সেনাবাহিনীকে ফুল অপারেশনাল ফ্রিডম প্রদান
ভারতকে উপযুক্ত জবাব দেয়ার সক্ষমতা ও প্রস্তুতি আছে পাকিস্তানের?

- আপডেট সময় : ১১:২১:৫১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫
- / ৩৪২ বার পড়া হয়েছে

পেহেলগাম হামলায় জড়িতদের নিশ্চিহ্ন করতে চলমান সন্ত্রাসবাদ বিরোধী অভিযানে এবার ভারতীয় সেনাবাহিনীকে পূর্ণ ক্ষমতা বা ফুল অপারেশনাল ফ্রিডম দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এখন থেকে হামলার লক্ষ্যবস্তু, অভিযানের ধরণ ও সময় এই তিনটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয়ার পূর্ণ স্বাধীনতা পাবেন ভারতীয় সেনারা। প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়ার সূত্র বলছে, রাষ্ট্রের উচ্চপর্যায়ের এই বৈঠক ইঙ্গিত দেয়, পাকিস্তানের সাথে দীর্ঘস্থায়ী সংঘাতে জড়ানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে ভারত।
তাহলে কী এবার কাশ্মীর ইস্যুতে যুদ্ধে জড়াচ্ছে ভারত ও পাকিস্তান? আচমকা বৈঠক ডেকে এবার এমন আশঙ্কার জন্ম দিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
মঙ্গলবার নয়াদিল্লিতে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে একের পর আসতে শুরু করেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল এবং চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ জেনারেল অনিল চৌহান। শুরু হয় বৈঠক। প্রায় দেড় ঘণ্টা পর প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়া জানায়, কাশ্মীরে চলমান অভিযানে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীকে পূর্ণ ক্ষমতা দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদি। শুধু তাই নয় অভিযানের দিনক্ষণ, লক্ষ্যবস্তু ও হামলার ধরণও নির্ধারণ করবেন সেনাবাহিনীর সদস্যরা।
ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি নিশ্চিত করেছে, পেহেলগাম হামলার পর ৭ দিনের ব্যবধানে এ নিয়ে দুইবার প্রতিরক্ষা বিভাগের কর্তাব্যক্তিদের সাথে বৈঠক করলেন মোদি।
এএনআই নিউজ বলছে, নিজ বাসভবনে মোদি যখন প্রতিরক্ষা দপ্তরের সাথে আলোচনায় বসেছেন তখন, আলাদা একটি বৈঠক করেছে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন ইউনিয়ন হোম সেক্রেটারি গোভিন্দ মোহান, বিএসএফের ডিরেক্টর জেনারেল, আসাম রাইফেলস ও জাতীয় নিরাপত্তা বাহিনী, কেন্দ্রীয় পুলিশ ফোর্সের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা। বৈঠক হয়েছে উত্তর ও দক্ষিণ ভারতের নানা ব্লকে।
এনডিটিভি জানায়, মোদির বাসভবনে প্রতিরক্ষা দপ্তরের বৈঠক শেষে সেখানে উপস্থিত হয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, রাষ্ট্রীয় সমাজসেবক সংঘের প্রধান ও বিজেপি’র শীর্ষ নেতারা।
কাশ্মীর ইস্যুতে সর্বদলীয় সমর্থন পাচ্ছে ক্ষমতাসীন বিজেপি। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠিও পাঠিয়েছেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে। ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর আরও ইঙ্গিত দেয়, নয়াদিল্লির এই যুদ্ধং দেহি আচরণে সমর্থন আছে দেশের জনগণেরও।
এমন প্রেক্ষাপটে সেনাবাহিনীকে পূর্ণ ক্ষমতা দেয়া কিংবা রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার সাথে জড়িতদের সাথে দফায় দফায় মোদির বৈঠক ইঙ্গিত দেয়, অনেকটা সংঘাতের পথেই হাঁটছে ভারত।
রণক্ষেত্রে ভারতকে উপযুক্ত জবাব দেয়ার সক্ষমতা ও প্রস্তুতি দু’টোই আছে পাকিস্তানের। পেহেলগাম হামলা ইস্যুতে শেহবাজ শরিফের সরকারও পাশে পাচ্ছে প্রধান বিরোধী পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফকে। এছাড়া, সংঘাত বাঁধতে পারে এমন আশঙ্কায় রাশিয়া ও চীনের সহায়তাও চেয়েছে ইসলামাবাদ। যদিও টাইম অব ইন্ডিয়া বলছে, পাকিস্তানের কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে মস্কো। ক্রেমলিনের আস্থা কিছুটা নয়াদিল্লিমুখী এমনটাই দাবি করছে তারা।
অন্যদিকে, গালওয়ান ভ্যালিতে চীনের সাথে সংঘাতের পর সীমান্তে সেনা মোতায়েন করতে হয়েছে ভারতকে। ফলে চীন যদি পাকিস্তানকে সহায়তা করে তাহলে বিপদে পড়ে যাবে ভারত। একদিকে কাশ্মীর আরেক দিকে চীন-ভারত সীমান্ত- দু’টি আলাদা অঞ্চলে সেনা উপস্থিতি বাড়াতে হবে ভারতকে। এতে করে অতিরিক্ত সুবিধা পাবে পাকিস্তানও।