বেড়েছে মুরগির দাম, সিন্ডিকেটের দখলে বাজার

- আপডেট সময় : ১২:২৬:৪৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২ মে ২০২৫
- / ৩৪৯ বার পড়া হয়েছে

গ্রীষ্মকালীন সবজির পর্যাপ্ত সরবরাহ না থাকায় প্রায় প্রতি সপ্তাহেই বাড়ছে বিভিন্ন সবজির দাম। এর সঙ্গে নতুন করে যোগ হয়েছে মুরগির বাজারের ঊর্ধ্বগতি। যা ভোক্তাদের অস্বস্তি আরও বাড়িয়েছে।
শুক্রবার (২ মে) রাজধানীর বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র।
উত্তরার আজমপুর, খিলক্ষেত, গুলশান, বাড্ডা, মিরপুর, রামপুরা, মালিবাগ বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বেশিরভাগ সবজিই এখন ৬০ টাকার ওপরে বিক্রি হচ্ছে। ৭০ টাকার নিচে পছন্দের কোনো সবজি মিলছে না। হাতে গোনা কয়েকটি সবজি এর ব্যতিক্রম।
এসব বাজারে গ্রীষ্মকালীন সব ধরনের সবজি গত সপ্তাহের দামেই বিক্রি হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, চাহিদার তুলনার গ্রীষ্মের সবজির সরবরাহ কম থাকায় দাম কিছুটা বাড়তি রয়েছে।
দামের ঊর্ধ্বগতির বিষয়ে ক্রেতারা বলছেন, ব্যবসায়ীরা গরমের সুযোগ নিয়ে সিন্ডিকেট করে সবজির দাম বাড়াচ্ছেন। যার সরাসরি প্রভাব পড়ছে সাধারণ মানুষের পকেটে।
রেজাউল করিম নামের এক ক্রেতা বলেন, সবকিছুর দাম বাড়তি। আমাদের মতো সাধারণ মানুষের শুধু চেয়ে চেয়ে দেখা ছাড়া আর কিছুই করার নেই। বাজারে দাম নিয়ন্ত্রণে সরকারের কঠোর পদক্ষেপের দাবি জানাই।
বাজারগুলোতে বেগুন প্রকারভেদে ৭০ থেকে ৮০ টাকা, করলা ৬০ থেকে ৮০ টাকা, বরবটি ১০০ টাকা, পটল ৭০ থেকে ৮০ টাকা, ধুন্দল ৭০ টাকা, চিচিঙ্গা ৮০ টাকা, কচুর লতি ৮০ থেকে ১০০ টাকা ও কচুরমুখী ১৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
এসব বাজারে সাজনা ১২০ টাকা, ঝিঙা ৮০ টাকা, কাঁচা আম ৪০ টাকা ও কাঁচামরিচ ৬০ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে শীতকালীন সবজি সিম ৮০ থেকে ১২০ টাকা কেজি, ফুলকপি ছোট ৫০ টাকা পিস, প্রতি পিস লাউ বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা, টমেটো ৩০ থেকে ৪০ টাকা, গাজর ৫০ টাকা, মুলা ৬০ টাকা ও শসা ৬০ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে।
এসব বাজারে লেবুর হালি ১০ থেকে ২০ টাকা, ধনেপাতা ১৮০ টাকা কেজি, কাঁচা কলা হালি বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা, চাল কুমড়া ৬০ টাকা পিস ও মিষ্টি কুমড়া ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
বাজারগুলোতে শাকের দামও বেশি দেখা গেছে। লাল শাক ২০ টাকা আঁটি, লাউ শাক ৪০ থেকে ৫০ টাকা, পালং শাক ১৫ টাকা, কলমি শাক ২০ টাকা, পুঁই শাক ৩০ টাকা ও ডাটা শাক দুই আঁটি ২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
এ ব্যাপারে তালতলা বাজারের সবজি বিক্রেতা হানিফ বলেন, সবজির সরবরাহ কম থাকায় দাম বাড়তি রয়েছে। ৬০ টাকার নিচে সবজির কেজি নেই বললেই চলে। প্রতিবছর এই সময় পেঁপে সস্তা থাকে, এ বছর ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে হচ্ছে।
খিলক্ষেত নামা পাড়া এলাকার সবজি বিক্রেতা আনিস বলেন, এই সময়ে সব ধরনের সবজির দামই একটু বেড়ে যায়। ভালো পছন্দের সবজি নিতে হলে ৭০ টাকার নিচে পাওয়া যাচ্ছে না।
এদিকে সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারগুলোতে মুরগির দাম কেজিতে ১০ থেকে ৪০ টাকা বেড়েছে। এসব বাজারে সোনালি কক মুরগি কেজিতে ৪০ টাকা বেড়ে ৩০০ এবং সোনালি হাইব্রিড ২৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। লাল লেয়ার মুরগি ৩২০ টাকা, সাদা লেয়ার ২৭০ টাকা, ব্রয়লার মুরগি কেজিতে ৪০ টাকা কমে ১৯০ টাকা ও দেশি মুরগি ৬৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
এসব বাজারে আলু ২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারগুলোতে দেশি পেঁয়াজ ৬০ টাকা ও ইন্ডিয়ান পেঁয়াজ ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
বাজারগুলোতে আদা ১২০ থেকে ২৮০ টাকা, রসুন দেশি ১০০ টাকা, ইন্ডিয়ান ২২০ থেকে ২৩০ টাকা, দেশি মশুর ডাল ১৪০ টাকা, মুগ ডাল ১৮০ টাকা, ছোলা ১১০ টাকা ও খেসারির ডাল ১৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
এসব বাজারে মিনিকেট চাল প্রকারভেদে ৮২ থেকে ৯২ টাকা, নাজিরশাইল চাল ৮৪ থেকে ৯০ টাকা, স্বর্ণা ৫৫ টাকা ও ২৮ বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকা কেজি দরে।
অন্যদিকে সপ্তাহ ব্যবধানে মাছের বাজার স্থিতিশীল রয়েছে। এসব বাজারে প্রতি কেজি শিং চাষের (আকারভেদে) বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা, রুই দাম বেড়ে (আকারভেদে) ৩৮০ থেকে ৪৫০ টাকা, দেশি মাগুর ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা, মৃগেল ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, চাষের পাঙাস ২০০ থেকে ২৩০ টাকা, চিংড়ি ৭৫০ থেকে ১২০০ টাকা, বোয়াল ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, বড় কাতল ৪০০ থেকে ৫৫০ টাকা, পোয়া ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, পাবদা ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, তেলাপিয়া ২২০ টাকা, চাষের কৈ ২২০ থেকে ২৩০ টাকা, মলা ৫০০ টাকা, বাতাসি ১৩০০ টাকা, টেংরা ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, কাচকি ৫০০ টাকা, পাঁচ মিশালি ২২০ টাকা, রুপচাঁদা ১২০০ টাকা, বড় বাইম ১২০০ থেকে ১৪০০ টাকা, দেশি কৈ ১২০০ টাকা, শোল ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, আইড় ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, বেলে ৮০০ টাকা, কোরাল ৭০০ টাকা ও কাজলি মাছ ৮০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
এসব বাজারে গরুর মাংস প্রতি কেজি ৭৮০ থেকে ৮০০ টাকা, গরুর কলিজা ৮০০ টাকা, গরুর মাথার মাংস ৪৫০ টাকা, গরুর বট ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা ও খাসির মাংস ১২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাজারগুলোতে এক ডজন লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকা, হাঁসের ডিম ২২০ টাকা ও দেশি মুরগির ডিমের হালি ৯০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে।