ঢাকা ০৩:৪১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৪ মে ২০২৫, ২০ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের শঙ্কা: সীমান্তে বাড়ছে অস্থিরতা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০১:৪৭:৪৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩ মে ২০২৫
  • / ৩৫০ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

পেহেলগাম ইস্যুতে ভারত-পাকিস্তানের পাল্টা-পাল্টি পদক্ষেপে উত্তেজনার পারদ তুঙ্গে। যুদ্ধের শঙ্কা প্রকট হওয়ায় ভারতীয় সীমান্তের কাছে থাকা পাকিস্তানের গ্রামগুলোর বাসিন্দাদের মাঝে বাড়ছে অস্থিরতা। অন্যদিকে, চলমান সংঘাতময় পরিস্থিতিতে মোটেও ভীত নন বলে জানিয়েছেন পাকিস্তান সীমান্ত লাগোয়া ভারতীয় গ্রামবাসী। তবে, সংঘাত বাধলে দু’দেশের বাসিন্দারাই সেনাদের সঙ্গে অংশ নিতে চান লড়াইয়ে।

অত্যাধুনিক মারণাস্ত্রের মহড়া চালিয়ে একে অপরকে যুদ্ধ সক্ষমতার জানান দিচ্ছে ভারত-পাকিস্তান। ২২ এপ্রিল জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে প্রাণঘাতী সন্ত্রাসী হামলা ইস্যুতে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনায় পরাশক্তিধর দু’দেশের মধ্যে তীব্র হচ্ছে যুদ্ধের শঙ্কা। বেশ কয়েকদিন ধরে উভয় পক্ষের সেনাদের মধ্যেও চলছে গোলাগুলি।

এ অবস্থায় বড় ধরনের সংঘাতের আশঙ্কায় ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত এলাকার বাসিন্দাদের মাঝে বাড়ছে অস্থিরতা। বাড়ি থেকে মাত্র ৩০০ গজ দূরে ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত উত্তেজনার বাস্তব চিত্রের কথা তুলে ধরেছেন পাকিস্তানের শিয়ালকোট জেলার হরপাল গ্রামের বাসিন্দারা।

তারা জানান, সীমান্তে গোলাগুলির ঘটনায় তাদের ছোটা-ছুটির ইতিহাস কয়েক দশকের পুরানো। তবে এখন নিজেদের জীবন, ফসলি জমি আর গবাদি পশু নিয়ে শঙ্কিত তারা। তাই নতুন করে যুদ্ধ না বাধুক, এমনটাই প্রত্যাশা তাদের।

এক বাসিন্দা জানান, আমরা ৬০-৭০ বছর ধরে এর সাথে বসবাস করছি, আশা করছি পরিস্থিতি আরও ভালো হবে। তবে পরিস্থিতি ভালো হচ্ছে না এবং ভালো হবেও না বলে মনে হচ্ছে।

আরেক বাসিন্দা বলেন, ‘আমরা যুদ্ধ চাই না। আমরা চাই মানুষ একে অপরকে বুঝুক এবং একসাথে শান্তিতে বসবাস করুক। যুদ্ধের চিন্তাভাবনা তাদের মনে না আসুক। যুদ্ধ হলেও সাধারণ মানুষ যেন নির্যাতিত না হয়।’

দুই দেশের সরকার যদি শেষ পর্যন্ত যুদ্ধে জড়ায় তাহলে সেনাবাহিনীর সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ভারতের বিরুদ্ধে লড়াই করার ব্যাপারে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ পাকিস্তানের মানুষ।

ভক্সপপ: উভয় দেশের সরকারকেই একে অপরের সাথে বসা উচিত। কারণ যুদ্ধ কোনও সমস্যার সমাধান নয়। যদি যুদ্ধ হয়, তাহলে আমরা আমাদের সেনাবাহিনীর সাথে পাশে দাঁড়াব। তাদের সাথে মিলে একসঙ্গে লড়াই করব।

