রিয়া নিয়েও কথা বলেন তিনি। এছাড়া, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনসহ বিশ্বের সব দেশের সঙ্গেই বাংলাদেশের সুসম্পর্ক বজায় আছে বলেও জানান প্রধান উপদেষ্টা।
আল জাজিরাকে তিনি জানান, পতিত আওয়ামী লীগ সরকার গণহত্যা, গুম, খুনসহ যেসব অপরাধ ঘটিয়েছে তার প্রমাণ উঠে এসেছে জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থার প্রতিবেদনে। সম্প্রতি বিমসটেক সম্মেলনে শেখ হাসিনাকে ফেরত দিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রতি আহ্বানও জানিয়েছেন ড. ইউনূস। বলেন, চলতি মাসের শেষে বা আগামী মাসের প্রথমদিকে শুরু হতে পারে শেখ হাসিনার বিচার।
ড. ইউনূস বলেন, ‘বিমসটেক সম্মেলনে নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে শেখ হাসিনার বিষয়ে কথা হয়েছে। ভারত তাকে আশ্রয় দিয়েছে সে বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের তেমন আপত্তি নেই। তবে সেখানে বসে তিনি কোনো ধরনের বক্তব্য দিতে পারবেন না। কারণ এতে বাংলাদেশে অস্থিতিশীল অবস্থা তৈরি হয়।’
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, সংস্কার অন্তর্বর্তী সরকারের অন্যতম এজেন্ডা। ড. ইউনূস জানান, বিভিন্ন খাতের সংস্কারগুলো জনগণ ও রাজনৈতিক দলগুলোর মতামতের ভিত্তিতেই চূড়ান্ত করা হবে। যেসব সংস্কারের বিষয়ে দলমত নির্বিশেষে সবাই একমত হবে, সেটিই গ্রহণ করা হবে। রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিমতের বিষয়টিও বিবেচনায় নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা আরও জানান, সংস্কারের বিষয়ে বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল যদি রাজি হয় তাহলে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। বলেন, আগামী জুনের মধ্যেই নির্বাচন হবে, এর বাইরে একদিনও সময়ে নেবে না অন্তর্বর্তী সরকার। এছাড়াও, নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অংশ নেয়া বা না নেয়া দলটির পাশাপাশি নির্বাচন কমিশন ও অন্যান্য দলের উপর নির্ভর করছে বলেও উল্লেখ করেন ড. ইউনূস।
তিনি বলেন, ‘নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই নির্বাচন হবে। বিশাল একটি অংশের সংস্কারের পর নির্বাচন দিলে আগামী জুনে এবং ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন দিলে সংস্কারের একটি ছোট অংশ বাস্তবায়ন করা হবে। বাকি সংস্কার নির্বাচনের পরে হবে। আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিতে চায় কিনা সে বিষয়ে তারা এখনো আমাদের কিছু জানায়নি। নির্বাচন কমিশন কি সিদ্ধান্ত নেয় তার ওপর নির্ভর করছে। এছাড়া, অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর মতামতের ভিত্তিতেই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’
এ সময় প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, আগামীর বাংলাদেশের কোনো ফ্যাসিস্টের উপস্থিতি দেখতে চান না তিনি। তবে ভালো নেতা বেছে নেয়া কঠিন। তবে এমন একটি সিস্টেম দাঁড় করানো হবে যেখানে কোনো নেতা চাইলেও দুর্নীতিবাজ হয়ে উঠতে পারবেন না। এটিই অন্তর্বর্তী সরকারে অন্যতম লক্ষ্য।