পাল্টাপাল্টি হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার উত্তেজনার পারদ সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে সর্বোচ্চে। শঙ্কা রয়েছে সামরিক সংঘাত থেকে পুরোদমে যুদ্ধে জড়াতে পারে দুই দেশ। এমন পরিস্থিতিতে চিরশত্রু পাক-ভারতের সামরিক সক্ষমতা নিয়ে শুরু হয়েছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। যেখানে দেখা যাচ্ছে জলে ও আকাশে নয়াদিল্লির আধিপত্য থাকলেও স্থলভাগে এগিয়ে ইসলামাবাদের সেনারা।
গুঞ্জনকে সত্যি করে অবশেষে পাকিস্তানে হামলা চালালো ভারত। উল্টোদিকে হামলার সময় নয়াদিল্লির পাঁচটি যুদ্ধবিমানকে ভূপাতিত করার দাবি করেছে ইসলামাবাদ। সীমান্তের দুই প্রান্তে প্রাণহানি বেড়েই চলছে। এমন পরিস্থিতিতে শঙ্কা রয়েছে সামরিক সংঘাত পরিণত হতে পারে আঞ্চলিক যুদ্ধে।
পুরোদমে যুদ্ধের শঙ্কার মাঝে ভারত ও পাকিস্তানের সামরিক সক্ষমতা নিয়ে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ার ইনডেস্কের তথ্য বলছে, শক্তিমত্তার দিক থেকে ভারত চতুর্থ অবস্থানে থাকলেও পাকিস্তানের অবস্থান ১২তম। বেশ কিছু জায়গায় ভারত এগিয়ে থাকলেও বিভিন্ন ক্ষেত্রে পাকিস্তান ধরে রেখেছে নিজেদের আধিপত্য।
ভারতের সামরিক বাহিনীতে কর্মরত সদস্যদের সংখ্যা সাড়ে ১৪ লাখের বেশি; যা বিশ্বের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। বিপরীতে পাকিস্তানের ক্ষেত্রে এই সংখ্যা অর্ধেকেরও কম। রিজার্ভ সেনার দিক থেকেও পার্থক্য দ্বিগুণের বেশি। সামরিক খাতে নয়াদিল্লির বাজেট সাড়ে সাত হাজার কোটি ডলার। উল্টোদিকে এ খাতে ইসলামাবাদের বার্ষিক বাজেট মাত্র সাড়ে ৭০০ কোটি ডলারের বেশি।
আকাশ ও জলে পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে আছে ভারত। নয়াদিল্লির এয়ারক্রাফ্টের সংখ্যা ২ হাজার ২২৯টি। যার মধ্যে ৫শটির বেশি ফাইটার জেট। বিপরীতে ইসলামাবাদের মোট এয়ারক্রাফট প্রায় এক হাজার ৪০০টি। যার মধ্যে যুদ্ধবিমানের সংখ্যা ৩২৮। তবে প্রয়োজন অনুসারে যুদ্ধক্ষেত্রে দ্বিগুণ ট্রেনার এয়ারক্রাফট মোতায়েনের সক্ষমতা রয়েছে পাকিস্তানের।
অন্যদিকে, ভারতের ভাণ্ডারে ২টি বিমানবাহী রণতরির পাশাপাশি রয়েছে ২৯৩টি ফ্লিট ও ১৮টি সাবমেরিন। যার মধ্যে ১০টি ডুবোজাহাজই ৩০ বছর পুরোনো। অন্যদিকে পাক নৌবাহিনীর কাছে ১২১টি ফ্লিটের মধ্যে কোনো রণতরি না থাকলেও রয়েছে আটটি অত্যাধুনিক সাবমেরিন। পাশাপাশি চীনে ৩টি ডুবোজাহাজ নির্মাণ কাজ শেষ পর্যায়ে। এ ছাড়াও শেহবাজ শরীফ সরকারের হাতে ৩টি মিনি ওয়ারফেয়ার থাকলেও এখনো এর খাতা খুলতে পারেননি নরেন্দ্র মোদি।
স্থলভাগের ক্ষেত্রে ভারতের ট্যাংক সংখ্যা ৪ হাজার ছাড়ালেও পাকিস্তান ছুঁতে পারেনি ৩ হাজারের ঘর। আর্মাড ভেইকেলও সাড়ে ৮ গুণ বেশি। যদিও সেল্ফ প্রোপেলড আর্টিলারি ও মোবাইল রকেট প্রজেক্টরের দিক থেকে পাকিস্তানের ধারে কাছেও নেই ভারত।
এ ছাড়াও বৈচিত্র্যপূর্ণ ভৌগোলিক অবস্থানের ক্ষেত্রে ভারতের তুলনায় কিছুটা এগিয়ে থাকবে পাকিস্তান, এমনটাই জানাচ্ছে গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ার ইনডেক্স।