এদিকে পাকিস্তানের সঙ্গে চলমান উত্তেজনার মধ্যেই সীমান্তে থাকা অনেক ভারতীয় গ্রামবাসী অন্যত্র চলে যাওয়ার কথা ভাবছেন। তবে তা খুবই চ্যালেঞ্জিং হবে বলে মনে করছেন তারা।

এক গ্রামবাসী বলেন, ‘সরকার নির্দেশ দিলে আমাদের গ্রাম খালি করতে হবে। এটা খুবই চ্যালেঞ্জিং, কারণ আমাদের গবাদি পশুগুলো মারা যেতে পারে।’

রাজস্থানের ভারত-পাকিস্তান সীমান্তবর্তী গ্রামের অনেকে বলছেন, যুদ্ধ নিয়ে মোটেও ভীত নন তারা। ভারতীয় সেনাদের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যুদ্ধ করতে চান অঞ্চলটির বাসিন্দারা।

এক অধিবাসী বলেন, ‘যদি যুদ্ধ হয়, তাহলে আমরা ভারতীয় সেনাবাহিনীর সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে হাঁটব এবং তাদের পথ দেখাব। সেনাদের খাদ্য, পানীয় এবং প্রয়োজনীয় সব কিছু দিয়ে সাহায্য করব। আমরা ভীত নই।’

পেহেলগাম ইস্যুতে কোনো তথ্য প্রমাণ ছাড়াই দোষারোপ করে ভারত উত্তেজনার সূত্রপাত করেছে বলে অভিযোগ পাকিস্তানের। দেশটি আগ বাড়িয়ে যুদ্ধে জড়াতে চায়না, তবে নয়াদিল্লি শুরু করলে কঠোর জবাব দেয়ার হুঁশিয়ারি ইসলামাবাদের। এমন উত্তেজনার মধ্যেই বৃহস্পতিবার সামনে এসেছে পেহেলগামের ঘটনায় ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা র-এর সংশ্লিষ্টতার গোপন নথি। যা টেলিগ্রামে ফাঁস হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে। এর একদিন পরই হামলার ঘটনায় উল্টো পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই জড়িত বলে দাবি এনআইএ’র।

নিউজটি শেয়ার করুন

ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের শঙ্কা: সীমান্তে বাড়ছে অস্থিরতা

আপডেট সময় : ০১:৪৭:৪৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩ মে ২০২৫

পেহেলগাম ইস্যুতে ভারত-পাকিস্তানের পাল্টা-পাল্টি পদক্ষেপে উত্তেজনার পারদ তুঙ্গে। যুদ্ধের শঙ্কা প্রকট হওয়ায় ভারতীয় সীমান্তের কাছে থাকা পাকিস্তানের গ্রামগুলোর বাসিন্দাদের মাঝে বাড়ছে অস্থিরতা। অন্যদিকে, চলমান সংঘাতময় পরিস্থিতিতে মোটেও ভীত নন বলে জানিয়েছেন পাকিস্তান সীমান্ত লাগোয়া ভারতীয় গ্রামবাসী। তবে, সংঘাত বাধলে দু’দেশের বাসিন্দারাই সেনাদের সঙ্গে অংশ নিতে চান লড়াইয়ে।

অত্যাধুনিক মারণাস্ত্রের মহড়া চালিয়ে একে অপরকে যুদ্ধ সক্ষমতার জানান দিচ্ছে ভারত-পাকিস্তান। ২২ এপ্রিল জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে প্রাণঘাতী সন্ত্রাসী হামলা ইস্যুতে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনায় পরাশক্তিধর দু’দেশের মধ্যে তীব্র হচ্ছে যুদ্ধের শঙ্কা। বেশ কয়েকদিন ধরে উভয় পক্ষের সেনাদের মধ্যেও চলছে গোলাগুলি।

এ অবস্থায় বড় ধরনের সংঘাতের আশঙ্কায় ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত এলাকার বাসিন্দাদের মাঝে বাড়ছে অস্থিরতা। বাড়ি থেকে মাত্র ৩০০ গজ দূরে ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত উত্তেজনার বাস্তব চিত্রের কথা তুলে ধরেছেন পাকিস্তানের শিয়ালকোট জেলার হরপাল গ্রামের বাসিন্দারা।

