ঢাকা ০৩:০১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৫ মে ২০২৫, ২১ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

করিডোর নিয়ে জনগণের সঙ্গে কানামাছি খেলছে সরকার: রিজভী

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১০:৪৫:৩৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ মে ২০২৫
  • / ৩৪৮ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

‘মানবিক করিডোর’ নিয়ে জনগণের সঙ্গে কানামাছি খেলছে সরকার, তাতে সন্দেহ বাড়ছে—এমন মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। আজ (রোববার, ৪ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ইঞ্জিনিয়ার শাহরিন ইসলাম চৌধুরী তুহিনের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার ও নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে এই মন্তব্য করেন তিনি।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘আজ মানবিক করিডোরের কথা বলছেন, সেটাও লুকিয়ে লুকিয়ে বলতে হচ্ছে। আপনার জনগণের ম্যান্ডেট নেই, আপনি নির্বাচিত নন, আজকে সবদিক থেকে এ কথা ধ্বনিত হচ্ছে। এটার প্রতিক্রিয়া কী হবে? আমাদের সার্বভৌমত্বের অবস্থা কোথায় দাঁড়াবে, এটা জনগণের কাছে কোনোভাবেই খোলাসা করেননি।’

অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে রিজভী বলেন, ‘অনির্বাচিত সরকার অনেক গণবিরোধী সিদ্ধান্ত নেয়, কিন্তু আপনার সরকারের প্রতি প্রত্যেকটি গণতন্ত্রে অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দল সমর্থন দিয়েছে। কিন্তু এই সমর্থনে আপনাদের যে বলীয়ান হওয়ার কথা, সেই বলীয়ান আপনারা হতে পারেননি। কারণ জনগণের সঙ্গে আপনারা কানামাছি খেলা খেলছেন, লুকোচুরি করছেন। এই কানামাছি খেলতে গিয়ে জনগণের কাছে সন্দেহের চোখে পড়ছেন।’

তিনি বলেন, আজকে ভারত ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিল করে দিয়েছে। আমাদের মালামাল ভারতের পোর্ট দিয়ে অন্য দেশে যেত। কেন করেছে? আমাদের সঙ্গে তো কোনো বৈরিতা নেই। আজকে পাকিস্তানের সঙ্গে তাদের সংকট তৈরি হয়েছে। সেটা তাদের দুই দেশের মধ্যকার বিষয়। তাহলে আজকে যে দিল্লি একের পর এক বাংলাদেশ বিরোধী ভূমিকা রাখছে, আমরা তো সেই শেখ হাসিনার মতই দেখছি। আপনাদের কোনো প্রতিবাদ নেই, কোনো উচ্চকণ্ঠ নেই, এবং এটা করলে আমাদের বিকল্প কি- এটাও তো জনগণের কাছে খোলাসা করা উচিত। তাদের মালামাল যাবে আমাদের দেশের ওপর দিয়ে, আমাদের নৌপথ সড়ক পথ ব্যবহার করবে। কিন্তু আমাদের ট্রান্সশিপমেন্ট যে ব্যবস্থা ভারতের সঙ্গে ছিল, সেটা তারা বন্ধ করে দিল।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে রিজভী বলেন, আজকে মানুষ কিন্তু নানা কথা ভাবছে যে দোসরদের দুধ-কলা দিয়ে পোষা হচ্ছে। তারা হয়ত আপনার সরকারকে বিএনপির বিরুদ্ধে নানাভাবে বুঝাচ্ছে। তারা বুঝাচ্ছে বিএনপিকে দমিয়ে রাখতে হবে। বিএনপির প্রতি আচরণের ক্ষেত্রে আপনার সরকারের ভূমিকা এমন মনে হচ্ছে।

