ঢাকা ০২:৪৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ১৪ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

‘মুক্তিযুদ্ধের ভিত্তিকে অস্বীকার করা হয়েছে বাহাত্তরের সংবিধানে’

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৪:৫০:৪৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫
  • / ৩৪৭ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ ছিল ঐক্যের ভিত্তি। সেই ঐক্যকে অস্বীকার করা হয়েছে ১৯৭২ সালের সংবিধানে।

রোববার (২৭ এপ্রিল) জাতীয় সংসদের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে সংলাপে একথা বলেন তিনি।

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকির নেতৃত্বে দলটির ১০ সদস্যের প্রতিনিধি দল সংলাপে অংশ নেয়।

সংলাপের শুরুতে মুজিবনগর সরকারের ঘোষিত অঙ্গীকার-সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার কথা উল্লেখ করে জোনায়েদ সাকি বলেন, ১৯৭২ সাল থেকে মুক্তিযুদ্ধের সময় যে প্রতিশ্রুতি তৈরি হয়েছিল, যা একটি ঐক্য গঠন করেছিল, তা অনুসরণ করে দেশ গঠিত হয়নি।

তিনি বলেন, দেশের পুনর্গঠনে সংবিধান একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, কিন্তু সেই সংবিধানে ১৯৭১ সালের ঐক্যের ভিত্তি অস্বীকার করা হয়েছে।

জোনায়েদ সাকি বলেন, জনগণের হাতে ক্ষমতা ন্যস্ত থাকলে রাষ্ট্রের কেন্দ্রবিন্দু জনগণ। তবে, যদি রাষ্ট্র জনগণকে অংশগ্রহণ করাতে ব্যর্থ হয়, তাহলে শাসকের অধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হয় এবং কর্তৃত্ববাদ, ফ্যাসিবাদ, স্বৈরতন্ত্রের সৃষ্টি হয়।

তিনি অভিযোগ করেন, ১৯৭২ সাল থেকে রাষ্ট্র পুনর্গঠন একদল লুটেরার হাতে বন্দি ছিল এবং তাদের শাসন টিকিয়ে রাখতে জনগণের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টির চেষ্টা হয়েছে।

দেশে জনগণের সম্মতি ছাড়া ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী করার চেষ্টা এবং রাষ্ট্র ব্যবহারের প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, এই রাষ্ট্রের ক্ষমতা কাঠামো যেহেতু স্বৈরতান্ত্রিক ছিল, ফলস্বরূপ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ একটি ফ্যাসিবাদি রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে।

জোনায়েদ সাকি আরও বলেন, আমরা দেখেছি, কীভাবে জনগণের বিভাজন তৈরি করে সামাজিক সংকট সৃষ্টি করা হয়েছে। রাজনৈতিকভাবে শাসন টিকিয়ে রাখতে গুম, খুন এবং বিরোধী দলের ওপর নির্যাতন চালানো হয়েছে।

তিনি জানান, ৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে লাখো মানুষের আত্মত্যাগের ভিত্তিতেই রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং আগস্টে গুম-খুনের মাধ্যমে সেই ঐতিহাসিক সত্যকে আবারও প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে।

জুলাই গণঅভ্যুত্থান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটি নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের আকাঙ্খা সৃষ্টি করেছে এবং সংস্কার ঐক্যমতের মাধ্যমে অভ্যুত্থান ঘটেছে।

তিনি আরও বলেন, জাতীয় সনদ তৈরি করতে অংশীজনদের ঐকমত্য প্রয়োজন, এবং সেই ঐকমত্যের ভিত্তিতে রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রূপান্তর ও নতুন বন্দোবস্তে যাওয়া সম্ভব হবে।

সংলাপে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, কমিশন সদস্য সফর রাজ হোসেন, ড. বদিউল আলম মজুমদার, এবং ড. ইফতেখারুজ্জামান।

নিউজটি শেয়ার করুন

‘মুক্তিযুদ্ধের ভিত্তিকে অস্বীকার করা হয়েছে বাহাত্তরের সংবিধানে’

আপডেট সময় : ০৪:৫০:৪৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ ছিল ঐক্যের ভিত্তি। সেই ঐক্যকে অস্বীকার করা হয়েছে ১৯৭২ সালের সংবিধানে।

রোববার (২৭ এপ্রিল) জাতীয় সংসদের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে সংলাপে একথা বলেন তিনি।

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকির নেতৃত্বে দলটির ১০ সদস্যের প্রতিনিধি দল সংলাপে অংশ নেয়।

সংলাপের শুরুতে মুজিবনগর সরকারের ঘোষিত অঙ্গীকার-সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার কথা উল্লেখ করে জোনায়েদ সাকি বলেন, ১৯৭২ সাল থেকে মুক্তিযুদ্ধের সময় যে প্রতিশ্রুতি তৈরি হয়েছিল, যা একটি ঐক্য গঠন করেছিল, তা অনুসরণ করে দেশ গঠিত হয়নি।

তিনি বলেন, দেশের পুনর্গঠনে সংবিধান একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, কিন্তু সেই সংবিধানে ১৯৭১ সালের ঐক্যের ভিত্তি অস্বীকার করা হয়েছে।

জোনায়েদ সাকি বলেন, জনগণের হাতে ক্ষমতা ন্যস্ত থাকলে রাষ্ট্রের কেন্দ্রবিন্দু জনগণ। তবে, যদি রাষ্ট্র জনগণকে অংশগ্রহণ করাতে ব্যর্থ হয়, তাহলে শাসকের অধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হয় এবং কর্তৃত্ববাদ, ফ্যাসিবাদ, স্বৈরতন্ত্রের সৃষ্টি হয়।

তিনি অভিযোগ করেন, ১৯৭২ সাল থেকে রাষ্ট্র পুনর্গঠন একদল লুটেরার হাতে বন্দি ছিল এবং তাদের শাসন টিকিয়ে রাখতে জনগণের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টির চেষ্টা হয়েছে।

দেশে জনগণের সম্মতি ছাড়া ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী করার চেষ্টা এবং রাষ্ট্র ব্যবহারের প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, এই রাষ্ট্রের ক্ষমতা কাঠামো যেহেতু স্বৈরতান্ত্রিক ছিল, ফলস্বরূপ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ একটি ফ্যাসিবাদি রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে।

জোনায়েদ সাকি আরও বলেন, আমরা দেখেছি, কীভাবে জনগণের বিভাজন তৈরি করে সামাজিক সংকট সৃষ্টি করা হয়েছে। রাজনৈতিকভাবে শাসন টিকিয়ে রাখতে গুম, খুন এবং বিরোধী দলের ওপর নির্যাতন চালানো হয়েছে।

তিনি জানান, ৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে লাখো মানুষের আত্মত্যাগের ভিত্তিতেই রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং আগস্টে গুম-খুনের মাধ্যমে সেই ঐতিহাসিক সত্যকে আবারও প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে।

জুলাই গণঅভ্যুত্থান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটি নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের আকাঙ্খা সৃষ্টি করেছে এবং সংস্কার ঐক্যমতের মাধ্যমে অভ্যুত্থান ঘটেছে।

তিনি আরও বলেন, জাতীয় সনদ তৈরি করতে অংশীজনদের ঐকমত্য প্রয়োজন, এবং সেই ঐকমত্যের ভিত্তিতে রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রূপান্তর ও নতুন বন্দোবস্তে যাওয়া সম্ভব হবে।

সংলাপে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, কমিশন সদস্য সফর রাজ হোসেন, ড. বদিউল আলম মজুমদার, এবং ড. ইফতেখারুজ্জামান।