তারা জানান, সীমান্তে গোলাগুলির ঘটনায় তাদের ছোটা-ছুটির ইতিহাস কয়েক দশকের পুরানো। তবে এখন নিজেদের জীবন, ফসলি জমি আর গবাদি পশু নিয়ে শঙ্কিত তারা। তাই নতুন করে যুদ্ধ না বাধুক, এমনটাই প্রত্যাশা তাদের।

এক বাসিন্দা জানান, আমরা ৬০-৭০ বছর ধরে এর সাথে বসবাস করছি, আশা করছি পরিস্থিতি আরও ভালো হবে। তবে পরিস্থিতি ভালো হচ্ছে না এবং ভালো হবেও না বলে মনে হচ্ছে।

আরেক বাসিন্দা বলেন, ‘আমরা যুদ্ধ চাই না। আমরা চাই মানুষ একে অপরকে বুঝুক এবং একসাথে শান্তিতে বসবাস করুক। যুদ্ধের চিন্তাভাবনা তাদের মনে না আসুক। যুদ্ধ হলেও সাধারণ মানুষ যেন নির্যাতিত না হয়।’

দুই দেশের সরকার যদি শেষ পর্যন্ত যুদ্ধে জড়ায় তাহলে সেনাবাহিনীর সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ভারতের বিরুদ্ধে লড়াই করার ব্যাপারে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ পাকিস্তানের মানুষ।

ভক্সপপ: উভয় দেশের সরকারকেই একে অপরের সাথে বসা উচিত। কারণ যুদ্ধ কোনও সমস্যার সমাধান নয়। যদি যুদ্ধ হয়, তাহলে আমরা আমাদের সেনাবাহিনীর সাথে পাশে দাঁড়াব। তাদের সাথে মিলে একসঙ্গে লড়াই করব।

এদিকে পাকিস্তানের সঙ্গে চলমান উত্তেজনার মধ্যেই সীমান্তে থাকা অনেক ভারতীয় গ্রামবাসী অন্যত্র চলে যাওয়ার কথা ভাবছেন। তবে তা খুবই চ্যালেঞ্জিং হবে বলে মনে করছেন তারা।

এক গ্রামবাসী বলেন, ‘সরকার নির্দেশ দিলে আমাদের গ্রাম খালি করতে হবে। এটা খুবই চ্যালেঞ্জিং, কারণ আমাদের গবাদি পশুগুলো মারা যেতে পারে।’

রাজস্থানের ভারত-পাকিস্তান সীমান্তবর্তী গ্রামের অনেকে বলছেন, যুদ্ধ নিয়ে মোটেও ভীত নন তারা। ভারতীয় সেনাদের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যুদ্ধ করতে চান অঞ্চলটির বাসিন্দারা।

এক অধিবাসী বলেন, ‘যদি যুদ্ধ হয়, তাহলে আমরা ভারতীয় সেনাবাহিনীর সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে হাঁটব এবং তাদের পথ দেখাব। সেনাদের খাদ্য, পানীয় এবং প্রয়োজনীয় সব কিছু দিয়ে সাহায্য করব। আমরা ভীত নই।’

পেহেলগাম ইস্যুতে কোনো তথ্য প্রমাণ ছাড়াই দোষারোপ করে ভারত উত্তেজনার সূত্রপাত করেছে বলে অভিযোগ পাকিস্তানের। দেশটি আগ বাড়িয়ে যুদ্ধে জড়াতে চায়না, তবে নয়াদিল্লি শুরু করলে কঠোর জবাব দেয়ার হুঁশিয়ারি ইসলামাবাদের। এমন উত্তেজনার মধ্যেই বৃহস্পতিবার সামনে এসেছে পেহেলগামের ঘটনায় ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা র-এর সংশ্লিষ্টতার গোপন নথি। যা টেলিগ্রামে ফাঁস হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে। এর একদিন পরই হামলার ঘটনায় উল্টো পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই জড়িত বলে দাবি এনআইএ’র।