লন্ডনে চিকিৎসা শেষে ১১৮ দিন পর নিজ বাসভবন গুলশানের ‘ফিরোজায়’ ফিরলেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। গত ৮ জানুয়ারি উন্নত চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যের লন্ডনে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী। আজ (মঙ্গলবার, ৬ মে) দুপুর ১টা ২৬ মিনিটে ফিরোজায় প্রবেশ করেন তিনি। এর আগে বিমানবন্দর থেকে বিশেষ নিরাপত্তাবেষ্টনীর মধ্য দিয়ে গাড়িবহরসহ তিনি বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে নিজ বাসভবনের দিকে রওনা হন।
লন্ডনে উন্নত চিকিৎসা নিয়ে বেগম খালেদা জিয়া যে অনেকটা সুস্থ হয়েছেন তার জ্বলন্ত প্রমাণ দিলেন তিনি নিজেই। হুইলচেয়ার নিয়ে চলাচল করা বিএনপির চেয়ারপারসন সবাইকে অনেকটা বিস্মিত করে দিয়ে গুলশানে নিজ বাসা ফিরোজায় গাড়ি থেকে নেমে পায়ে হেঁটে প্রবেশ করেন। এ সময় দুই পাশে দুই পুত্রবধূ তাকে ধরে রাখেন। এই দৃশ্যটি অনেক নেতাকর্মীর চোখকে আনন্দ অশ্রুসিক্ত করেছে। অনেকে শুকরিয়া আদায়ও করেছেন।
খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেশে ফিরেছেন তার পুত্রবধূ ডা. জোবাইদা রহমান ও প্রয়াত ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী সৈয়দা শার্মিলা রহমান। শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বেলা ১১টা ২৫ মিনিটে ফিরোজার উদ্দেশে রওনা দেন খালেদা জিয়া।
খালেদা জিয়ার দেশে ফেরার সময় তাকে এক নজর দেখতে সড়কে জড়ো হন শত শত বিএনপি নেতাকর্মী। জাতীয় ও দলীয় পতাকা হাতে সড়কের দুই পাশে দাঁড়িয়ে তারা খালেদা জিয়াকে শুভেচ্ছা জানান।
দেশে ফেরার পর খালেদা জিয়ার সুস্থতা নিয়ে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। তারা আশা প্রকাশ করেন, তিনি শিগগিরই দলকে নেতৃত্ব দেবেন এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে সক্রিয় ভূমিকা রাখবেন।
সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে অভ্যর্থনা জানাতে ভোর থেকে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসতে শুরু করেন দলটির নেতাকর্মীরা। তাদের কারো হাতে প্ল্যাকার্ড-সম্বলিত শুভেচ্ছা বার্তা, দলীয় পতাকা এবং ব্যানার। কেউ হাতে ফুল, কেউ ব্যানার-প্ল্যাকার্ড, কেউ-বা খালেদা জিয়ার ছবিসংবলিত টি-শার্ট পরে আছেন। ‘খালেদা জিয়ার আগমন, শুভেচ্ছা স্বাগতম’, ‘খালেদা, জিয়া’, ‘তারেক, রহমান’, ‘খালেদা জিয়া ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই’ নানা স্লোগান দিচ্ছেন নেতাকর্মীরা। বিএনপির নেতারা বলছেন, খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানাতে যেভাবে নেতাকর্মীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে রাস্তায় নেমেছেন, তা দলের প্রতি তাদের আস্থার প্রমাণ।
এর আগে বিমানবন্দরের ভিআইপি টার্মিনালে বিএনপি চেয়ারপারসনকে স্বাগত জানান দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহউদ্দিন আহমদ, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ও সেলিমা রহমান।
গত ৮ জানুয়ারি উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডন যান খালেদা জিয়া। তার শারীরিক অসুস্থতার কথা জেনে কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি এয়ার অ্যাম্বুলেন্স দিয়েছিলেন। সেটিতেই তিনি লন্ডনে যান। কাতারের আমিরের দেওয়া এয়ার অ্যাম্বুলেন্সেই আবার লন্ডন থেকে দেশে ফিরলেন তিনি।