নয়াদিল্লির চাপ সামলাতে পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী কারাবন্দি ইমরান খানকে মুক্তি দিয়ে আলোচনায় টেবিলে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানিয়েছে প্রধান বিরোধী দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ। ইমরান খানের উপস্থিতিতে বহুদলীয় একটি বৈঠকেরও প্রস্তাব দিয়েছে ইমরান খানের দল পিটিআই। যদিও ক্ষমতাসীনদের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, জাতীয় ঐক্য নয় দেশের ক্রান্তিলগ্নে সরকারকে চাপে রাখাই পিটিআইয়ের আসল উদ্দেশ্য।
ভারত-পাকিস্তান দ্বন্দ্বের আঁচ পৌঁছেছে ইসলামাবাদের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতেও। কাশ্মীরে পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর হামলার জেরে নতুন করে শুরু হওয়া ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা সামাল দিতে কারাবন্দি ইমরান খানকে আলোচনার টেবিলে দেখতে চায় পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ।
পিটিআই নেতাদের দাবি, দেশের ক্রান্তিলগ্নে অকুতোভয় নেতা ইমরানের কণ্ঠস্বর শুনতে উদগ্রীব সাধারণ মানুষ। জনগণের নিরাপত্তার প্রশ্নে বহুদলীয় কনফারেন্সেরও ডাক দিয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর দল পিটিআই। সেখানে কারাবন্দি ইমরান খানের উপস্থিতির দাবি তুলছে প্রধান বিরোধী দল।
দেশটির পার্লামেন্টের উচ্চ কক্ষ সিনেটের অধিবেশনে পিটিআইয়ের আইনপ্রণেতা আলি জাফর বলেন, ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রীর মুক্তি পাকিস্তানের রাজনৈতিক ঐক্যের একটি উদাহরণ হতে পারে, যা ইসলামাবাদের শক্তি হিসেবে গণ্য হবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘রাজনৈতিক হামলাকে সন্ত্রাসী হামলার তকমা দিয়ে ভারতের মোদী প্রশাসন যে দোষারোপের রাজনীতি করছেন তা বহুদলীয় ঐক্য দিয়ে মোকাবিলার প্রস্তাব দিয়ে পিটিআই নেতারা দাবি করেন, ইমরান খানের এক ডাকে ১ কোটি মানুষ রাজপথে নেমে আসবে। তাই ওয়াঘা সীমান্ত অভিমুখে যে পদযাত্রার পরিকল্পনা চলছে তা সফল করতে ইমরানকে টেলিভিশনে ভাষণের অনুমতি দেয়া উচিত বলেও সিনেটে উল্লেখ করে বিরোধী দল।’
যদিও কারাবন্দি ইমরান খানের বিষয়ে কোনো ধরনের ছাড় দিচ্ছেন না ক্ষমতাসীন শেহবাজ শরীফের সরকার। মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) পিটিআইয়ের আইনজীবী ফয়সাল চৌধুরী অভিযোগ করেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে পরিবার ও ব্যক্তিগত আইনজীবীর সাথে দেখা করতে দেয়া হচ্ছে না।
ফয়সাল আরও জানান, সরকারের সাথে বিরোধ থাকলেও আদিয়ালা কারাগার থেকেই ভারতের বিরুদ্ধে একতাবদ্ধ থাকার বার্তা দিয়েছেন ইমরান।
এদিকে দ্বিতীয়বারের মতো কারাগারে ভাইকে দেখতে এসে ইমরান খানের বোন আলীমা খান দাবি করেছেন, শেহবাজ শরীফ ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার প্রশমনে তেমন গুরুত্ব দিচ্ছেন না। যদি সত্যিই গুরুত্ব দিতেন তাহলে নিজেই আদিয়ালার এসে ইমরান খানের পরামর্শ চাইতেন।
সরকারের সূত্র বলছে, পেহেলগাম হামলার জেরে তৈরি হওয়া অস্থিরতার মধ্যে সরকারকে চাপ দিয়ে ইমরান খানকে মুক্ত করতে চায় পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ। যদিও ইমরান খানের দল বিশ্বাস করে উদ্দেশ্য প্রণোদিত মামলায় আটক সাবেক প্রধানমন্ত্রীর নিঃশর্ত মুক্তি এখন জাতীয় দাবিতে পরিণত হয়েছে।