ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি দুই দিনের এক সরকারি সফরে বুধবার (৭ মে) নয়াদিল্লিতে পৌঁছেছেন। সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তার সফরের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক ও আঞ্চলিক বিভিন্ন ইস্যুতে আলোচনা করা। ড. আব্বাস আরাগচি ভারত-ইরান যৌথ কমিশনের ২০তম বৈঠকে সহ-সভাপতিত্ব করবেন। ২০২৪ সালের আগস্টে দায়িত্ব গ্রহণের পর এটি তার প্রথম ভারত সফর।
৭ থেকে ৮ মে পর্যন্ত নির্ধারিত এই উচ্চপর্যায়ের বৈঠকটি আয়োজন করা হয়েছে ভারত-ইরান মৈত্রী চুক্তির ৭৫তম বার্ষিকী উদ্যাপন উপলক্ষে। বৈঠকে দুই দেশের মধ্যকার গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপাক্ষিক বিষয়গুলো পর্যালোচনা করা হবে এবং রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও কৌশলগত খাতে সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা হবে।
এর আগেই চলতি সপ্তাহের শুরুতে তিনি পাকিস্তান সফর সম্পন্ন করেছেন। ইসলামাবাদে তিনি পাকিস্তানের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করেন এবং বর্তমান ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। এরপরই তার নয়াদিল্লি সফরকে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
ইরান এই মুহূর্তে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বিরাজমান সামরিক ও কূটনৈতিক টানাপড়েনে মধ্যস্থতাকারী ভূমিকা পালনের আগ্রহ প্রকাশ করেছে। তেহরান জোর দিয়ে বলেছে, তাদের দুই প্রতিবেশী রাষ্ট্র — ভারত ও পাকিস্তানের সঙ্গে দীর্ঘদিনের সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে এবং এই দ্বিপাক্ষিক উত্তেজনার শান্তিপূর্ণ সমাধানে তারা সহায়ক ভূমিকা পালন করতে চায়।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ইরানের এই উদ্যোগ কেবল আঞ্চলিক শান্তি বজায় রাখার প্রচেষ্টা নয়, বরং দক্ষিণ এশিয়ার দুই পারমাণবিক শক্তিধর দেশের মধ্যে উত্তেজনা কমিয়ে আনার এক কৌশলী কূটনৈতিক পদক্ষেপ। মধ্যপ্রাচ্যে চলমান উত্তেজনার মধ্যে তেহরান এমন এক সময়ে এই মধ্যস্থতার ভূমিকা নিচ্ছে, যখন উপমহাদেশে একটি বড় সংঘাতের আশঙ্কা নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ বাড়ছে।
আরাগচির ভারত সফরে কী ধরনের আলোচনা হয় এবং এটি ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের ভবিষ্যৎ গতিপথে কতটা প্রভাব ফেলতে পারে, সে বিষয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গন এখন গভীর নজর রাখছে।