ঢাকা ১০:২১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০২ মে ২০২৫, ১৯ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

ভারতকে সতর্ক করে যা বললো যুক্তরাষ্ট্র

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১২:১১:০৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২ মে ২০২৫
  • / ৩৫৩ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

কাশ্মীরের পাহলগামে ভয়াবহ হামলার পর ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা চরমে উঠেছে। এই প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স ভারতকে সতর্ক করে বলেছেন, ‘আমরা চাই না এই সন্ত্রাসী হামলার জবাবে ভারত এমন কিছু করে বসে যা অঞ্চলজুড়ে বড় ধরনের সংঘর্ষ ডেকে আনে।’

আজ শুক্রবার (২ মে) টিআরটি গ্লোবাল এক প্রতিবেদনে জানায়, ফক্স নিউজের ‘স্পেশাল রিপোর্ট উইথ ব্রেট বায়ার’ অনুষ্ঠানে এ সতর্কবার্তা দেন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট।

তিনি পাকিস্তানের উদ্দেশে বলেন, ‘যদি পাকিস্তান এই হামলার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকে, তাহলে তাদের উচিত ভারতের সঙ্গে সহযোগিতা করে এই হামলাকারীদের খুঁজে বের করা এবং উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া।’

একদিন আগেই পাকিস্তান সেনাবাহিনী পূর্ব সীমান্তে পূর্ণ মাত্রার যুদ্ধ মহড়া চালিয়েছে। রাষ্ট্রায়ত্ত রেডিও পাকিস্তান জানায়, আধুনিক অস্ত্র এবং সামরিক কৌশল প্রদর্শনের মাধ্যমে সেনারা তাদের যুদ্ধ-প্রস্তুতি তুলে ধরেন।

অন্যদিকে, ভারত পাকিস্তানকে ‘সীমান্ত-পার সন্ত্রাসবাদে’ সহায়তার অভিযোগে অভিযুক্ত করে বলে, কাশ্মীরে পর্যটকদের ওপর ২৬ জনকে হত্যা করা একটি ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসী হামলা।

ইতোমধ্যে ভারত সিন্ধু নদের পানিচুক্তি স্থগিত করেছে, বন্ধ করে দিয়েছে একমাত্র সচল স্থলসীমান্ত এবং পাকিস্তানি নাগরিকদের দেওয়া সব ভিসা বাতিল করেছে।

জবাবে পাকিস্তান ভারতের জন্য ভিসা বন্ধ করে দিয়েছে, পাকিস্তানি আকাশপথে ভারতীয় উড়োজাহাজ চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে এবং সিমলা চুক্তি স্থগিত করেছে—যা ১৯৭২ সালে কাশ্মীর সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধানের লক্ষ্যে স্বাক্ষরিত হয়েছিল।

এই উত্তেজনার প্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রী মার্কো রুবিও এবং জাতিসংঘ দুই পক্ষকেই শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছে। জাতিসংঘের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শন করুন এবং শান্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করুন।’

এদিকে, কাশ্মীরের পাহলগামে হামলার পর ভারতীয় নিরাপত্তাবাহিনী অন্তত ১৫০০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, মোদি সরকার মুসলিম সংগঠন, ইসলামি সাহিত্য ও স্কুলের বিরুদ্ধে দমনপীড়ন চালাচ্ছে। এর ফলে কাশ্মীরজুড়ে নতুন করে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে।

বিভিন্ন শহরে কাশ্মীরি মুসলিম ছাত্রদের উপর হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠীর হামলার খবরও এসেছে।

এদিকে, ভারত সরকার বিতর্কিত অঞ্চলে ৮২ হাজার অ-কাশ্মীরিকে বসবাসের অধিকার দিয়ে ডমিসাইল সার্টিফিকেট ইস্যু করেছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি কাশ্মীরের মুসলিম জনসংখ্যা কমিয়ে দেওয়ার একটি পরিকল্পিত প্রচেষ্টা।

১৯৪৭ সালের স্বাধীনতার পর থেকেই কাশ্মীর নিয়ে তিনটি যুদ্ধ করেছে ভারত ও পাকিস্তান। অঞ্চলটি এখন বিভক্ত—একাংশ পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রণে, আর অন্য অংশ ভারতীয় শাসনের অধীনে। ১৯৮৯ সাল থেকে ভারত-শাসিত কাশ্মীরে স্বাধীনতা বা পাকিস্তানের সঙ্গে একীভূত হওয়ার দাবিতে বিদ্রোহ চলছে। বর্তমানে প্রায় ৫ লাখ ভারতীয় সৈন্য সেখানে মোতায়েন রয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

