আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে জুলাই ঐক্যের আত্মপ্রকাশ

- আপডেট সময় : ১০:৩০:২১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ মে ২০২৫
- / ৩৪৪ বার পড়া হয়েছে

জুলাই গণহত্যার বিচার, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধকরণ, শহীদ ও আহতদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ এবং তাদের ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসনের দাবিকে সামনে রেখে বিভিন্ন মতাদর্শের ৩৫টি সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের ঐক্যবদ্ধ প্ল্যাটফর্ম ‘জুলাই ঐক্যে’র আত্মপ্রকাশ হয়েছে।
মঙ্গলবার (৬ মে) বিকেল ৫টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনের সামনে আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মিলিত জোটটির আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করা হয়।
এসময় বক্তারা বলেন, ২০২৪ সালের জুলাই মাসে বাংলাদেশের ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়। বিগত সাড়ে ১৫ বছরের দমন-পীড়ন, দুর্নীতি, লুটপাট ও গণতন্ত্র হরণের বিরুদ্ধে বিক্ষুব্ধ জনতার অভূতপূর্ব জাগরণে সংগঠিত হয় ছাত্র জনতার ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান’। এই অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ছাত্র, শ্রমিক, শিক্ষক, চিকিৎসক ও সাধারণ জনগণ সম্মিলিতভাবে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের দাবিতে রাস্তায় নেমে আসে।
বিভিন্ন উৎসে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, এই গণ-অভ্যুত্থানে জীবন দিতে হয় দুই হাজারেরও বেশি মানুষকে। আহত ও পঙ্গু হন প্রায় ৩১,০০০ জন। রাষ্ট্রীয় বাহিনী ও দলীয় ক্যাডারদের দ্বারা পরিচালিত এ হামলা আন্তর্জাতিক মহলে ‘গণহত্যা’ হিসেবে স্বীকৃতি পায়।
কিন্তু জুলাই বিপ্লবের আট মাস পেরিয়ে গেলেও আজ পর্যন্ত এই গণহত্যার বিচার প্রক্রিয়া অনিশ্চিত রয়ে গেছে। সবচেয়ে বড় উদ্বেগের বিষয় হলো—বিভিন্ন রাজনৈতিক ও বেসরকারি মহলের কিছু অংশ আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের পাঁয়তারা চালাচ্ছে। যা একদিকে শহিদ, আহত ও পঙ্গু জনগণের আত্মত্যাগের চূড়ান্ত অপমান এবং অন্যদিকে দেশের গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার স্বপ্নকে অঙ্কুরে বিনষ্ট করার শামিল।
বক্তারা আরও বলেন, আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, জুলাই বিপ্লবে অংশগ্রহণকারী বিপ্লবীদের জীবন ও নিরাপত্তা নিয়েও চরম শঙ্কা দেখা দিয়েছে। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ ও তাদের দোসররা আজ বিপ্লবীদের বিতর্কিত করতে নানা প্রোপাগান্ডা ও দাবির আশ্রয় নিচ্ছে। আমরা এই পরিস্থিতিকে অত্যন্ত গুরুতর ও বিপজ্জনক হিসেবে বিবেচনা করছি।
এই বাস্তবতা উপলব্ধি করেই, আমরা বিভিন্ন মতাদর্শের সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠনসমূহ নিয়ে আজ আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করছি—‘জুলাই ঐক্য’ নামে একটি ঐক্যবদ্ধ জাতীয় জোট।
আমরা বিশ্বাস করি, সকল বিভক্তি ভুলে গিয়ে জুলাই বিপ্লবের স্পিরিট ধারণকারী সব সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধভাবে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ অব্যাহত রাখা এখন সময়ের দাবি।
এই জোটের প্রধান লক্ষ্য ও দাবি হলো: জুলাই বিপ্লবে অংশগ্রহণকারীদের সাংবিধানিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের সকল রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করা।
২০২৪ সালের গণহত্যা, শাপলা ট্র্যাজেডি, পিলখানা হত্যাযজ্ঞ, গুম, খুন, দুর্নীতি ও বিগত সাড়ে ১৫ বছরে সংঘটিত সকল রাষ্ট্রীয় অপরাধের বিচার প্রক্রিয়া দ্রুততর করা।
এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে, ‘জুলাই ঐক্য’ সকল স্পিরিটধারী সংগঠন ও সচেতন নাগরিকদের নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন চালিয়ে যাবে। আমাদের পরবর্তী কর্মসূচি: জুলাই বিপ্লবে অংশগ্রহণকারী বিপ্লবীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত ও আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে মানববন্ধন।