ঢাকা ০৪:১৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৯ মে ২০২৫, ২৫ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

কী হতে পারে যদি পাকিস্তান ‘অপারেশন সিন্দুরের’ জবাব দেয়?

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৮:৫৩:৪৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ মে ২০২৫
  • / ৩৪২ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

অপারেশন সিন্দুরের জবাবে পাকিস্তান যদি ভারতের বেসামরিক স্থাপনায় হামলা চালায় তাহলে সর্বাত্মক যুদ্ধ বেঁধে যাওয়ার পূর্ণ শঙ্কা আছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। তারা মনে করছেন, চলমান এই উত্তেজনার সুযোগে এশিয়ার অর্থনৈতিক অংশীদারত্বমূলক সম্পর্কে ‘কি-ফ্যাক্টর’ হয়ে উঠতে পারে চীন-যুক্তরাষ্ট্র। নয়া মেরুকরণ আসতে পারে মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিতেও।

অপারেশন সিন্দুরের পর পাকিস্তানের সম্ভাব্য প্রত্যাঘাত ঠেকাতে জলে, স্থলে ও আকাশে নজরদারি আর সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করেছে ভারত। নয়াদিল্লি-ইসলামাবাদের উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণে ভারত সফরে গেছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি। শান্তি প্রতিষ্ঠার আশ্বাস দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এখন প্রশ্ন একটাই, তাহলে কি প্রতিশোধ আর রাজনীতির দোলাচলে অনিশ্চয়তায় পড়ে গেল দক্ষিণ এশিয়ার ভবিষ্যৎ?

শুধু এই অঞ্চলের কূটনৈতিক সম্পর্কের স্থিতিশীলতা নয়, পণ্য পরিবহনের বাণিজ্যিক রুট, অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প, আঞ্চলিক সন্ত্রাসবাদের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ভাবাচ্ছে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকদের।

ঝুঁকির তালিকায় আছে সীমান্তে নিরাপত্তা, আঞ্চলিক সহযোগিতা, অর্থনৈতিক নির্ভরশীলতার মতো বিষয়ও। এড়ানো যাচ্ছে না কারগিলের মতো আরেকটি রক্তপাতের আশঙ্কা।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ভারত-পাকিস্তানের এই সাম্প্রতিক উত্তেজনাকে হালকাভাবে নেয়া সবচেয়ে বড় বোকামি হবে। কারণ ২২ এপ্রিলের পর থেকে ভারতের আচরণ সংযত ছিল না। যেকোনো মুহূর্তে একটি অনিয়ন্ত্রিত পদক্ষেপের জেরে দুই পক্ষ জড়িয়ে পড়তে পারে ‘অল আউট ওয়ার’ সর্বাত্মক যুদ্ধে।

বিশেষ করে সিন্দুর হামলার জবাবে পাকিস্তান যদি ভারতের বেসামরিক স্থাপনায় আঘাত হানে, তাহলে পরিস্থিতি একেবারেই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে বলে ইঙ্গিত করছেন বিশ্লেষকরা।

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক জেমস ল্যান্ডেল বলেন, ‘এই ঘাত-প্রতিঘাত যেকোনো সময় নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে। আঞ্চলিক যুদ্ধ, এমনকি অক্ষশক্তির মধ্যে যুদ্ধ বেঁধে যাওয়ার আশঙ্কা আছে। মিত্র দেশগুলোও দুই ভাগে ভাগ হয়ে যেতে পারে। মনে রাখবেন, এমন দুটি দেশ নিয়ে কথা বলছি, যাদের পরমাণু অস্ত্র আছে।’

সাবেক রাষ্ট্রদূত ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক জাওয়াদ আশরাফ বলেন, ‘তারা অবশ্যই সেনাঘাঁটি ও বেসামরিক স্থাপনায় হামলার পরিকল্পনা করছে। হয়তো সরাসরি হামলা হবে কিংবা কাউকে দিয়ে হামলা করানো হতে পারে। এমনটা হলে ভারত সর্বাত্মক যুদ্ধের মাধ্যমে প্রতিশোধ নেয়ার চেষ্টা করবে।’

বিশেষজ্ঞরা আরও আশঙ্কা করছেন, দক্ষিণ এশীয় এই দুই দেশের দ্বন্দ্বে পুরো এশিয়াজুড়ে অংশীদারত্বমূলক পদক্ষেপ বাড়াতে পারে তিন পরাশক্তি চীন, রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র। মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিতে আসতে পারে নতুন মেরুকরণও।

যদিও কোনো কোনো বিশ্লেষকের দাবি, পেহেলহামে হামলা ও অপারেশন সিন্দুরের কারণে সৃষ্টি হওয়া নতুন উত্তেজনা এখনও পর্যন্ত দুই দেশের মধ্যে সর্বাত্মক যুদ্ধের ইঙ্গিত দেয় না।

একমাত্র সিন্ধুর পানি নিয়ে ভারত চূড়ান্ত বাড়াবাড়ি করলে যুদ্ধে যাওয়া ছাড়া বিকল্প থাকবে না পাকিস্তানের। আর এই আভাস ২২ এপ্রিলের পরই দিয়ে রেখেছে ইসলামাবাদ।

নিউজটি শেয়ার করুন

কী হতে পারে যদি পাকিস্তান ‘অপারেশন সিন্দুরের’ জবাব দেয়?