তিনি বলেন, আপনার সরকারের ভেতরে হয়ত কয়েকজন নির্বাচন চায় না। একটা মুলা ঝুলিয়ে রাখার চেষ্টা করছেন তারা। ডিসেম্বরে, না হলে ফেব্রুয়ারিতে বা জুনে এরকম নানা কথা বলছেন। কিন্তু, কেউ সুনির্দিষ্টভাবে বলছেন না অমুক মাসেই নির্বাচন হবে।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, নির্বাচন নিয়ে সরকারের তালবাহানা, আজকে দিনকে দিন দেশে ৭১ এর অহংকার এবং ২৪ এর ৫ আগস্টের যে অহংকার, সে অহংকার মিলিয়ে মানুষের যে প্রত্যাশা বহুদলীয়, বহুমাত্রিক গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, এটাতো এখনো প্রতিষ্ঠা হয়নি। সেই সুযোগ অনেকে নস্যাৎ করে দেওয়ার চেষ্টা করছে।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, শেখ হাসিনার আন্দোলনের ফসল যে মঈনুদ্দিন-ফখরুদ্দিন, সে যে অবৈধভাবে ক্ষমতা নিয়েছিল সেটা প্রমাণ করার জন্য বিএনপির সমর্থক কিছু নেতাদের জনগণের সামনে কলঙ্কিত করার জন্য তারা নানা পদ্ধতি অবলম্বন করেছিল। তার মধ্যে ছিল মিথ্যা মামলা। সেই মিথ্যা মামলা দায়ের হয়েছিল শাহরিন ইসলাম তুহিনের নামে। রাজনৈতিক কারণে তুহিনকে কারাগারে নেওয়া হয়েছে। একইরকম ঘটনায় অন্যরা রেহাই পেলে তুহিন কেন পাবে না? আইন মন্ত্রণালয় যেখানে বলেছে যে কোনো অসুবিধা নেই, তাহলে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরে এটি আটকে থাকার কথা নয়।

সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফৎ আলী সপু, ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান মিন্টু, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা জাহিদুল কবির, যুবদল নেতা মেহবুব মাসুম শান্ত, ছাত্রদল নেতা ডা. তৌহিদ আউয়াল প্রমুখ।

নিউজটি শেয়ার করুন

করিডোর নিয়ে জনগণের সঙ্গে কানামাছি খেলছে সরকার: রিজভী

আপডেট সময় : ১০:৪৫:৩৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ মে ২০২৫

‘মানবিক করিডোর’ নিয়ে জনগণের সঙ্গে কানামাছি খেলছে সরকার, তাতে সন্দেহ বাড়ছে—এমন মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। আজ (রোববার, ৪ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ইঞ্জিনিয়ার শাহরিন ইসলাম চৌধুরী তুহিনের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার ও নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে এই মন্তব্য করেন তিনি।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘আজ মানবিক করিডোরের কথা বলছেন, সেটাও লুকিয়ে লুকিয়ে বলতে হচ্ছে। আপনার জনগণের ম্যান্ডেট নেই, আপনি নির্বাচিত নন, আজকে সবদিক থেকে এ কথা ধ্বনিত হচ্ছে। এটার প্রতিক্রিয়া কী হবে? আমাদের সার্বভৌমত্বের অবস্থা কোথায় দাঁড়াবে, এটা জনগণের কাছে কোনোভাবেই খোলাসা করেননি।’

অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে রিজভী বলেন, ‘অনির্বাচিত সরকার অনেক গণবিরোধী সিদ্ধান্ত নেয়, কিন্তু আপনার সরকারের প্রতি প্রত্যেকটি গণতন্ত্রে অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দল সমর্থন দিয়েছে। কিন্তু এই সমর্থনে আপনাদের যে বলীয়ান হওয়ার কথা, সেই বলীয়ান আপনারা হতে পারেননি। কারণ জনগণের সঙ্গে আপনারা কানামাছি খেলা খেলছেন, লুকোচুরি করছেন। এই কানামাছি খেলতে গিয়ে জনগণের কাছে সন্দেহের চোখে পড়ছেন।’

