সঞ্চয়পত্র নিয়ে আগামী বাজেটে আসছে বিশেষ সুবিধা

- আপডেট সময় : ১০:১৭:৫৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ মে ২০২৫
- / ৩৪৪ বার পড়া হয়েছে

আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে সঞ্চয়পত্রসহ অন্তত ১০টি সেবায় আয়কর রিটার্ন জমার বাধ্যবাধকতা তুলে নেওয়ার উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এর ফলে পাঁচ লাখ টাকা বা তার বেশি টাকার সঞ্চয়পত্র কিনতে গেলেও আর আয়কর রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র দেখাতে হবে না।
এনবিআর সূত্র জানিয়েছে, একইভাবে ব্যাংকে ১০ লাখ টাকা বা তার বেশি টাকার মেয়াদি আমানত খুলতেও রিটার্ন জমার প্রমাণ দেখানোর বাধ্যবাধকতা উঠে যাচ্ছে। চিকিৎসক, আইনজীবী, ইঞ্জিনিয়ার, স্থপতি, হিসাববিদসহ বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের সদস্যপদ গ্রহণ ও তা বজায় রাখার ক্ষেত্রেও এই নিয়ম শিথিল করা হচ্ছে। তবে এসব ক্ষেত্রে ট্যাক্স আইডেন্টিফিকেশন নম্বর (টিআইএন) থাকা বাধ্যতামূলক থাকবে।
বর্তমানে দেশে ৪৫টি সরকারি ও বেসরকারি সেবা পেতে হলে রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র (পিএসআর) দেখাতে হয়। মূলত করদাতার সংখ্যা বাড়ানোর লক্ষ্যে গত কয়েক বছর ধরে এর আওতা বাড়ানো হয়েছিল। তবে এতে আয়কর আদায়ের পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে না বাড়লেও সাধারণ মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে বহু গুণে।
২০২৩ সালের প্রণীত আয়কর আইনে বলা আছে, যেসব ক্ষেত্রে পিএসআর বাধ্যতামূলক, সেসব সেবায় দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি এটি যাচাইয়ে ব্যর্থ হলে তাঁর জন্য ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। এতে অনেক সাধারণ নাগরিক বাধ্য হয়ে শূন্য রিটার্ন জমা দিচ্ছেন, যদিও তাদের প্রকৃত করযোগ্য আয় নেই।
এনবিআরের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ‘যেসব জায়গায় পিএসআর আসলে অপ্রয়োজনীয়, সেগুলো থেকে আমরা পর্যায়ক্রমে সরে আসতে চাই। পিএসআরের পরিবর্তে টিআইএন জমা দিলেই চলবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘বিধানটি অনেক জায়গায় জনভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই অন্তর্বর্তী সরকার আগামী বাজেটে এসব বিবেচনায় এনে জনবান্ধব করনীতি বাস্তবায়নের পথে হাঁটছে।’
এনবিআরের সাবেক সদস্য (করনীতি) ড. সৈয়দ আমিনুল করিম এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ‘যাদের করযোগ্য আয় নেই, তাদের জন্য এটা অনেক বড় সুবিধা হবে। বিশেষ করে বিধবা নারীদের ক্ষেত্রে, যাদের আয় না থাকলেও সঞ্চয়পত্র থাকতে পারে, তাদের হয়রানি অনেকটা কমে যাবে। এতগুলো খাতে পিএসআর বাধ্যতামূলক করা সাধারণ মানুষের কাছে প্রায় “অত্যাচার”-এর মতো হয়ে গিয়েছিল।’
নতুন প্রস্তাবনা অনুযায়ী, সঞ্চয়পত্র, মেয়াদি আমানত, পেশাজীবী সংগঠনের সদস্যপদসহ অন্তত ১০টি সেবায় পিএসআর বাধ্যতামূলক না রাখার চিন্তা চলছে। এ প্রস্তাবনা চূড়ান্ত হলে আগামী বাজেটে তা কার্যকর হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০২২-২৩ অর্থবছরে মোট ৩৮টি সেবার ওপর পিএসআর দাখিল বাধ্যতামূলক করা হয়েছিল। পরের অর্থবছরে আরো ছয়টি সেবা যুক্ত করে ৪৪টি সেবায় পিএসআর বাধ্যতামূলক করা হয়েছিল। সর্বশেষ ২০২৪-২৫ অর্থবছর শেষে বর্তমানে ৪৫টি সেবায় পিএসআর বাধ্যতামূলক আছে।