আপডেট সময় : ০৮:৫৩:৪৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ মে ২০২৫

অপারেশন সিন্দুরের জবাবে পাকিস্তান যদি ভারতের বেসামরিক স্থাপনায় হামলা চালায় তাহলে সর্বাত্মক যুদ্ধ বেঁধে যাওয়ার পূর্ণ শঙ্কা আছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। তারা মনে করছেন, চলমান এই উত্তেজনার সুযোগে এশিয়ার অর্থনৈতিক অংশীদারত্বমূলক সম্পর্কে ‘কি-ফ্যাক্টর’ হয়ে উঠতে পারে চীন-যুক্তরাষ্ট্র। নয়া মেরুকরণ আসতে পারে মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিতেও।

অপারেশন সিন্দুরের পর পাকিস্তানের সম্ভাব্য প্রত্যাঘাত ঠেকাতে জলে, স্থলে ও আকাশে নজরদারি আর সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করেছে ভারত। নয়াদিল্লি-ইসলামাবাদের উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণে ভারত সফরে গেছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি। শান্তি প্রতিষ্ঠার আশ্বাস দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এখন প্রশ্ন একটাই, তাহলে কি প্রতিশোধ আর রাজনীতির দোলাচলে অনিশ্চয়তায় পড়ে গেল দক্ষিণ এশিয়ার ভবিষ্যৎ?

শুধু এই অঞ্চলের কূটনৈতিক সম্পর্কের স্থিতিশীলতা নয়, পণ্য পরিবহনের বাণিজ্যিক রুট, অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প, আঞ্চলিক সন্ত্রাসবাদের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ভাবাচ্ছে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকদের।

ঝুঁকির তালিকায় আছে সীমান্তে নিরাপত্তা, আঞ্চলিক সহযোগিতা, অর্থনৈতিক নির্ভরশীলতার মতো বিষয়ও। এড়ানো যাচ্ছে না কারগিলের মতো আরেকটি রক্তপাতের আশঙ্কা।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ভারত-পাকিস্তানের এই সাম্প্রতিক উত্তেজনাকে হালকাভাবে নেয়া সবচেয়ে বড় বোকামি হবে। কারণ ২২ এপ্রিলের পর থেকে ভারতের আচরণ সংযত ছিল না। যেকোনো মুহূর্তে একটি অনিয়ন্ত্রিত পদক্ষেপের জেরে দুই পক্ষ জড়িয়ে পড়তে পারে ‘অল আউট ওয়ার’ সর্বাত্মক যুদ্ধে।

বিশেষ করে সিন্দুর হামলার জবাবে পাকিস্তান যদি ভারতের বেসামরিক স্থাপনায় আঘাত হানে, তাহলে পরিস্থিতি একেবারেই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে বলে ইঙ্গিত করছেন বিশ্লেষকরা।

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক জেমস ল্যান্ডেল বলেন, ‘এই ঘাত-প্রতিঘাত যেকোনো সময় নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে। আঞ্চলিক যুদ্ধ, এমনকি অক্ষশক্তির মধ্যে যুদ্ধ বেঁধে যাওয়ার আশঙ্কা আছে। মিত্র দেশগুলোও দুই ভাগে ভাগ হয়ে যেতে পারে। মনে রাখবেন, এমন দুটি দেশ নিয়ে কথা বলছি, যাদের পরমাণু অস্ত্র আছে।’

সাবেক রাষ্ট্রদূত ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক জাওয়াদ আশরাফ বলেন, ‘তারা অবশ্যই সেনাঘাঁটি ও বেসামরিক স্থাপনায় হামলার পরিকল্পনা করছে। হয়তো সরাসরি হামলা হবে কিংবা কাউকে দিয়ে হামলা করানো হতে পারে। এমনটা হলে ভারত সর্বাত্মক যুদ্ধের মাধ্যমে প্রতিশোধ নেয়ার চেষ্টা করবে।’

বিশেষজ্ঞরা আরও আশঙ্কা করছেন, দক্ষিণ এশীয় এই দুই দেশের দ্বন্দ্বে পুরো এশিয়াজুড়ে অংশীদারত্বমূলক পদক্ষেপ বাড়াতে পারে তিন পরাশক্তি চীন, রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র। মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিতে আসতে পারে নতুন মেরুকরণও।

যদিও কোনো কোনো বিশ্লেষকের দাবি, পেহেলহামে হামলা ও অপারেশন সিন্দুরের কারণে সৃষ্টি হওয়া নতুন উত্তেজনা এখনও পর্যন্ত দুই দেশের মধ্যে সর্বাত্মক যুদ্ধের ইঙ্গিত দেয় না।

একমাত্র সিন্ধুর পানি নিয়ে ভারত চূড়ান্ত বাড়াবাড়ি করলে যুদ্ধে যাওয়া ছাড়া বিকল্প থাকবে না পাকিস্তানের। আর এই আভাস ২২ এপ্রিলের পরই দিয়ে রেখেছে ইসলামাবাদ।