তিনি বলেন, আজকে ভারত ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিল করে দিয়েছে। আমাদের মালামাল ভারতের পোর্ট দিয়ে অন্য দেশে যেত। কেন করেছে? আমাদের সঙ্গে তো কোনো বৈরিতা নেই। আজকে পাকিস্তানের সঙ্গে তাদের সংকট তৈরি হয়েছে। সেটা তাদের দুই দেশের মধ্যকার বিষয়। তাহলে আজকে যে দিল্লি একের পর এক বাংলাদেশ বিরোধী ভূমিকা রাখছে, আমরা তো সেই শেখ হাসিনার মতই দেখছি। আপনাদের কোনো প্রতিবাদ নেই, কোনো উচ্চকণ্ঠ নেই, এবং এটা করলে আমাদের বিকল্প কি- এটাও তো জনগণের কাছে খোলাসা করা উচিত। তাদের মালামাল যাবে আমাদের দেশের ওপর দিয়ে, আমাদের নৌপথ সড়ক পথ ব্যবহার করবে। কিন্তু আমাদের ট্রান্সশিপমেন্ট যে ব্যবস্থা ভারতের সঙ্গে ছিল, সেটা তারা বন্ধ করে দিল।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে রিজভী বলেন, আজকে মানুষ কিন্তু নানা কথা ভাবছে যে দোসরদের দুধ-কলা দিয়ে পোষা হচ্ছে। তারা হয়ত আপনার সরকারকে বিএনপির বিরুদ্ধে নানাভাবে বুঝাচ্ছে। তারা বুঝাচ্ছে বিএনপিকে দমিয়ে রাখতে হবে। বিএনপির প্রতি আচরণের ক্ষেত্রে আপনার সরকারের ভূমিকা এমন মনে হচ্ছে।

তিনি বলেন, আপনার সরকারের ভেতরে হয়ত কয়েকজন নির্বাচন চায় না। একটা মুলা ঝুলিয়ে রাখার চেষ্টা করছেন তারা। ডিসেম্বরে, না হলে ফেব্রুয়ারিতে বা জুনে এরকম নানা কথা বলছেন। কিন্তু, কেউ সুনির্দিষ্টভাবে বলছেন না অমুক মাসেই নির্বাচন হবে।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, নির্বাচন নিয়ে সরকারের তালবাহানা, আজকে দিনকে দিন দেশে ৭১ এর অহংকার এবং ২৪ এর ৫ আগস্টের যে অহংকার, সে অহংকার মিলিয়ে মানুষের যে প্রত্যাশা বহুদলীয়, বহুমাত্রিক গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, এটাতো এখনো প্রতিষ্ঠা হয়নি। সেই সুযোগ অনেকে নস্যাৎ করে দেওয়ার চেষ্টা করছে।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, শেখ হাসিনার আন্দোলনের ফসল যে মঈনুদ্দিন-ফখরুদ্দিন, সে যে অবৈধভাবে ক্ষমতা নিয়েছিল সেটা প্রমাণ করার জন্য বিএনপির সমর্থক কিছু নেতাদের জনগণের সামনে কলঙ্কিত করার জন্য তারা নানা পদ্ধতি অবলম্বন করেছিল। তার মধ্যে ছিল মিথ্যা মামলা। সেই মিথ্যা মামলা দায়ের হয়েছিল শাহরিন ইসলাম তুহিনের নামে। রাজনৈতিক কারণে তুহিনকে কারাগারে নেওয়া হয়েছে। একইরকম ঘটনায় অন্যরা রেহাই পেলে তুহিন কেন পাবে না? আইন মন্ত্রণালয় যেখানে বলেছে যে কোনো অসুবিধা নেই, তাহলে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরে এটি আটকে থাকার কথা নয়।

সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফৎ আলী সপু, ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান মিন্টু, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা জাহিদুল কবির, যুবদল নেতা মেহবুব মাসুম শান্ত, ছাত্রদল নেতা ডা. তৌহিদ আউয়াল প্রমুখ।