উত্তেজনার মধ্যেই দু’দেশের অস্ত্র মজুতে হিড়িক

- আপডেট সময় : ১১:৩৯:৪৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫
- / ৩৪২ বার পড়া হয়েছে

যুদ্ধে জড়ানোর শঙ্কার মধ্যেই ফ্রান্সের কাছ থেকে ২৬টি রাফায়েল জেট কেনার চুক্তি সই করলো ভারত। অপরদিকে, চীন থেকে শক্তিশালী পিএল-ফিফটিন মিসাইল পৌঁছেছে পাকিস্তানে। এমন পরিস্থিতিতে দুই দেশকেই সংযত আচরণের আহ্বান জানিয়েছে চীন ও তুরস্ক।
পেহেলগামে হামলার পর ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে প্রতিনিয়ত বাড়ছে উত্তেজনা। শঙ্কা রয়েছে ২৬ বছর পর যুদ্ধে জড়াতে পারে দুই দেশ। এমন পরিস্থিতি নিজেদের সমরাস্ত্রের ভাণ্ডার শক্তিশালী করলো ভারত।
গতকাল (সোমবার, ২৮ এপ্রিল) ২৬টি রাফায়েল যুদ্ধবিমান কিনতে প্যারিসের সঙ্গে চুক্তি সই করেছে নয়াদিল্লি। ৭৪০ কোটি ডলারের এই চুক্তিতে ২২টি সিঙ্গেল সিটার ও ৪টি টুইন সিটার ফাইটার জেট যুক্ত হবে ভারতীয় নৌবাহিনীতে। বিমানবাহিনীতে ৩৬ রাফায়েল যুদ্ধবিমান থাকলেও নৌবাহিনী ব্যবহার করে রাশিয়ার মিগ ২৯ জেট। ২০৩০ সাল নাগাদ সবকটি যুদ্ধবিমান সরবরাহ করবে ফ্রান্স।
উল্টোদিকে বসে নেই পাকিস্তানও। যুদ্ধের শঙ্কার মধ্যেই পাকিস্তানকে পিএল-১৫ মিসাইল সরবরাহ করেছে চীন। ইউরেশিয়ান টাইমসের প্রতিবেদন বলছে, বিশেষ এই মিসাইলটি ব্যবহার করে খোদ চীনের বিমানবাহিনী। অত্যাধুনিক মিসাইলটির রেঞ্জ ও গতি ভারতের রাফায়েল জেটে ব্যবহৃত ক্ষেপণাস্ত্রের চেয়ে বেশি।
পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে দুই পক্ষকেই সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে চীন ও তুরস্ক। যদিও তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান ও চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই-এর কণ্ঠে ছিল ইসলামাবাদের প্রতি সমর্থন।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান বলেন, ‘পাকিস্তানের জনগণের প্রতি আমরা সমর্থন ব্যক্ত করেছি। আমরা বিশ্বের কোনো প্রান্তেই সংঘাত চাই না। উত্তেজনা প্রশমনের জন্য জরুরিভিত্তিতে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পাকিস্তান ও ভারতের নেতৃত্বকে আহ্বান জানাচ্ছি। সম্পূর্ণ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।’
এদিকে পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দাবি, যেকোনো মুহূর্তে পাকিস্তানে হামলা চালাতে পারে ভারত। জানান, স্থল, নৌ কিংবা আকাশসীমায় যেকোনো ধরনের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে সামরিকবাহিনী।
পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মুহাম্মাদ আসিফ বলেন, ‘পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর সঙ্গে ভারতের সংঘাত আসন্ন। সব ধরনের শঙ্কা মোকাবিলায় আমরা প্রস্তুত। স্থল, নৌ কিংবা আকাশসীমায় কেউ ঢুকে পড়ার চেষ্টা করলে আমরা ভারতকে শক্ত জবাব দিতে তৈরি আছি।’
যদিও পেহেলগামে হামলার পেছনে পাকিস্তান সরকারের মদদ রয়েছে বলে মনে করছে বিজেপি ও কংগ্রেসের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা। সোমবার ভারত ও ভারতের বাইরে বিভিন্ন দেশের পাকিস্তান দূতাবাসের আয়োজন করা হয় বিক্ষোভ।
বিক্ষোভকারীদের মধ্যে একজন বলেন, ‘পাকিস্তান ও তাদের সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আমরা আন্দোলন করছি। শত্রুর বিরুদ্ধে শক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে সরকারের কাছে আবেদন জানাচ্ছি।’
অন্য একজন বলেন, ‘ভারত সরকারকে বলছি, আপনারা দ্রুত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করুন। যাতে তারা এমন হামলার দুঃসাহস না দেখাতে পারে।’
পেহেলগামে হামলার পেরিয়ে গেছে ৬ দিন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে কাশ্মীরের পরিস্থিতি। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলার পাশাপাশি বাড়ছে পর্যটকদের আনাগোনা। স্বভাবসুলভ আতিথেয়তায় দেশ-বিদেশের পর্যটকদের স্বাগত জানাচ্ছেন সাধারণ কাশ্মীরিরা।