‘ডেমোক্রেসি সসেজ’, শুনেছেন কোনও দিন? না না, ভাববেন না, গণতন্ত্রকে নিয়ে ঠাট্টা করা হচ্ছে। বরং কী করে একটা সসেজের নাম ‘ডেমোক্রেসি সসেজ’ হল সেটাই একটা মজার গল্প। এমন কখনও শুনেছেন যে কেউ সুইমিং স্যুট পরে ভোট দিতে যাচ্ছেন? এই সবই ঘটে অস্ট্রেলিয়ায়। ব্যপারটা কী, রইল এই প্রতিবেদনে।
কোয়ালার, ভেজেমাইট বা টিমট্যামসের মতোই অস্ট্রেলিয়ার এক ধরনের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ডেমোক্রেসি সসেজ। বাস্তবে এটি এক ধরনের সসেজই। গ্রিলড সসেজ, যা সাদা পাউরুটিতে মুড়ে ওপরে পেঁয়াজ এবং সস দিয়ে পরিবেশন করা হয়। এর সঙ্গে গণতন্ত্রের কি সম্পর্ক? আসলে অস্ট্রেলিয়ায় নির্বাচনের দিন ভোটকেন্দ্রগুলিতে পরিবেশিত হয় এই বিশেষ সসেজ। সময়ের সঙ্গে এটি অস্ট্রেলিয়ার ভোটদান প্রক্রিয়ার একটি অংশ হয়ে উঠেছে। তাই এই সসেজের নামও ডেমোক্রেসি সসেজ।
শুধু অস্ট্রেলিয়ায় নয়, বিদেশে অবস্থানরত অস্ট্রেলিয়ান নাগরিকদের ভোট কেন্দ্র, যেমন নিউ ইয়র্ক, রিয়াদ, নাইরোবি ও টোকিওর দূতাবাস, এমনকি অ্যান্টার্কটিকার একটি গবেষণা কেন্দ্রে পর্যন্ত এই সসেজ পরিবেশন করা হয়। একটি ওয়েবসাইট আছে যা ভোটের দিনে রিয়েল-টাইমে জনসাধারণের রিপোর্ট অনুযায়ী কোন কেন্দ্রে সসেজ মিলবে তাও ট্র্যাক করে। মানুষ মজার ছলে বলে, “এটি প্রায় অস্ট্রেলিয়ান সংবিধানের অংশ।” জানা যায়, ওই সসেজের স্বাদ এতই সুস্বাদু যে বহু পর্যটক বা বিদেশি ছাত্র ভোটের দিন শুধু এই সসেজ খাওয়ার জন্য ভোটদান কেন্দ্রে চলে আসে।
এই সসেজর রাজনৈতিক গুরুত্ব রয়েছে। রাজনৈতিক নেতারা দেখাতে চান, তাঁরা সাধারণ মানুষের মতোই সস্তা খাবার খেতে পারেন। সসেজ খাওয়ার সময় রাজনীতিকদের ছবি আজ মিমে পরিণত হয়েছে।
অস্ট্রেলিয়ায় ভোটের আরেকটি মজার বিষয় হল সুইমিং স্যুট পরে ভোটদান করা। আসলে অস্ট্রেলিয়ান সংবিধানে ভোটের সময় পোশাক নিয়ে কোনও নিয়ম নেই। ফলে অনেকেই এই সুযোগে সাঁতারের পোশাকে (swimwear) ভোট দিতে যান। এই প্রথা শুরু হয়েছিল যখন “Budgie Smuggler” নামের একটি সংস্থা প্রথম ২০০ ভোটারকে সাঁতারের পোশাক বিনামূল্যে দিচ্ছিল। সেই দিন ছিল অস্ট্রেলিয়ায় ভোট। তাঁরা ওই পোশাক পরে ভোট দিতে যান।
সিডনির বন্ডি এলাকার ভোটার নিক ফ্যাবরি সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে এই বিষয়ে বলেন, “এটা একটু খোলামেলা এবং কিছু মানুষের কাছে অস্বস্তিকরও হতে পারে। কিন্তু এখানে অনেকে জল থেকে এসে সরাসরি ভোট দেন। আমি মনে করি, এটা অস্ট্রেলিয়ান গণতন্ত্রের এক দারুণ উদাহরণ।”
প্রসঙ্গত, শনিবার থেকে অস্ট্রেলিয়ায় জাতীয় নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। জরিপ অনুসারে, মার্কিন শুল্কনীতি (tariffs) ভোটারদের পরিবর্তনের আগ্রহ কিছুটা কমিয়ে দিয়েছে, যার ফলে লেবার পার্টির প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ রক্ষণশীল প্রতিদ্বন্দ্বী পিটার ডাটনের তুলনায় এগিয়ে থাকতে পারেন।