ভারতকে সতর্ক করে যা বললো যুক্তরাষ্ট্র

আপডেট সময় : ১২:১১:০৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২ মে ২০২৫

কাশ্মীরের পাহলগামে ভয়াবহ হামলার পর ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা চরমে উঠেছে। এই প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স ভারতকে সতর্ক করে বলেছেন, ‘আমরা চাই না এই সন্ত্রাসী হামলার জবাবে ভারত এমন কিছু করে বসে যা অঞ্চলজুড়ে বড় ধরনের সংঘর্ষ ডেকে আনে।’

আজ শুক্রবার (২ মে) টিআরটি গ্লোবাল এক প্রতিবেদনে জানায়, ফক্স নিউজের ‘স্পেশাল রিপোর্ট উইথ ব্রেট বায়ার’ অনুষ্ঠানে এ সতর্কবার্তা দেন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট।

তিনি পাকিস্তানের উদ্দেশে বলেন, ‘যদি পাকিস্তান এই হামলার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকে, তাহলে তাদের উচিত ভারতের সঙ্গে সহযোগিতা করে এই হামলাকারীদের খুঁজে বের করা এবং উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া।’

একদিন আগেই পাকিস্তান সেনাবাহিনী পূর্ব সীমান্তে পূর্ণ মাত্রার যুদ্ধ মহড়া চালিয়েছে। রাষ্ট্রায়ত্ত রেডিও পাকিস্তান জানায়, আধুনিক অস্ত্র এবং সামরিক কৌশল প্রদর্শনের মাধ্যমে সেনারা তাদের যুদ্ধ-প্রস্তুতি তুলে ধরেন।

অন্যদিকে, ভারত পাকিস্তানকে ‘সীমান্ত-পার সন্ত্রাসবাদে’ সহায়তার অভিযোগে অভিযুক্ত করে বলে, কাশ্মীরে পর্যটকদের ওপর ২৬ জনকে হত্যা করা একটি ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসী হামলা।

ইতোমধ্যে ভারত সিন্ধু নদের পানিচুক্তি স্থগিত করেছে, বন্ধ করে দিয়েছে একমাত্র সচল স্থলসীমান্ত এবং পাকিস্তানি নাগরিকদের দেওয়া সব ভিসা বাতিল করেছে।

জবাবে পাকিস্তান ভারতের জন্য ভিসা বন্ধ করে দিয়েছে, পাকিস্তানি আকাশপথে ভারতীয় উড়োজাহাজ চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে এবং সিমলা চুক্তি স্থগিত করেছে—যা ১৯৭২ সালে কাশ্মীর সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধানের লক্ষ্যে স্বাক্ষরিত হয়েছিল।

এই উত্তেজনার প্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রী মার্কো রুবিও এবং জাতিসংঘ দুই পক্ষকেই শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছে। জাতিসংঘের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শন করুন এবং শান্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করুন।’

এদিকে, কাশ্মীরের পাহলগামে হামলার পর ভারতীয় নিরাপত্তাবাহিনী অন্তত ১৫০০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, মোদি সরকার মুসলিম সংগঠন, ইসলামি সাহিত্য ও স্কুলের বিরুদ্ধে দমনপীড়ন চালাচ্ছে। এর ফলে কাশ্মীরজুড়ে নতুন করে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে।

বিভিন্ন শহরে কাশ্মীরি মুসলিম ছাত্রদের উপর হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠীর হামলার খবরও এসেছে।

এদিকে, ভারত সরকার বিতর্কিত অঞ্চলে ৮২ হাজার অ-কাশ্মীরিকে বসবাসের অধিকার দিয়ে ডমিসাইল সার্টিফিকেট ইস্যু করেছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি কাশ্মীরের মুসলিম জনসংখ্যা কমিয়ে দেওয়ার একটি পরিকল্পিত প্রচেষ্টা।

১৯৪৭ সালের স্বাধীনতার পর থেকেই কাশ্মীর নিয়ে তিনটি যুদ্ধ করেছে ভারত ও পাকিস্তান। অঞ্চলটি এখন বিভক্ত—একাংশ পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রণে, আর অন্য অংশ ভারতীয় শাসনের অধীনে। ১৯৮৯ সাল থেকে ভারত-শাসিত কাশ্মীরে স্বাধীনতা বা পাকিস্তানের সঙ্গে একীভূত হওয়ার দাবিতে বিদ্রোহ চলছে। বর্তমানে প্রায় ৫ লাখ ভারতীয় সৈন্য সেখানে মোতায়েন রয়েছে।